Actress turned IAS Officer: ফিল্ম লাইনকে বাই বাই বলে নায়িকা এখন দাপুটে IAS অফিসার! কোনও সিনেমা নয় বাস্তবের গল্প, চিনুন এই সুন্দরীকে

সিনেমা জগতের গ্ল্যামার ছেড়ে বেরনো খুবই কষ্টকর৷ কারণ নায়ক-নায়িকারা সবসময় থাকেন লাইম লাইটে৷ সেই ক্যামেরাপ ফ্ল্যাশ এবং ঝলকানি থেকে নিজেকে দূরে রাখা খুবই কষ্টকর৷ ফলে খুব কম হিরো বা হিরোইন ফিল্ম লাইনে একবার পা দিলে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না৷

তবে, চলচ্চিত্রে তারকাখ্যাতি অর্জন, জনসাধারণের স্বীকৃতি এবং অপরিসীম ভালবাসা ও প্রশংসা অর্জনের পরও একজন নায়িকা এই ক্ষেত্র ছেড়ে চলে যান। পরে, তিনি কঠোর পড়াশোনা করেন এবং সিভিল সার্ভিসে পাস করেন। এক সময়ের নায়িকা এখন তিনি একজন IAS অফিসার।

তিনি আর কেউ নন, বিখ্যাত কন্নড় অভিনেত্রী এইচ.এস. কীর্তনা। কীর্তনা চার বছর বয়সে শিশু অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। কন্নড় চলচ্চিত্র জগতে তিনি একজন জনপ্রিয় শিশু অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি অল্প বয়সেই অনেক কন্নড় ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।

তিনি কার্পুরদা গোম্বে, গঙ্গা-যমুনা, মুদিনা আলিয়া, উপেন্দ্র, ও মাল্লিগে, সার্কেল ইন্সপেক্টর এবং জননী, চিগুরু, পুটানি এজেন্টের মতো টিভি শোতে অভিনয় করেছেন। তিনি ৩২টি সিনেমা এবং ৪৮টি টিভি শোতে অভিনয় করেছেন। তিনি অল্প বয়সেই জাতীয় ও রাজ্য পুরষ্কার জিতেছিলেন। কন্নড় শিল্পে তার বহু ভক্ত ছিল। তিনি ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। এরপর যদি তিনি চলচ্চিত্র জগতে থাকতেন, তাহলে তিনি আজ একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী হয়ে উঠতেন.. কিন্তু তার পথ ছিল ভিন্ন।

এরপর, কীর্তনা (এইচ.এস. কীর্তনা), যিনি তাঁর সিনেমার ক্যারিয়ার ছেড়ে দিয়েছিলেন, তিনি ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন। এর আগে, তিনি ২০১১ সালে কর্ণাটক প্রশাসনিক পরিষেবা (কেএএস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং দুই বছর কেএএস অফিসার হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু, তাঁর আসল লক্ষ্য হল একজন আইএএস অফিসার হওয়া। 

কীর্তনা ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো ইউপিএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। প্রথম পাঁচটি প্রচেষ্টায় সফল হতে না পারলেও, তিনি হাল ছাড়েননি। ৬বারের চেষ্টায়, তিনি ২০২০ সালে অল ইন্ডিয়া র‍্যাঙ্কে ১৬৭তম স্থান অর্জন করেন এবং সিভিল সার্ভিসেস পাশ করেন।

ইউপিএসসি পাস করার পর, কীর্তনা কর্ণাটকের মান্ড্যা জেলায় সহকারী কমিশনার হিসেবে তাঁর প্রথম পদ পান। জনসেবায় নিয়োজিত থাকার কারণে, তিনি চলচ্চিত্র জগতের গ্ল্যামার থেকে সম্পূর্ণ দূরে ছিলেন। জনগণের সমস্যার প্রতি তাঁর সহানুভূতি তাঁকে একজন চমৎকার কর্তা করে তুলেছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর গল্পকে "success story" হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে কর্ণাটকের বিভিন্ন প্রশাসনিক ভূমিকায় কর্মরত।

কীর্তনা (এইচএস কীর্তনা) কন্নড় শিল্পের একজন অত্যন্ত ব্যস্ত শিল্পী ছিলেন যার ৩২টি চলচ্চিত্র এবং ৪৮টি টিভি অনুষ্ঠান ছিল। হাব্বা, ডোর এবং সিংহদ্রির মতো চলচ্চিত্রগুলি তাকে সুনাম এনে দেয়। তার অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় এবং রাজ্য স্তরের পুরষ্কার পেয়েছিলেন। অল্প বয়সেই তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তাঁর বাবা শ্রীনিবাস এইচটি-র স্বপ্ন ছিল অভিনেত্রীকে সিভিল সার্ভিসে নিয়ে যাওয়া। তিনি তাঁর চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ছেড়ে দিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করেন।

কিছু মানুষ সিনেমা জগতে আসার ইচ্ছা নিয়ে আসে, আবার কিছু মানুষ সিনেমা জগতের মাধ্যমেই আসে। সিনেমা, অভিনয়, নৃত্য এবং বিনোদনের আকর্ষণ প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছে। কারও কারও কাছে, শিল্প সাহায্য নেয়, আবার কারও কাছে, শিল্প সাহায্য করে। অনেকেই আছেন যারা সরকারি বা বেসরকারি খাতে ভালো চাকরি করেন, কিন্তু সিনেমার প্রতি তাদের আগ্রহের কারণে তা ছেড়ে সিনেমা জগতে এসেছেন।

কীর্তনা দিলীপ নামে এক ব্যক্তির সাথে বিবাহিত। কীর্তনা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে তার স্বামী তাঁর UPSC যাত্রায় তাঁকে সাহায্য করেছিলেন এবং এই স্বপ্নগুলি বাস্তবায়িত করার জন্য দিলীপের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের ভারসাম্য বজায় রেখে তিনি অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছেন। তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ৯৮৪ নম্বর পেয়েছেন (লিখিত পরীক্ষায় ৭৯৪, সাক্ষাৎকারে ১৯০) এবং ওবিসি বিভাগে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছেন।