বিয়ের কার্ড দিয়ে নিমন্ত্রণ হয়েছিল সারা, কিন্তু আচমকা এক দুর্ঘটনায় ওলটপালট হয়ে যায় সব কিছু ! রাজকীয় বিয়ের পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হন এই অভিনেত্রী
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Juhi Chawla Love Story : তবে ১৯৯৫ সালে ভক্তদের রীতিমতো চমকে দিয়ে ব্যবসায়ী জয় মেহতার সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন অভিনেত্রী। এদিকে সেটা অবশ্য জয়ের দ্বিতীয় বিয়ে ছিল।
বি-টাউনে নব্বইয়ের দশকের সুন্দরী এবং প্রতিভাময়ী অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জুহি চাওলা। ‘কয়ামত সে কয়ামত তক’ ছবির হাত ধরে বলিউডে পা রেখেছিলেন তিনি। তবে ১৯৯৫ সালে ভক্তদের রীতিমতো চমকে দিয়ে ব্যবসায়ী জয় মেহতার সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন অভিনেত্রী। এদিকে সেটা অবশ্য জয়ের দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। এর আগে জয় বিয়ে করেছিলেন সুজাতা বিড়লাকে। ১৯৯০ সালে এক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন সুজাতা। আর জয়ের প্রথম স্ত্রীর অবশ্য আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি সম্পর্কে শিল্পপতি যশ বিড়লার বোন। এদিকে জয় মেহতার সঙ্গে নিজের বিয়ের কথা প্রথম দিকে একপ্রকার চেপেই গিয়েছিলেন জুহি। রাজীব মসন্দের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বিয়ের প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন জুহি চাওলা।
advertisement
কীভাবে জয় তাঁকে বিয়ের জন্য রাজি করিয়েছিলেন, কীভাবেই বা কঠিন সময়ে শাশুড়ির থেকে মিলেছিল সহায়তা, সেই সবই ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কেন বিয়ের কথা প্রথমে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে চেয়েছিলেন, সেই প্রশ্নের জবাবে ‘ইশক’ অভিনেত্রী বলেন যে, “ওই সময়ে প্রত্যেকেই এটা করতেন। আসলে তখন তো আর ইন্টারনেট ছিল না। আর ফোনের মধ্যেও ক্যামেরা থাকত না। তাই এটা সম্ভব হয়েছিল। আর ওই সময়ে আমি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করছিলাম এবং কিছু ভাল ছবি করছিলাম। যখন আমি জয়কে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিলাম, তখন আমি ভেবেছিলাম যে, আমার কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই আমার মায়ের মৃত্যু হয়। আমার মনে হচ্ছিল যে, যা যা আছে, আমি সব হারিয়ে ফেলব।”
advertisement
কিন্তু জয় মেহতার সঙ্গে কীভাবে প্রেমপর্ব শুরু হয়েছিল অভিনেত্রীর। সেই প্রসঙ্গে জুহি বলেন যে, “যখন আমি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করিনি, তখন থেকেই জয়ের সঙ্গে আমার আলাপ। যদিও সেটা ছিল একটা ছোট্ট সাক্ষাৎ। আমাদের যোগাযোগ সেভাবে ছিল না, কারণ আমি ছবিতে অভিনয় করতে শুরু করি। আমি থাকতাম মুম্বইয়ের আন্ধেরিতে। ছবির কাজের জন্য ব্যস্ততাও বাড়তে থাকে আমার। এরপর আমার এক বন্ধুর বাড়িতে নৈশভোজের আমন্ত্রণে আবারও ওঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল আমার। ফলে ফের কথাবার্তা শুরু হয়। ওঁর মনে কিছু ইচ্ছা জাগে, এদিকে আমিও কিছুটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সব সময় উনি আমায় ফুল আর চিঠি উপহার হিসেবে দিতেন। আমার জন্মদিনে তো উনি এক ট্রাক ভর্তি গোলাপ ফুলও পাঠিয়েছিলেন। এভাবে এক বছর চলে। তারপর আমায় প্রেমের প্রস্তাব দেন। আমি একটা গোটা বছর পরে ওঁর সেই প্রস্তাব গ্রহণ করি।” এদিকে মেয়ের বিয়ের আগেই প্রয়াত হয়েছিলেন জুহির মা। ফলে সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেত্রী।
advertisement
জুহি বলে চলেন যে, “আমি ঠিক করে ফেলেছিলাম, বিয়ের পর আমার কেরিয়ার জলাঞ্জলি দেব। তবে কথায় আছে যে, যখন একটা দরজা বন্ধ হয়ে যায়, তখন আর একটা জানলা খুলে যায়। আমার স্বামী জয়, আমার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা বিশেষ করে আমার শাশুড়ি মা সেই সময় আমায় যত্নে আগলে রেখেছিলেন। একটা সময় ছিল, যখন আমি সারা দিন ধরে বিষণ্ণ থাকতাম। আর তখন আমার শাশুড়ি মা সব সময় আমায় বলতেন যে, আমি তোমায় পুত্রবধূ নয়, বরং মেয়ে হিসেবেই দেখি। যা তোমার মনকে আনন্দ দেয়, সেটাই করো তুমি। উনিই আমায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাজ করার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন।”
advertisement
Doordarshan Sahyadri-র এক সাক্ষাৎকারে জুহি বলেছিলেন যে, “আমার বিয়ে ধুমধাম করে হওয়ার কথা ছিল। মহালক্ষ্মী রেসকোর্সে একটা এলাহি রিসেপশন হওয়ারও কথা ছিল। সেখানে হাজার হাজার মানুষকে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনাও ছিল। কিন্তু এমন কিছু একটা ঘটনা ঘটে, যার জন্য সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। আমার মায়ের মৃত্যু হয় ঠিক বিয়ের আগেই। এক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। আমি গভীর শোকে আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিলাম। আর যখন বিয়ে হচ্ছিল, তখন ভেবেছিলাম যে, এটাই আমার কেরিয়ারের সমাপ্তি ডেকে আনবে। কারণ সেই সময় বলিউডে একটা ট্রেন্ড ছিল, বিয়ের পরে নায়িকাদের কেরিয়ার শেষ হয়ে যেত। এমতাবস্থায় আমার মনে হয়েছিল যে, আমি আমার পরিচয় হারিয়ে ফেলব।’’
advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘‘খুবই বিষণ্ণ হয়ে গিয়েছিলাম। কান্নাকাটিও করতাম। আমার শাশুড়ি মা খুবই মিষ্টি একজন মানুষ। উনি আমার জন্য যা করেছেন, আমি হয়তো তেমনটা কখনওই করতে পারব না। উনি বলেছিলেন যে, আমি তোমায় বিষণ্ণ দেখতে পারব না। তুমি তো আমার মেয়ের মতোই। যদি তুমি ধুমধাম করে বিয়ে করতে না চাও, তাহলে আমরাও সেটা করব না। সেই সময় সমস্ত প্রস্তুতি বাতিল করা হয়। বিয়ের কার্ডও বিতরণ করা হয়ে গিয়েছিল। আর বিয়ের কার্ড শুধু ভারতেই বিতরণ করা হয়নি, সারা বিশ্বে বিতরণ করা হয়ে গিয়েছিল। কারণ আমার বরের ব্যবসা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। ওঁর অনেক পরিচিত। আমার শাশুড়ি মা বলতেন যে, জুহি যদি না চায়, তাহলে আমরা ওকে জোর করব না। আমি মনে করি যে, ঈশ্বর আমার মায়ের জায়গায় আর একজন মা-কে দিয়েছেন।”