Khan Sir Success Story: একদিন বাস ভাড়ার ৯০ টাকা ছিল না পকেটে, তবে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ১০৭ কোটি টাকার অফার ! সকলের প্রিয় খান স্যারের সাফল্যের কাহিনি অনুপ্রেরণা জোগাবে
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
এদিকে যখন ছোট ছিলেন, তখন ফয়জল ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এর জন্য বার তিনেক চেষ্টাও করেছিলেন।
উত্তর প্রদেশের এক ছোট্ট শহরতলিতে এক সাধারণ ঘরে বেড়ে উঠছিলেন ফয়জল খান। তাঁর বাবা একজন ঠিকাদার হিসেবে কাজ করতেন। আর মা ছিলেন গৃহবধূ। অভাবের সংসারে কোনও রকমেই দিন গুজরান হত। তবে সেই অভাবের মধ্যেও ফয়জলের চোখে কিন্তু ছিল বড় স্বপ্ন। এদিকে যখন ছোট ছিলেন, তখন ফয়জল ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এর জন্য বার তিনেক চেষ্টাও করেছিলেন। প্রথমে সৈনিক স্কুল, দ্বিতীয় বার পলিটেকনিক কলেজ এবং সব শেষে এনডিএ-র জন্য চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিন বারই এসেছিল ব্যর্থতা।
advertisement
ভেঙে পড়লেও হার মানেননি ফয়জল।কোনও বিকল্প না থাকায় ছাত্রদের পড়াতে শুরু করেন ফয়জল। আর সকলকে চমকে দিয়ে ফয়জলের সেই ছাত্র ক্লাসের মধ্যে টপ করেন। ফলে ফয়জলের খ্যাতি শীঘ্রই চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে মুখে মুখে প্রচারের কারণে বাড়তে থাকে ফয়জলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও। তবে তা সত্ত্বেও ফয়জলের জীবনের লড়াই শেষ হয়নি।
advertisement
একবার সারাদিন পড়ানোর পর সন্ধ্যাবেলায় আয় হওয়া টাকা গুনছিলেন তিনি। দেখেন মাত্র ৪০ টাকাই আয় হয়েছে। অথচ তাঁর বাড়ি যাওয়ার জন্য বাসের ভাড়াই ছিল ৯০ টাকা। ফলে হেঁটে বাড়ি পৌঁছনো ছাড়া আর কোনও উপায় তাঁর সামনে ছিল না। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। বাড়ি পর্যন্ত হেঁটেই গেলেন ফয়জল। ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে খিদেয় রীতিমতো ততক্ষণে কাহিল হয়ে পড়েছেন তিনি। সেই রাতে গঙ্গার ঘাটে গিয়ে বসেছিলেন ফয়জল। আর সেখানে বসেই একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, একটা কোচিং সেন্টার বানাতে হবে তাঁকে।
advertisement
এরপর বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে একটি ছোট্ট কোচিং ক্লাসও খুলেছিলেন তিনি। কিন্তু সাফল্য এলে সঙ্গে আসে শত্রুর দলও। এক রাতের মধ্যেই বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয় ফয়জলের কোচিং সেন্টারটিকে। হাল ছাড়েননি ফয়জল। বরং জেদ চেপে গিয়েছিল তাঁর মনে। পরের দিন সকালে অবশ্য পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর ছাত্রছাত্রীরাও। ঝাঁটা নিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে জায়গাটি পরিষ্কার করেছিলেন তাঁরা। এভাবেই ছাত্রছাত্রীরাই তাঁর মনে সাহস এবং শক্তি জুগিয়েছিলেন।
advertisement
এরপর একটি সংস্থার তরফে তাঁদের হয়ে কাজের জন্য ফয়জলকে ১০৭ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। বলেন, “আমার ছাত্রছাত্রীদের আমাকেই প্রয়োজন।” আসলে ফয়জলের মতে, শিক্ষকতা শুধু টাকার জন্য নয়, বরং জীবন পরিবর্তনের জন্য। আর আজকের দিনে দাঁড়িয়ে দেশের সবথেকে জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত শিক্ষক হয়ে উঠেছেন ফয়জল। যাঁকে সকলেই এক ডাকে খান স্যার নামেই চেনেন। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে লক্ষ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার। ফলে আয়ও হয় ভালই। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের সাফল্যকেই নিজের আসল সুখ এবং সাফল্য বলে মনে করেন সবার প্রিয় খান স্যার।