করোনাভাইরাস দ্বিতীয় ঢেউ তার ওপর মূল্যবৃদ্ধি! মরার ওপর যেন খাঁড়ার ঘা। তাই দুর্গাপুজোর সময় ঘনিয়ে আসলেও এবার মন ভাল নেই কুমোরটুলির। এমনিতেই বাজার খারাপ, তারপর যতটা বরাত এসেছে সেই কাজও সময় মত শেষ করা যাবে কিনা সেই চিন্তায় রাতের ঘুম ছুটেছে মৃৎশিল্পীদের। কারণ, প্রতিবার বাংলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কুমোরটুলিতে যে কর্মীরা কাজ করতে আসেন, করোনার জন্য তারা এবার কলকাতামুখো হতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না আর। আর তাতেই উদ্বেগ বাড়ছে কুমোর পাড়ার মৃৎশিল্পীদের। Photo : File Photo
প্রতিবার প্রায় ৩৫০০ থেকে ৪০০০ মানুষ কুমোরটুলিতে কাজ করতে আসেন দুর্গাপুজোর আগে। মোটামুটি জুন মাসের শুরু থেকে আসতে শুরু করেন তাঁরা। মূলত মৃৎশিল্পীদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন তারা। খড় বেঁধে কাঠামো তৈরি করে তাতে মাটি দেওয়া, রং করা সবকিছু মূলত তারাই করে থাকে। তাদের ওপর ভরসা করে বছরের পর বছর মৃৎশিল্পীরা পুজো কমিটি গুলোর কাছ থেকে ঠাকুরের বরাত নিয়ে থাকে।
কিন্তু সেই কর্মীদের অনেকেই এবার কুমোরটুলিতে আসতে চাইছে না। কারণ অবশ্যই করোনা। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে কুমোরটুলিতে মেরেকেটে হাজার খানেক কর্মী কাজ করছেন। তাঁদের অনেককে মৃৎশিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে টিকাও দেওয়া হয়েছে। বাকিরা এলে তাঁদের জন্য টিকার ব্যবস্থা সমিতির পক্ষ থেকে করার চেষ্টা হবে। কিন্তু গ্রাম-গঞ্জ থেকে আসা কর্মীরা কলকাতায় এসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়ার ভয় পাচ্ছেন। পাশাপাশি লোকাল ট্রেন চালু না হওয়ায় অনেকেই ইচ্ছে থাকলেও আসতে পারছেন না।
এবছর ভোট এবং লকডাউনের জন্য পয়লা বৈশাখ বা অক্ষয় তৃতীয়ার দিন তেমন বরাত আসেনি কুমোরটুলিতে। কিন্তু করোনার বিধি নিষেধ শিথিল হওয়ার পর অনেক পূজা কমিটি এসে ঠাকুরের বায়না করে গেছে। এরপর রথের দিন আরও বরাত পেয়েছেন মৃৎশিল্পীরা। অন্যান্যবার এতদিনে গমগম করে কুমোরটুলির ঘরগুলো। কিন্তু এবার এক দুজনের উপর ভরসা করে কাজে হাত দিয়েছেন মৃৎশিল্পীরা। Photo : File Photo