

*করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। কোনওভাবেই কমানো যাচ্ছে না মারণ ভাইরাসের গতি। এ দিকে পুজোর আর ১০০ দিনও বাকি নেই। এমতাবস্থায় কী ভাবে হবে এত বড় উৎসব! তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না কলকাতার ছোট থেকে বড় বাজেটের পুজো উদ্যোক্তারা। তবে চিন্তার মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভয় পেয়েই পুজো করার ক্ষেত্রে বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছেন শহরের পুজো উদ্যোক্তারা। ছবিঃ সংগৃহীত।


*বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দুর্গাপুজোর সংগঠকদের সংগঠন 'ফোরাম ফর দুর্গোৎসব' একটি সাময়িক গাইডলাইন তৈরি করেছে। আপাতত সেই প্রস্তাবিত গাইডলাইন মেনেই মণ্ডপ থেকে প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন কয়েকটি পুজো কমিটি। তবে প্রতিদিন পরিস্থিতি পরিবর্তিত হচ্ছে। আগামীতে দেশের করোনা পরিস্থিতি কি হবে, সেই অনুযায়ী প্ল্যানও ধীরে ধীরে পরিবর্তীর হবে, জানিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার শিবমন্দির পুজো কমিটির অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা পার্থ ঘোষ।ছবিঃ সংগৃহীত।


*ফোরামের তরফে আবেদন বর্তমান পরিস্থিতিতে যথাসম্ভব বাজেট কমিয়ে অনাড়ম্বর, স্নিগ্ধ-সুন্দর পুজো করা হোক। বাকি অর্থ জনহিতকর কাজে ব্যবহার করতে পারে পুজো কমিটিগুলি। ছবিঃ সংগৃহীত।


*প্যান্ডেল ও প্রতিমার উচ্চতা খুব বেশি না হওয়াই শ্রেয়। ঠাকুরের ভোগ নিবেদনে গোটা ফল দিতে হবে। পুষ্পাঞ্জলি, সন্ধি পুজো, সিঁদুর খেলার সময় সামাজিক দূরত্ব মানা বাধ্যতামূলক। করোনা আবহে কী ভাবে পুজো প্রস্তুতি হবে! এ প্রসঙ্গে সন্তোষপুর লেকপল্লির সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ দাস বলেন, "আমরা ঠিক করছি পাড়ায় প্রণামী বাক্সের মতো একটা বাক্স রাখা হবে। পাড়ার বাসিন্দারা সেখানে সামর্থ্য মত চাঁদা দিয়ে যাবেন। সেক্ষেত্রে কারও বাড়ি যাওয়ার প্রয়োজন পড়ব না, সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হবে।" সোমনাথ আরও জানিয়েছেন, এবারে সকলকে অঞ্জলির ফুল বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে হবে। ২০ জন করে অঞ্জলি হবে, প্রয়োজনে ২০ বার অঞ্জলি হবে, কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ।" ছবিঃ সংগৃহীত।


*শিল্পী ও কর্মকর্তারা যেন এমন মণ্ডপ তৈরি করেন, যাতে দর্শক বাইরে থেকেই প্রতিমা দর্শন করতে পারেন। আর যদি একান্তই প্যান্ডেলে প্রবেশ করাতে হয়, সেক্ষেত্রে ব্যারিকেড দিয়ে গেট যতটা সম্ভব দীর্ঘ করতে হবে প্রবেশ পথ এবং মণ্ডপে পৌঁছনোর রাস্তা। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে। এ প্রসঙ্গে চেতলা অগ্রণীর ইসি মেম্বার সন্দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের মণ্ডপ এমনভাবে তৈরি হবে যাতে বাইরে থেকেই দর্শনার্থীরা ঠাকুর দেখতে পান। মণ্ডপের ভেতরে প্রবেশ করার প্রয়োজন পড়বে না।" ছবিঃ সংগৃহীত।


*ফোরামের গাইডলাইনে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ২৫ জনের বেশি দর্শনার্থীকে একসঙ্গে মণ্ডপে প্রবেশ করানো যাবে না। তবে প্রশাসনের সিধান্ত চূড়ান্ত হবে। এ প্রসঙ্গে উত্তর কলকাতার কাশিবোস লেন পুজো কমিটির সম্পাদক সোমেন দত্ত এ প্রসঙ্গে বলেন, "পুজোর সঙ্গে হাজার হাজার মানুষের রুজি-রুটি জড়িয়ে রয়েছে। প্রশাসন যে গাইডলাইন দেবে, সম্পূর্ণ ভাবে সেটা মেনেই পুজো হবে। তবে যে প্ল্যান প্রথম অবস্থায় হয়েছিল, সেটা আর হবে না। সময় অনুযায়ী প্ল্যান পরিবর্তিত হবে। এ ছাড়া পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিশু ও বয়ঃজ্যেষ্ঠদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা করা হবে।" ছবিঃ সংগৃহীত।


*ঠাকুরপুকুর এসবি পার্কের অন্যতম মূল উদ্যোক্তা সঞ্জয় মজুমদার বলেন, "এখন যা পরিস্থিতি তাতে পুজো হবে কিন্তু নিয়ম রক্ষার্থে। তবে আমাদের পাড়ায় বহু বয়স্ক মানুষ আছেন, যাঁদের অনুমতি নিতেই হবে। তাই ২ অগাস্ট ভার্চুয়াল একটা মিটিং হবে। সেখানেই যা বলবেন তাঁরা, সেটাই চূড়ান্ত হবে।" ছবিঃ সংগৃহীত।


*ফোরাম গাইডলাইনে জানিয়েছে, স্বেচ্ছাসেবকদের খেয়াল রাখতে হবে যাতে দর্শকদের মুখ অবশ্যই মাস্কে ঢাকা থাকে। প্রবেশ এবং প্রস্থানের পথে যদি স্যানিটাইজার দেওয়া যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মূল প্রবেশ পথে একাধিক থার্মাল গান রাখতে হবে। এমনকী জ্বর নিয়ে কোনও ব্যক্তিকে প্যান্ডেলে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। ছবিঃ সংগৃহীত।


*যে সব মণ্ডপ সংলগ্ন এলাকায় স্টল হয়, সেখানে দুটি স্টলের মধ্যে অন্তত ৩-৪ ফুটের ব্যবধান রাখতে হবে। স্টলের মালিকদের রেডিমেড খাবার বিক্রিতে জোর দিতে। বসিয়ে লোক খাওয়ানো যাবে না। তবে ফোরামের গাইডলাইন মেনে মণ্ডপ বয়া প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু হলে আসন্ন পরিস্থিতি কি হবে, তার দিকেই তাকিয়ে শহর থকে শহরতলির পুজো উদ্যোক্তারা। ছবিঃ সংগৃহীত।