#নয়াদিল্লি: সময়টা বড় কঠিন ছিল নিজেকে সামলানোর ক্ষেত্রে। সারা দেশের প্রত্যাশা মাটি হয়ে গিয়েছিল ভিনেশ ফোগাটের একটা চোটে। সেটা ছিল ব্রাজিল, আর এবার টোকিও। উদিত সূর্যের দেশ নতুন সূর্যোদয় দেখার অপেক্ষায় ভারতের মহিলা কুস্তিগীর। দুঃসহ অভিজ্ঞতাকে ভুলে যেতে পারেন না। মনে রেখেই হিসেব মিটিয়ে নিতে চান। লুটিয়ে পড়েছিলেন ম্যাটে। কুস্তির সেই কোয়ার্টার ফাইনালে ভিনেশ ফোগাটের প্রতিপক্ষ ছিলেন চিনের সান ইয়ানান। প্রতিদ্বন্দ্বীর প্যাঁচে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন দেশের সেরা মহিলা কুস্তিগিরটি।
পাঁচ বছর পর টোকিও গেমসে নামার আগে সেই স্মৃতি ভেসে উঠছে ভিনেশের মনে। রিওর চোটই তাঁকে মানসিক শক্তি জুগিয়েছে। আরও শক্তিশালী হয়েই এবার টোকিওর ম্যাটে নামবেন ২৬ বছর বয়সি এই কুস্তিগির। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘সেই ঘটনা মনে পড়লে আজও শিউরে উঠি। ইন্টেরিয়র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট (এসিএল) ছিঁড়ে গিয়েছিল। রিও থেকে দেশে ফিরেছিলাম হুইল চেয়ারে। অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল। এক সময় মনে হয়েছিল, আর সার্কিটে ফিরতে পারব না। এতটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছি। বয়স বেড়েছে। অভিজ্ঞতাও বেড়েছে। আগের থেকে এখন মানসিকভাবে আমি অনেকটাই শক্তিশালী। আসলে একটা বড় ধাক্কা জীবনকে বিরাট শিক্ষা দেয়। আবার ওলিম্পিকসের ম্যাটে নামতে পারব ভেবে ভাল লাগছে।’
ভিনেশের যখন ৯ বছর বয়স, তখন তাঁর বাবা মারা যান। সেই কঠিন পরিস্থিতি থেকে এই জায়গায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে মায়ের অবদান কোনওদিন ভুলতে পারবেন না তিনি। রিওতে চোট পাওয়ার পরও তাঁকে সর্বদা উজ্জীবিত করেছেন মা-ই। টোকিওতে ভিনেশের থেকে পদকের আশা করছে গোটা দেশ। প্রত্যাশা পূরণ করতে মরিয়া এই কুস্তিগিরও। তিনি বলেন, ‘রিওতে পদক জিততে পারিনি। এবার অবশ্য তার কোনও প্রভাব আমার পারফরম্যান্সে পড়বে না। রিও ওলিম্পিকসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। টোকিও গেমসে শুরুটা ভাল করলে শেষটাও মধুর হবে বলেই মনে করি।’
গত ওলিম্পিকসে বড় বিপর্যয়ের পর ভিনেশের জয়যাত্রা থেমে থাকেনি। ২০১৮ কমনওয়েলথ ও এশিয়ান গেমসে সোনা জিতেছিলেন তিনি। দু’টি সোনাই তাঁর ঝুলিতে এসেছিল মেয়েদের কুস্তির ৫০ কেজি ক্যাটাগরিতে। অলিম্পিকসে এই ক্যাটাগরি নেই। ফলে টোকিওতে ৫৩ কেজিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। নতুন ওয়েট ক্যাটাগরির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াই চ্যালেঞ্জ ভিনেশের কাছে। হাঙ্গেরির কোচ উলার আকোসের হাতে পড়ে আরও ধারালো হয়ে উঠেছেন তিনি।
কুস্তিতে ভারতের পদকের আশা রয়েছে ভাল মতই। আর হরিয়ানার এই মেয়ে নিজেকে নিজেই চ্যালেঞ্জ করেছেন পদক নিয়ে ফেরার ব্যাপারে। রিওর ম্যাট ছেড়েছিলেন চোখের জলে। টোকিওতে গলায় পদক নিয়ে ছাড়তে চান।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Tokyo Olympics 2020