#মেদিনীপুর: রুপনারায়নের ধারের দ্বীপ মায়াচরের অবস্থা কার্যত অসহায়। পূর্ব মেদিনীপুরের মায়াচর দেখেছে আমফানের তান্ডব, তারপরে ইয়াস যে তাদের এতটা কাবু করে দেবে তা কখনো ভাবতেও পারেনি রিমঝিম, তাপসী, গোবিন্দর মত লোকেরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই বলেছিলেন মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে, সেই পরীক্ষার ভাগ্য এখন এক্সপার্ট কমিটির হাতে থাকলেও মায়াচর হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী রিমঝিম মাইতির খুব ইচ্ছে, এই বছর দেবে জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। হঠাৎ ইয়াস যেন রিমঝিমদের কাছে দানব হয়ে উঠেছে, তার তান্ডবের হাত খেকে বাঁচতে পারেনি পাঠ্য বইগুলো। সেই পাঠ্য বইগুলো জোগাড় করে দিচ্ছে প্রতিবেশী তাপসী নস্কর। তার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়ে মামার বাড়ি চলে যাওয়ায় ভিজে বই পড়ার সুযোগ পেয়েছে রিমঝিম। তবে সকালে আলোতে বইয়ের লেখা চোখে পড়লেও রাতে বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে তার কোন সুযোগ নেই। মায়াচরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন সেই এলাকার বেশকিছু যুবক। প্রশান্ত, দীপঙ্কররা সকাল বিকাল বাড়ি বাড়ি ঘুরে দিচ্ছেন মোমবাতি ও ঔষুধ।
মায়াচরের ইয়াসে প্রভাবে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় দিনেও ত্রান বিলি করেছেন সকালেই। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অন্যতম সদস্য দীপঙ্কর মান্না বলেন, কেউ চাল, কেউ জল দিচ্ছেন মায়াচরে, আমরা দিচ্ছি ঔষুধ মোমবাতি। বিশেষ করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মোমবাতি ও পড়াশোনার বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে পাশে দাঁড়ানোই মূল লক্ষ্য আমাদের। পূর্ব মেদিনীপুরের এই বাসিন্দারা জানেন না, তাঁদের অবস্থার কবে পরিবর্তন হবে তবুও বিশ্বাস ক্ষত সারিয়ে উঠবে ওরা। পুরো এলাকায় জল জমার পরে পানীয় জলের সমস্যাও ছিল মায়াচরে। জল্পনা গুছাইত হাজারো চেষ্টায় পাননি পানীয় জল। জলের সমস্যা মেটাতেও এগিয়ে এসেছেন দীপঙ্কর, প্রশান্তরা। মায়াচরের বেশিভাগ বাসিন্দাদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন দুজনেই। প্রশান্ত সাঁতরা বলেন প্রথমদিন থেকেই এখানে মানুষের পানীয় জলের সমস্যা, সেই সমস্যা মেটাতেই জল নিয়ে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবার একটু চেষ্টা। তবু হাজারো সমস্যার মধ্যে ওই রুপনারায়নের ধারে থাকা মায়াচরের বাসিন্দারা মনে করেন আবার দিন পরিবর্তন হবে, আবার ফিরবে সুদিন।
Susovan Bhattacharjee
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Cyclone Yaas, Purba midnapore