#বর্ধমান: সংসার যে আর চলছে না। কবে মিলবে ট্রেনে ওঠার অনুমতি? জানতে চাইছেন বৈজনাথরা। সঙ্গে ঝালমুড়ির বাস্ক। মুড়ি, শশা কুচো, বাদাম, চানাচুর, নারকেল কুচো, ছোলা ভিজে, পেঁয়াজ আলাদা আলাদা কৌটোয়। লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার খবরে স্বস্তি পেয়েছিলেন। উপার্জনের আশায় সকাল সকাল ঘর থেকে বেরিয়ে ঝালমুড়ির বা নিয়ে এসেছিলেন পৌঢ় বৈজনাথ চৌধুরি। ট্রেনে ওঠা দূরে থাক প্ল্যাটফর্মেও ঘেঁষতে দেয়নি আরপিএফ। স্টেশন চত্বরের বাইরে হতাশ হয়ে বসেছিলেন।
বললেন, ছেলে, নাতি নাতনিদের নিয়ে সংসারে ছ জনের পেট চলে। গত সাড়ে সাতমাস ধরে কি দুর্বিষহ অবস্থার যে দিন কেটেছে তা আমরাই জানি। দিনের পর দিন লঙ্গরখানার খাবার খেয়ে দিন কেটেছে। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর সেসবও বন্ধ। দিন আর কাটছেই না। ট্রেন চালু হল। বিক্রিবাটা শুরু হবে আশা করছিলাম। কিন্তু আমাদের তো ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না।
চা বিক্রেতা কমল পাসোয়ান, সোনপাপড়ি বিক্রেতা সুনীল দাস, লেবু লজেন্স বিক্রেতা পরাণ হাজরা সকলেই এক প্রশ্ন। কবে থেকে মিলবে হকারির ছাড়পত্র। তাঁরা বলছেন, সবই যখন খুলে দেওয়া হচ্ছে তখন আর আমাদের পেটে লাথি মেরে লাভ কি। আমরাও যাতে আগের মতো পরিশ্রম করে রোজগার করতে পারি তার অনুমতি দেওয়া হোক। এমনিতেই অর্থের অভাবে পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা হচ্ছে না। চাল ডাল কেনার পয়়়সা নেই।এরপর তো খেতে না পেয়ে সকলে মিলে আত্মহত্যা করতে হবে।
যাত্রীরা বলছেন, প্রথম প্রথম মাঝপথে ট্রেনে উঠছিলেন হকারদের কেউ কেউ। তবে বর্ধমানের মতো যে সব স্টেশনে কড়াকড়ি বেশি সেই সব স্টেশন এড়িয়ে চলছিলেন তারা। ধরপাকড় শুরু হতেই তাদের সংখ্যা কমেছে। বর্ধমান স্টেশনের হকাররা বলছেন, লুকিয়ে চুরিয়ে নয়, হকারদের প্ল্যাটফর্ম ঢোকার ও ট্রেনে ওঠার অনুমতি দিক রেল। তাতে যাত্রীদেরও সুবিধা হবে। উপার্জন করতে নেমে দুুুুটো পয়সার মুুখ দেখতে পাব আমরাও।
Saradindu Ghosh