#বর্ধমান: অবশেষে হিমঘর মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস পেলেন কৃষকরা। হিমঘরে রাখা আলু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরনের দাবিতে কৃষকরা দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমান জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলার উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। বৈঠকে কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকরা, হিমঘর কর্তৃপক্ষ ও কৃষকদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মালিক পক্ষ জানায়, বিমার টাকা হাতে না পাওয়ায় টাকা দিতে সমস্যা হচ্ছে। আপাতত তাঁরা ক্ষতিপূরণের কিছু টাকা কৃষকদের দেবেন। এ জন্য আটচল্লিশ ঘন্টা সময় চেয়ে নিয়েছেন। এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। তাঁদের বক্তব্য, এতদিন শুধু প্রশাসনিক আশ্বাস মিলছিল। হিমঘর কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। আজ তাঁরা টাকা ফেরতের কথা বলেছেন। আপাতত কিছু টাকা দিক। তাতে কৃষকরা সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাবে। তবে বাকি টাকা যাতে দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হয় সেই দাবিও জানিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: রামপুরহাটে ব্যাঙ্ক চত্ত্বরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, মুহূর্তে পুড়ে ছাই একের পর এক মোটরবাইক
দু'মাস হয়ে আগে মেমারির রসুলপুরের হিমঘরে আলু পচে নষ্ট হয়ে যায়। আজ পর্যন্ত এক জন কৃষকও ক্ষতিপূরণ পাননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপের পরও ক্ষতিপূরণ পাননি কৃষকরা। এর আগে অবিলম্বে টাকার দাবিতে হিমঘরের ম্যানেজারকে তালা বন্ধ করে রেখে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল কৃষকরা। কৃষকদের পক্ষে হিমঘর মালিকের বিরুদ্ধে মেমারী থানায় লিখিত অভিযোগও করা হয়। বুধবার ক্ষতিপূরণের দাবিতে দু নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল কৃষকরা।
তিন মাস আগে মেমারির রসুলপুরের হিমঘরে আলু রেখেছিলেন এলাকার কৃষকরা। গত ১৯ মে আলু পচে গিয়েছে বলে জানতে পারেন কৃষকরা। সেই থেকেই আলুর ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে জেলাপ্রশাসন। ক্ষতিপূরণ বাবদ বস্তাপিছু ৮৯০ টাকা করে কৃষকদের মিটিয়ে দিতে হবে হিমঘর কর্তৃপক্ষকে- এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় প্রশাসন। এরপর ২৭ জুন বর্ধমান সফরে এসে হিমঘরে আলু নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে কৃষকদের যাতে কোনও দুর্ভোগ না হয় তা দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখনও একজন কৃষকও কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি।
কৃষকদের বক্তব্য, অনেকেরই ১০০-২০০ বস্তা করে আলু ছিল। সব আলু নষ্ট হয়ে গেছে। টাকা না মেলায় অসুস্থদের চিকিৎসা করা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ কৃষকদের এমনকি সংসার চালানো যাচ্ছে না, পরবর্তী চাষ কীভাবে হবে তাই নিয়েই চিন্তিত কৃষকরা। অবিলম্বে টাকা না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই বলে জানাচ্ছেন কৃষকরা।
ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন কৃষকদের প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার জন্য হিমঘর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। হিমঘর মালিকের সঙ্গে কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। কিন্তু তারপরও টাকা পাননি কৃষকরা। বিমার টাকা এখনও না মেলার জন্যই কৃষকদের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে হিমঘর কর্তৃপক্ষ। এরপর আজ ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে বৈঠক ডেকেছিল প্রশাসন।
Saradindu Ghosh
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: East Bardhaman, Potato