Purba Bardhaman: ক্ষীর নদীতেই বাস দেবী য্যোগাদ্যার
Last Updated:
করোনার জেরে দীর্ঘ দু বছর হয় নি পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্ৰামে য্যোগাদ্যা দেবীর পুজো। বন্ধ ছিল মেলা। করোনা আবহ কাটিয়ে এবছর ফের জাকজমক সহকারে হল পুজো। চলছে মেলা।
পূর্ব বর্ধমান: করোনার জেরে দীর্ঘ দু বছর হয় নি পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্ৰামে য্যোগাদ্যা দেবীর পুজো। বন্ধ ছিল মেলা। করোনা আবহ কাটিয়ে এবছর ফের জাকজমক সহকারে হল পুজো। চলছে মেলা। রবিবার থেকে শুরু হল ক্ষীরগ্ৰামে য্যোগাদ্যা দেবীর পুজো ও মেলা। ৫১ সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম একটি সতীপীঠ হল পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্ৰামের য্যোগাদ্যা সতীপীঠ। বর্ধমানের মহারাজ কীর্তি চন্দ ক্ষীরগ্ৰামে য্যোগাদ্যা দেবীর মন্দির নির্মাণ করান। এখানে দেবীর ডান পায়ের বুড়ো আঙ্গুল পড়েছিল। সারাবছর মা য্যোগাদ্যা মূর্তি ক্ষীরদীঘির জলে থাকেন। মাত্র ছদিনের জন্য ডাঙায় আসেন তিনি। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র দুদিন দেবীর দর্শন পান ভক্তরা। বৈশাখ সংক্রান্তির আগের দিন এবং জ্যৈষ্ঠের চার তারিখে। এছাড়া, বাকি চারদিন হল আষাঢ় নবমী, বিজয়া দশমী, পনেরোই পৌষ এবং মাঘ মাসের মাকরী সপ্তমী। ওই চারদিন দেবী যোগাদ্যাকে তুলে পুজো করা হলেও, দেবীকে দর্শনের অনুমতি পান না ভক্তরা। যে নদীতে দেবীর বাস ইতিহাসের পাতায় সেটি ক্ষীরনদী। ইতিহাসের প্রবাহে গতি হারিয়ে তা এখন ক্ষীরদীঘি।
গ্রামের নাম ক্ষীরগ্রাম। বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার মঙ্গলকোট থানার এই জনপদ ঘিরেই থাকে দেবী যোগাদ্যা। অন্তত ৪০টি যোগাদ্যা বন্দনা পুঁথি পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায়। তবে জানা যায়, সবথেকে আগে যোগাদ্যা বন্দনা লিখেছিলেন কবি কৃত্তিবাস। কবির মতে, রামায়ণের সময় কালে মহীরাবণ বধের পরে তাঁরই পূজিতা ভদ্রকালী বা যোগাদ্যাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করেন রামচন্দ্র। ক্ষীরগ্রামের পশ্চিমে রয়েছেন দেবী যোগাদ্যা উমা অর্থাৎ সিংহপৃষ্ঠে আসীন কালো কোষ্ঠীপাথরের দশভূজা মহিষমর্দিনী। মন্দির লাগোয়া ক্ষীরদীঘির জলেই দেবী যোগাদ্যার বাস। মন্দিরে রয়েছে প্রবেশমণ্ডপ, তার পরে রয়েছে গর্ভগৃহ। তবে মন্দিরে কোনও বিগ্রহ নেই।
advertisement
আরও পড়ুনঃ Purba Bardhaman: নতুন সেতু তৈরিতে উদ্যোগী পূর্ত দফতর, খুশি স্থানীয়রা
কারণ দেবীর বাস তো ক্ষীরদীঘিতে। গর্ভগৃহের দেওয়াল ঘেঁষে বেদী। সেই বেদীতেই দেবীর নিত্যপুজো হয়। মন্দির থেকে অদূরে একটি টিলার উপর দেবীর ভৈরব ক্ষীরকণ্ঠ শিবের মন্দির। তাই এই গাঁয়ের নাম ক্ষীরগ্রাম, আদরের ক্ষীরগাঁ। মন্দির আর ক্ষীরদীঘি থেকে খানিকটা দূরে গ্রামের এক প্রান্তে ধামাসদীঘি। পুরাণে আছে, ওই দীঘির ঘাটেই যুবতীর বেশে শাঁখা পরেছিলেন উমা। সেই থেকে দেবী বৈশাখের উৎসবে শাঁখা পরেন যোগাদ্যা। আর শাঁখা পরেন ক্ষীরগ্রামের এয়ো বধূরাও। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বসে মেলা। এই মেলাকে কেন্দ্র করে ভক্তের ঢল নামে পুণ্যস্থল ক্ষীরদীঘির পাড়ে। প্রতিবছরের মতো এবছরও ৩১শে বৈশাখ ধুমধাম সহকারে পালাতি হল ক্ষরীগ্ৰামে য্যোগাদ্যা দেবীর পুজো।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ Purba Bardhaman: এক নজরে দেখে নিন কান্দরা রাধাকান্ত কুন্ডু মহাবিদ্যালয়ের কোর্সগুলি
এই ঐতিহ্যবাহী পুজোকে ঘিরে ক্ষীরগ্ৰাম এখন মেতে রয়েছে উৎসবের আমেজে। পুজো উপলক্ষে বসেছে বড় মেলা। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে প্রচুর দর্শনার্থী এসেছেন য্যোগাদ্যা দেবীর দর্শনে। য্যোগাদ্যা দেবীর পুজো উপলক্ষে বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী উদ্যোগ ও ক্ষীরগ্ৰাম অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সহযোগিতায় দর্শনার্থীদের জন্য জলের আয়োজন করা হয়েছে। কৈচর রায়স মিলের পক্ষ থেকে প্রায় ২০ হাজার মানুষের দুপুরে অন্ন ভোগ খাওয়ানো ব্যবস্থা করা হয়েছে।
advertisement
Malobika Biswas
view commentsLocation :
First Published :
May 17, 2022 5:05 PM IST