#মালদহ: কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসল মা। মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে পর্ষদ। হাসপাতালেই পুলিশ ও পরীক্ষক দিয়ে নেওয়া হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। রবিবার মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন রতুয়ার কেপাতুল্লা হাইস্কুলের ছাত্রী রুকসানা খাতুন। সদ্যজাতর মায়ের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মালদহের রতুয়ার মহারাজপুরের বাসিন্দা রুকসানা খাতুন। রবিবার রাতে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা। আত্মীয়রা ভাবেন আর পরীক্ষা দেওয়া হল না রুকসানার। কিন্তু প্রসবের ঘোর কাঁটিয়ে উঠতেই রুকসানা জানিয়ে দেন, যত কষ্টই হোক পরীক্ষা দিতে চান তিনি। তাঁর ইচ্ছের কথা জেনে উদ্যোগী হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেলে পর্ষদের প্রয়োজনীয় অনুমতিও। হাসপাতালেই দুইজন পুলিশ ও এক পরীক্ষককে পাঠানো হয়। তাঁদের উপস্থিতিতেই পরপর মাধ্যমিকে বাংলা ও ইংরেজী পরীক্ষা দিয়েছে রুকসানা।
পরিবারে চরম দারিদ্র। বাবা পেশায় দিনমজুর। সংসারে পাঁচ বোনের মধ্যে সেই বড়। নাবালিকা অবস্থাতেই তাঁর বিয়ে দিয়ে দেয় পরিবার। তবে পড়ার ইচ্ছেয় বাধ সাধেনি শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কিন্তু পরীক্ষা প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেলেও রবিবার আচমকাই প্রসব যন্ত্রনা ওঠায় রুকসানাকে আনা হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এখন সদ্যজাতকে কোলে নিয়ে রাতে পড়াশুনা করছেন রুকসানা। আর দিনে বসছেন মাধ্যমিক পরীক্ষায়।
রুকসানার এই সাহসী পদক্ষেপে খুশী মালদা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বুধবার তাঁর পরীক্ষার ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন মালদা মেডিক্যাল কলেজের সুপার অমিত কুমার দাঁ। তিনি জানান, অস্ত্রপচার করে কন্যা সন্তান প্রসব হয়েছে রুকসানার। চিকিৎসকরা পরীক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার মাঝে মধ্যেই দেখভাল করছেন। প্রসূতির বিভাগের একপাশে তাঁর পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সন্তান জন্মানোর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এভাবে পরীক্ষায় বসা সহজ কাজ নয়। এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় যখন মালদহের রতুয়ায় কখনও টুকলি সরবরাহ আবার কখনও মোবাইলে প্রশ্ন পাচারের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য তখন রতুয়ারই সংখ্যালঘু পরিবারে এই ছাত্রীর লড়াই তাৎপর্যপূর্ন।
সেবক দেবশর্মা
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Madhyamik 2020, Madhyamik Exam, Maldah