Uttarpradesh Leopard Attack : নেকড়ে, বাঁদরের পর এবার উত্তর প্রদেশে মানুষখেকোর উৎপাত, ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীর

Last Updated:

Uttarpradesh Leopard Attack: মানুষখেকো ধরতে ইউপি বনবিভাগ প্রায় ১০৭টি খাঁচা পেতেছে৷ মানুষখেকোটি ধরতে একটি ভয়ঙ্কর অভিযানও শুরু করা হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশে মানুষখেকো চিতাবাঘের তাণ্ডব
উত্তরপ্রদেশে মানুষখেকো চিতাবাঘের তাণ্ডব
বিজনোর :  মাহসি তহসিলে ১০টি হত্যাকাণ্ডের জন্য শুধু বাহরাইচের নেকড়েরা দায়ী নয়। উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর জেলায়, ৮৫টি গ্রামের ৬০ হাজারের বেশি মানুষ রয়েছেন। যেখানে অন্তত ৫০০টি চিতাবাঘ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মানুষ খেকো চিতাবাঘের শিকার হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। গত দেড় বছর ধরে এই হত্যাকাণ্ড চলছে।
উত্তর প্রদেশের বনবিভাগ প্রায় ১০৭টি খাঁচা পেতেছিল মানুষ খেকো বাঘগুলিকে ধরার জন্য। তবে এটাও স্থানীয়দের স্বস্তি দিতে পারেনি। গ্রামবাসীরা এখনও বাড়ির ভিতরে ভয় ভয়েই বসবাস করছেন।
advertisement
advertisement
পিলানা, বিজনোরের চাঁদপুর তহসিলের এক প্রাণবন্ত গ্রাম ছিল। এখন তা নিস্তব্ধ। এখানে একসময় নারী-পুরুষরা একসঙ্গে মাঠে কাজ করতেন, দোকানপাট জমজমাট থাকত, স্থানীয়রা চায়ের স্টলে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতেন। এখন সেখানে শ্মশানের নিস্তব্ধতা। যে শিশুরা একসময় রাস্তায় ক্রিকেট খেলত, তারাও অনুপস্থিত, মহিলারা আর দল বেঁধে আড্ডাও দেন না।
মানুষখেকো চিতাবাঘের ভয় গ্রামবাসীরা বিকাল পাঁচটার পরে বাড়ির বেড়োচ্ছেন না। গ্রামের এক সময়ের ব্যস্ত দৈনন্দিন জীবনে ঘটেছে আমূল পরিবর্তন। যা চোখে লাগার মতো।
advertisement
পিলানা গ্রামের বাসিন্দা কুলদীপ মুদগাল বলছিলেন, “আমাদের গ্রামের উপর কারও খারাপ নজর পড়েছে। গ্রামের বর্তমান অবস্থা আর আগের মতো নেই। আমাদের গ্রাম খুব হাসিখুশি ছিল। এখন সেসব অতীত।” কুলদীপ এই পরিবর্তনের জন্য মানুষখেকো চিতাবাঘকেই দায়ী করেছেন।
advertisement
“গভীর জঙ্গল থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে চিতাবাঘ দেখা মেলে। স্থানীয় ভাষায় লোকেরা এটিকে ‘গুলদার’ বলে ডাকেন। সব ঠিকই ছিল। কিন্তু, ২০২৩ সালের জানুয়ারির পর থেকে হঠা‍‍ৎই দৃশ্যপট বদলে যায়৷” কুলদীপ নিউজ 18-কে জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, চিতাবাঘের আক্রমণ এখন রোজকার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং এটাই গ্রামের জীবনযাত্রাকে সম্পূর্ণ রূপে বদলে দিয়েছে।
advertisement
চিতাবাঘের আক্রমণে পিলানা সম্ভবত একমাত্র গ্রাম নয়। ইউপি-র বন বিভাগের রেকর্ড অনুসারে, প্রায় ৮৭টি গ্রাম রয়েছে। “চিতাবাঘের দেখা এবং মানুষ-প্রাণীর সংঘর্ষের ভিত্তিতে, আমরা বিজনোরের চারটি তহসিলে অতি সংবেদনশীল বিভাগের অধীনে প্রায় ৮৭টি গ্রাম চিহ্নিত করেছি। এই গ্রামগুলি ঘন জঙ্গল এলাকায় ৮ থেকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে পড়ে,” বিজনোরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জ্ঞান সিং বলছিলেন।
advertisement
জ্ঞান সিং আরও বলেছিলেন যে, বনবিভাগ মানুষখেকো চিতাবাঘটিকে ধরার জন্য বনকর্মীদের একটি দলকে নির্দেশ দিয়েছে এবং তারা ভয়ঙ্কর একটি অভিযানও শুরু করে দিয়েছে। সিং বলেছিলেন, লোকেদেরকে গৃহপালিত পশু নিয়ে আসার জন্য জঙ্গলে একা যেতে বারণ করা হয়েছে৷ মাঠে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোনে বা রেডিওতে জোরে গান বাজিয়ে দলে দলে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া অন্ধকারে বাইরে না যাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে৷ মানুষখেকো চিতা ধরতে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ১০৭টি খাঁচা বসানো হয়েছে। তবে গ্রামবাসীর ওপর চিতা বাঘের হামলা এখনও চলছে৷ বিরাম নেই তাতে।
advertisement
চিতাবাঘের আক্রমণে বিজনোরের চাঁদপুর তহসিলে ২৯ আগস্ট রাতে একজন ৩০ বছর বয়সী কৃষক মারা গিয়েছেন৷ সেটাই চিতাবাঘের আক্রমণের সিরিজের সর্বশেষ ঘটনা।
স্থানীয়রা জানায়, ব্রিজপাল সাইনি নামে ওই কৃষক তার গবাদি পশু চড়াতে মাঠে গেলে হামলার ঘটনা ঘটে। “পরিবারের সদস্যরা ব্রিজপালের চিৎকার শুনে মাঠে ছুটে গেলে রক্তের ছাপ দেখতে পান। প্রায় এক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর গ্রামবাসীরা মাঠে পড়ে থাকা কৃষকের মৃতদেহ দেখতে পান,” বলেন তারা।
ইউপি বন বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ডঃ অরুণ কুমারও চিতাবাঘ আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। তিনি সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেন এবং স্থানীয় কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করেন। তিনিই ঘনঘন চিতাবাঘ দেখা যায় এমন এলাকায় খাঁচা এবং ক্যামেরা ফাঁদ স্থাপনের নির্দেশ দেন এবং রাতের বেলা নিরাপত্তার উন্নতির জন্য ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহকে অগ্রাধিকার দেন।
এ পর্যন্ত প্রায় ৬৫টি চিতাবাঘকে ধরে ফেলেছে বন বিভাগ। ১০ সেপ্টেম্বর নাগিনা তহসিলের হুর নাগলা গ্রামে ধরা পড়ে সর্বশেষটি। “আমরা নাগিনা তহসিলের হুর নাগলা গ্রামের কাছে একটি মাঠে খাঁচাটি রেখেছিলাম। পরদিন সকালে গ্রামবাসীরা মাঠে গেলে খাঁচায় একটি স্ত্রী চিতাকে দেখতে পাওয়া যায় খাঁচায়। তারাই বনবিভাগকে খবর দিয়েছিলেন৷” জানিয়েছেন বনবিভাগের এই কর্তা। তিনি আরও বলেন, ওই দিনই তারা আরেকটি চিতাবাঘের খবর পান যেটি দুর্ঘটনাবশত শুকনো কূপে আটকা পড়েছিল। সেটিকে উদ্ধার করে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়৷
গত ১৯ দিনে, এলাকায় ১১ তম চিতাবাঘ ধরা পড়েছে। পরিসংখ্যান বলে, গত ১৮ মাসে প্রায় ৬৭টি চিতাবাঘ ধরা পড়েছে। দুর্ঘটনা সহ বিভিন্ন ঘটনায় ৩৫ জন নিহত হয়েছে। এরপরও চিতাবাঘের সংখ্যা এই অঞ্চলে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এটাই এই অঞ্চলে সমস্যার কারণ হয়ে উঠেছে৷ সিং জানিয়েছেন, অঞ্চলে চিতাবাঘের সংখ্যা এখন প্রায় ৫০০-এর কাছাকাছি পৌঁচেছে৷
সম্প্রতি, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঙ্কিত আগরওয়ালের সভাপতিত্বে ক্রমবর্ধমান চিতাবাঘের হুমকির বিষয়ে ডাকা একটি বৈঠক চলাকালীন, বিজনোরের সামাজিক বনায়নের বিভাগীয় পরিচালক, চিতাবাঘের কারণে ক্রমবর্ধমান মানব-বন্যপ্রাণী সংঘাত মোকাবেলায় আরও ১০০ টি খাঁচা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
গ্রামবাসীরা অবশ্য চিতাবাঘের হাত থেকে বাঁচতে নিজেরাও প্রস্তুতি নিয়েছেন। লোহার রড ছাড়াও স্পেশাল অস্ত্র ব্যবহার করছে তারা৷ যা মূলত চিতাবাঘকে ভয় দেখানোর জন্য৷ এতেও কি আদৌ সমস্যার সমাধান হবে? সাম্প্রতিক পরিস্থিতি অবশ্য সেই আশা দেখাচ্ছে না৷
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
Uttarpradesh Leopard Attack : নেকড়ে, বাঁদরের পর এবার উত্তর প্রদেশে মানুষখেকোর উৎপাত, ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীর
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement