#নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) পেগাসাস মামলা (Pegasus) গৃহীত হল। তবে শুনানি পিছিয়ে গেল। পরবর্তী শুনানি হবে মঙ্গলবার, জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত বিষয়টির গুরুত্ব স্বীকার করেই বলেছে, অভিযোগ অন্তত গুরুতর, সত্য সামনে আসবেই। আমরা যদিও জানি না সত্যাসত্য ঠিক কী, তবে অভিযোগ সত্যি হল নয় অপরাধীর নামও সামনে আসবে। শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে নয় জন মামলাকারীর আইনজীবীকেই সরাসরি সরকারের কাছে পিটিশন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আজ প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবল সাংবাদিক এন রামের পক্ষে সওয়াল শুরু করেছেন। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমন মামলাকারী এমএল শর্মাকে বলেন, "আপনি প্রথম মামলা করেছেন। কিন্তু, প্রবীণ আইনজীবী হিসেবে সিবলকে প্রথম সুযোগ দেওয়া হোক।" সুপ্রিম কোর্টে পেগাসাস মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনের পর্যবেক্ষণ, "অভিযোগ অত্যন্ত মারাত্মক। কিন্তু, শুধুমাত্র সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে মামলা হয়না। কোথাও কোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে কী? যাঁদের নাম উঠে আসছে তাঁরা অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাবান মানুষ।ঠ বিচারপতি এনভি রমনের কথায়, এই মামলার নথিতে কোনও তথ্য নেই তা বলা যাবে না। কিন্তু আরও অনেক তথ্যের প্রয়োজন।
এদিন আইনজীবী কপিল সিবল আদালতকে বলেন, "শুধুমাত্র একটি ফোনের মাধ্যমে যে কোনও মানুষের ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।" তাঁর কথায়, "এটি ব্যক্তি সুরক্ষার পাশাপাশি জাতীয় সুরক্ষার বিষয়। তাই গোটা বিষয়ে আদালতের নজরদারিতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক।"
কপিল সিবল আদালতে আরও জানান, সংসদে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির প্রশ্নের উত্তরে সরকার জানিয়েছে, ভারতে ১২১ জনের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছিল। কিন্তু আরও তথ্য জানতে হলে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া উচিত।
প্রধান বিচারপতি পাল্টা জানতে চান, দু'বছর পরে হঠাৎ এই মামলা কেন? সিবল বলেন, "দু'বছর আগে ঘটনার সূত্রপাত হলেও সম্প্রতি সিটিজেন ল্যাব নামক একটি সংস্থা এখন এই তথ্য সামনে এনেছে যে, সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি, রেজিষ্ট্রার, রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী, সংবাদকর্মী-সহ বহু মানুষের ফোনে আড়িপাতা হয়েছে।"
সিবল বিষয়টির গভীরে ঢোকেন। তিনি বলতে থাকেন, "পেগাসাস স্পাইওয়্যারকে কাজে লাগিয়ে মোবাইলের ক্যামেরা ও মাইক অন করে যে কোনও মানুষের গতিবিধির ওপর নজরদারি চালানো যায়।"
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, "আমরা মানছি যে বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, একমাত্র এডিটর'স গিল্ড ছাড়া অন্য কারও আবেদনপত্রে তেমন তথ্য প্রমাণ নেই। তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার মতো কোনও তথ্য আদালতের কাছে এখনও নেই।"
আইনজীবী কপিল সিবল পাল্টা বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালতে হোয়াটসঅ্যাপ এবং এনএসও-র মধ্যে মামলা চলছে। সেই মামলা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে পেগাসাস এর মাধ্যমে টেলিফোনে আড়ি পাতে। এখন প্রশ্ন ভারতীয়দের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছে কিনা? তা তদন্তের বিষয়।
বিষয়টি শুনে সিবলকে প্রধান বিচারপতি বলেন, "আমার মনে হয় না ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতেও এমন কোনও তথ্য উঠে এসেছে, যাতে বলা যায় যে ভারতীয়দের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছে।" প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, "আপনারা যদি এতটাই নিশ্চিত যে, আপনাদের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছে তাহলে অপরাধীক অভিযোগ দায়ের করেননি কেন?"
এর পরেই বিষয়টি আজকের জন্য মুলতুবি করে মঙ্গলবারের জন্য শুনানির তারিখ ধার্য হয়। উল্লেখ্য এই ঘটনাপ্রবাহে নজর রাখছে গোটা দেশ। রাজনৈতিক নেতা থেকে আইনজীবী, বিখ্যাত সাংবাদিক- বহু নাম রয়েছে পেগাসাসের তালিকায়। বিরোধীরা জানতে চায়, এই আড়িপাতায় সরকার প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত কিনা। কারণ সরকার ছাড়া নৈতিক ভাবে কোনও পক্ষই এই হাতিয়ার ব্যবহার করতে পারে না। সরকারের ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার মূলত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমতিসাপেক্ষ। অপহরণ, জঙ্গিদের মনিটারিং-এই সব ক্ষেত্রেই এই স্পাইওয়ার ব্যাবহৃত হওয়ার কথা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Pegasus, Supreme Court