Goa: খাঁ খাঁ সমুদ্র সৈকত, পর্যটক শূণ্য গোয়া, কী এমন ঘটল সেখানে....কেন ফাঁকা হচ্ছে....পুরোটা জানলে চমকে উঠবেন
- Published by:Debolina Adhikari
- news18 bangla
Last Updated:
পর্যটন গোয়া অর্থনীতির মেরুদণ্ড হয়ে ওঠে। গোয়ার জিডিপির প্রায় ১৭ শতাংশ এই অংশ থেকে আসে। প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ এই পর্যটনকে কেন্দ্র করে তাঁদের রুটি রোজগার জোগাড় করে। তাই গোয়ার অর্থনীতির জন্য পর্যটন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গোয়া অন্যতম হানিমুন ডেস্টিনেশন হয়ে ওঠে৷
গোয়া: গোয়া বললেই বিস্তীর্ণ সমুদ্রসৈকতের কথা মাথায় আসে৷ দূর্দান্ত নাইটলাইফ থেকে সৈকতে পার্টি, উত্তাল সমুদ্র সৈকত গোয়াকে অনন্য করে তুলেছে৷ বন্ধুরা মিলে গোয়ায় যাওয়া, বন্ধুত্বের অন্যতম পরীক্ষা৷ রাত যত বাড়ে ভিড় বাড়ে গোয়ার সমুদ্র সৈকত৷ এ যেন, অন্য এক পৃথিবী৷ সমুদ্রের গমগমে আওয়াজ, লাইভ মিউজ়িকে যত রাত বাড়ে ততই প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে গোয়ার বিচ৷
কিন্তু বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে এই চেনা ছবির পরিবর্তন ঘটেছে৷ গোয়ার সমুদ্র সৈকত একেবারেই নাকি খালি৷ সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা যাচ্ছে ছুটির মরশুমেও গোয়ার বিস্তীর্ণ সৈকত প্রায় ফাঁকা হয়ে রয়েছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার এই ছবি কি সত্য। জানা যাচ্ছে ২০২২-এ 20190.93 মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক গোয়া পরিদর্শন করেছেন। ২০২৩ সালের মধ্যে এই সংখ্যাটি 0.4 মিলিয়নে নেমে এসেছিল। অর্থাৎ নম্বরের নিরিখে প্রায় ৬০ শতাংশের ঘটতি৷ আর এই সংখ্যা পর্যটন দফতরের।
advertisement
দেশীয় পর্যটকদের সংখ্যাটা কী রকম? তাদের সংখ্যাটা কমবেশি একই। তবে অনেকেই গোয়ার বদলে শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডের দেশের সমুদ্র সৈকতকেই বেছে নিচ্ছে। কিন্তু কেন এই প্রবণতা? জানার জন্য চলুন ফিরে যাই ১৯৭০-এর দশকে৷ তখন সবে গোয়ার পর্যটন যাত্রা শুরু হয়েছিল। রাজ্যটি হিপিদের জন্য স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়৷ এই প্রবাহ এক পাল্টা সংস্কৃতির ঢেউ নিয়ে এল। এই সংস্কৃতিই গোয়াকে নব প্রজন্মের পছন্দের পর্যটন ক্ষেত্রে পরিণত করল। গোয়ার বোহেমিয়ান চরিত্র তাকে ভারতের অন্যান্য সৈকত থেকে একেবারে আলাদা করে রেখেছে।
advertisement
advertisement
পরের দুই দশক আর একটি পরিবর্তন দেখেছে। গোয়া তার বোহেমিয়ান সংস্কৃতিকে প্রাধান্য চেয়েও মূল স্রোতে ফিরতে চাইছিল৷ ক্রমশ আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে পছন্দের হয়ে ওঠার জন্য বোহেমিয়ান প্রকৃতির সঙ্গে মূল ধারার সংস্কৃতিকে মেলাতে লাগল।
পরিকাঠামোগত নিজেকে ক্রমশ উন্নত হয়েছে গোয়া। ছোট-ছোট ক্যাম্পের পাশে বিলাসবহুল রিসর্টগুলো গড়ে উঠেছে। চার্টার ফ্লাইটগুলি করে ইউরোপীয়রা বিশেষ করে রাশিয়ান এবং ব্রিটেনের পর্যটকরা এখানে আসতে শুরু করে। বলিউড এই স্থানকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
advertisement
পর্যটন গোয়া অর্থনীতির মেরুদণ্ড হয়ে ওঠে। গোয়ার জিডিপির প্রায় ১৭ শতাংশ এই অংশ থেকে আসে। প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ এই পর্যটনকে কেন্দ্র করে তাঁদের রুটি রোজগার জোগাড় করে। তাই গোয়ার অর্থনীতির জন্য পর্যটন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গোয়া অন্যতম হানিমুন ডেস্টিনেশন হয়ে ওঠে৷
advertisement
কিন্তু সমস্যা হল ক্রমশ এই গ্রাফ নীচের দিকে যাচ্ছে৷ এর কারণ বেশ কিছু কারণ আছে৷ তার মধ্য অন্যতম হল উন্নয়ন৷ ক্রমশ অতি উন্নয়নের ফলে গোয়ার বোহেমিয়ান সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে৷ মনোরম সৈকতগুলিতে ভিড় ক্রমশ উপচে পড়ছিল৷ এর ফলে ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
দ্বিতীয় সমস্যা হল লাগামছাড়া খরচ বৃদ্ধি। গোয়া তার ক্রয়ক্ষমতার কারণে জনপ্রিয় ছিল। এখন আর সেই অবস্থা নেই। ফোর স্টার হোটেলের প্রতি রাতের খরচ শুরু হয় ৭০০০ টাকা থেকে। ভিয়েতনামে এই খরচ শুরু হয় ২০০০ টাকা থেকে৷ থাইল্যান্ডে, এই খরচ ৩০০০ থেকে শুরু৷ তাই স্বাভাবিক ভাবে পর্যটকরা গোয়ার থেকে ক্রমশ মুখ ফেরাচ্ছে৷
advertisement
আরও একটা সমস্যা হল পরিবহনের সমস্যা৷ গোয়ায় ট্যাক্সি মাফিয়া বেশ পরিচিত শব্দ। তাঁরা রাজ্যে ক্যাব নিয়ন্ত্রণ করে, অত্যধিক ফি নেয়। এই ভাড়া অতিরিক্ত মনে হলেও পর্যটকদের কাছে আর কোনও বিকল্প নেই৷ কারণ উবার এবং ওলার মতো অ্যাপ ভিত্তিক ক্যাব রাজ্যে চলতে পারে না। এই সব কিছুর প্রভাব ক্রমশ পড়ছে পর্যটনে। হোটেল অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানা গিয়েছে, পিক পিরিয়ডের সময় প্রায় ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ বুকিং কমে যায়।
advertisement
গোয়ার বোহেমিয়ান প্রকৃতিকে ফিরিয়ে না আনলে, বা সমস্যার দিকে নজর না দিলে প্রাণবন্ত বিস্তীর্ণ সৈকতে ক্রমশ নির্জনতায় ডুবে যাবে
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
January 15, 2025 7:55 PM IST