#নয়া দিল্লি: চারতলার বাড়ির একতলায় ছিল কাপড়ের দোকান৷ আর তিনতলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন সৈয়দ সলমানি৷ সেদিন সন্তানরা বাড়িতে ছিল৷ খাবার ফুরিয়ে গিয়েছিল বলে বেরিয়েছিলেন দুধ আনতে৷ কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পরেই সন্তানেরা ফোন করে বলে, অনেক লোক চিৎকার করতে করতে তেড়ে আসছে৷ ভয়ে তাঁরা ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে৷ সন্তানদের দু’জনের বয়স ১৫ থেকে ২০ মধ্যে৷ তাঁদের মধ্যে আবার দু’জন মেয়ে৷ বাড়িতে বৃদ্ধা মা-ও রয়েছেন৷
দ্রুত বাড়ি ফিরে এসে সৈয়দ দেখেন, একতলার কাপড়ের দোকানে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে উন্মত্ত জনতা৷ এদিকে ভিতর থেকে বাচ্চারা চিৎকার করছে, ‘বাবা, ভিতরে এসো, বাঁচাও আমাদের৷’ তখন একতলা থেকে উঠে দোতলা, তিনতলায় তাণ্ডব চালাচ্ছে গুণ্ডারা৷ ভিতরে যেতে পারেননি সৈয়দ, কারণ ঢুকতে গেলে ওখানেই তাঁকে পিটিয়ে মারত ওই গুণ্ডারা৷ তাই ভিতর থেকে আগুনের লেলিহান শিখাকে অস্বীকার করে বাচ্চাদের একে একে বাইরে বের করে আনেন বৃদ্ধা মা৷ যার বয়স ৮৫৷ কিন্তু সবাইকে রক্ষা করলেও শেষ পর্যন্ত নিজেকে আর আগুনের কবল থেকে বাঁচাতে পারেননি আকবরি৷ জলন্ত বাড়ির ভিতরেই আটকে পড়েন৷ সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়৷ দমকল এসেও তাঁকে উদ্ধার করতে পারেনি৷ পুড়ে ছাই হয়ে যায় তাঁর দেহ৷ বাড়ির আগুন প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে জ্বলেছিল৷ ততক্ষণ আর সমস্ত কিছুর সঙ্গে পুড়েছে আকবরির দেহও৷
ঘটনার পর সৈয়দ জানিয়েছেন, ‘আমি জানি মা চিৎকার করে করছিল, বাঁচাও৷ কিন্তু কেউ তাঁকে সাহায্য করতে গেল না৷ দম আটকে, আগুনে পুড়ে মরতে হল তাঁকে৷ আমি সবাইকে আবেদন করছি, এই হিন্দু মুসলমানের লড়াইয়ের মাঝে পড়বেন না৷ আমি অনেক হিন্দু কর্মীর সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করি৷ আমাদের মধ্যে কোনও অশান্তি নেই৷’
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Citizenship Amendment Act, Delhi riots, Delhi Violence, Exodus