পুজোর সময় অতি উৎসাহী মানুষের বেপরোয়া মনোভাবের জেরে, আবার ঊর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফ। রাজ্যে বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাভাবিকভাবে কোভিডের তৃতীয় ধাক্কার আশঙ্কা জোরদার হচ্ছে। এই অবস্থায় এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। পশ্চিম বর্ধমান জেলা জুড়ে কড়া নাইট কারফিউ বলবৎ করা হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে প্রচার চালানো হচ্ছে নাইট কারফিউয়ের জন্য।
কোভিডের দ্বিতীয় থাকার পর থেকেই নাইট কারফিউ চালু রয়েছে। রাজ্য সরকার আরোপিত বেশ কিছু বিধিনিষেধ এখনও পর্যন্ত লাগু রয়েছে। তবে উৎসবের মরশুমে দুর্গাপুজোর সময় কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছিল রাত্রিকালীন বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে। তবে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এই অবস্থায় সতর্ক হয়েছে প্রশাসন। আগে থেকেই মানুষের বেপরোয়া মনোভাবে ব্যারিকেড করে দিতে চাইছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
শক্ত হতে নাইট কারফিউ বলবৎ করতে রাস্তায় নেমেছেন পুলিশের বিভিন্ন আধিকারিকরা। আসানসোল, দুর্গাপুর- সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় নাইট কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, রাত্রিকালীন বিধিনিষেধ এই মুহূর্তে সবাইকে মানতে হবে। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে, কঠোর মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছেন পুলিশকর্তারা। মূলত সংক্রমণ রুখতে আপাতত নাইট কারফিউ জোরদার করা হচ্ছে। তবে আপৎকালীন সমস্ত চলাচলের ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে ছাড়।
উল্লেখ্য, জেলায় পজিটিভিটির গত জুলাই মাসে যেখানে ০. ৮২ শতাংশ, আগস্ট মাসে ০.৬৫ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বর মাসে ০.৯০ শতাংশ ছিল। এখন তা ২.৫৩ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। জেলায় আগে যেখানে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার মানুষের পরীক্ষা হচ্ছিল চলতি মাসে তা কমে ৭০০ নেমে আসে। এই সংখ্যাটা জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর অবিলম্বে বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
এই বিষয়ে সতর্ক হয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, ডাঃ শেখ মহঃ ইউনুস, জেলার অন্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেছেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকেও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে। পুজোর ছুটির কারণে করোনার নমুনা পরীক্ষার হার অনেকটাই কমে গিয়েছিল। জেলা প্রশাসনের নির্দেশ আবার, গড়ে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার মানুষের নমুনা পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি, ভ্যাকসিন দেওয়ার সংখ্যা বাড়াতে বলা হয়েছে। পুরএলাকাগুলিতে ভ্যাকসিন দেওয়ার সংখ্যা যাতে আরও বাড়ানো যায়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে কোভিড বিধি যাতে সব জায়গায় মেনে চলা হয়, সেদিকে নজর দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, রবিবার রাত পর্যন্ত নতুন করে সাত জন আক্রান্ত হয়েছেন জেলায়।
তবে এখনও পর্যন্ত জেলায় কোন কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়নি। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না যায়, তার জন্য নাইট কারফিউ সহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মানুষকে অনুরোধ করেছেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তারা। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে কড়া পদক্ষেপ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Night curfew, Third Wave