ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তে, গরু পাচার করার অভিযোগ উঠেছে অনেকবারই। বহুবার সীমান্তরক্ষী বাহিনী পাচার হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে গরুগুলিকে। তবে দীর্ঘদিন পাচারকারীদের দখলে থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় গরুগুলির স্বাস্থ্য। দীর্ঘদিন খেতে না পেয়ে ভেঙে পড়ে চেহারা। অপেক্ষাকৃত কম বয়সের গরুগুলির ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয় বেশি। শরীরের রক্তের মাত্রা কমে যাচ্ছে অনেক। ঠিকমত খেতে না পেয়ে সঙ্গীন অবস্থা হয় গরুগুলির (cow trafficking) । উদ্ধার হওয়া এমনই গরগুলির সেবা-শুশ্রূষা হচ্ছে আসানসোলের একটি গোশালায়। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে উদ্ধার হওয়া গরুগুলিকে, এখানে সেবা-শুশ্রূষা দিয়ে সুস্থ করার কাজ চলছে।
আসানসোলের এই গোশালায় পাচার (cow trafficking) হওয়ার পথে উদ্ধার হয় গরুগুলিকে পাঠানো হয়। বিহারের কিশানগঞ্জ সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া গরুগুলির স্থান হয় আসানসোলের গোশালায়। বিহার, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সীমান্তে উদ্ধার হওয়া গরুগুলিকে এখানে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য। বর্তমানে বিভিন্ন সীমান্ত থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৬০০ টি গরু-বাছুর রয়েছে আসানসোলে। সেখানে চিকিৎসা চলছে গরুগুলির। তবে বহু গরুর শারীরিক অবস্থা সঙ্গীন। তাদের রীতিমত চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার কাজ চলছে। দেওয়া হচ্ছে খাবার। তবে এক - একটি গরু সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হতে দুই মাসেরও বেশি সময় নিচ্ছে।
গোশালার কেয়ারটেকার পিন্টু কুমার জানিয়েছেন, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নির্দেশ অনুযায়ী তিনি গরুগুলির দেখাশোনা করছেন। গরুগুলির অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে গরুগুলিকে সুস্থ করে তোলার কাজ চলছে। বিভিন্ন রকম খাবার দিয়ে তাদের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তবে চোরাচালানকারীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের খেতে দেয়নি। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেছেন, পাচার হওয়ার আগে গরুগুলিকে দীর্ঘদিন খেতে দেওয়া হচ্ছে না। যাতে দ্রুত তাদের স্বাস্থ্য অবনতি হয় এবং তাদের হত্যা করা সহজ হয়। তাই সীমান্তরক্ষী বাহিনী গর গুলিকে উদ্ধার করে, এখানে পাঠানোর পরেই শুরু হয়ে যায় চিকিৎসা। দেওয়া হয় খাবার। বর্তমানে এখানে ৬০০ টি পূর্ণবয়স্ক গরুর সঙ্গে, ১৭ টি কমবয়স্ক গরু রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫ টির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের রক্তের লেভেল উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ব্যারাকপুর থেকে এই গোশালা পরিদর্শনে এসেছিলেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক আধিকারিক। গরুদের ঠিকঠাক যত্ন নেওয়া হচ্ছে কিনা, তা দেখতেই পরিদর্শনে এসেছিলেন তিনি। পরিদর্শনের পরে তিনি জানান, গরুদের ঠিকঠাক যত্ন নেওয়া হচ্ছে। তাদের সুস্থ করে তুলতে সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। গোশালার কেয়ারটেকার এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা সযত্নে এই কাজ করেছেন।
অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্মী জানিয়েছেন, এখানে সেবা-শুশ্রূষা চলছে গরুগুলির। প্রয়োজনীয় খাবার দেওয়া হচ্ছে। সেই খাবার দিতে প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তবে তারা খরচের দিকে মাথা না ঘামিয়ে, গরুগুলিকে কিভাবে সুস্থ করে তোলা যায়, সেদিকে বেশি নজর দিচ্ছেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Cow trafficking