Subrata Mukherjee: গঙ্গাসাগর মেলার আমূল পরিবর্তন করেছিলেন প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় !
- Published by:Piya Banerjee
Last Updated:
Subrata Mukherjee: এবছর চেনা মুখটির আর দেখা মিলবে না, মানতে পারছেন না গঙ্গাসাগরের ব্যবসায়ী থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা
#দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আর কয়েক মাস পরই মকর সংক্রান্তিতে সেজে উঠবে গঙ্গাসাগর (gangasagar)। কিন্তু এ বছর আর দেখা যাবে না গঙ্গাসাগর মেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা, চেনা মুখটি (Subrata Mukherjee)। সদাহাস্য মুখটির সাথে ফ্যাসফ্যাসে গলায় কথাগুলো তাই এখনো বাজছে গঙ্গাসাগর এলাকার দোকানদার থেকে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষদের মনে।
গত দশ বছর ধরে গঙ্গাসাগর মেলার পরিচালনার দায়িত্বে থাকতে দেখা গিয়েছে সদ্য প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় কে(Subrata Mukherjee)। প্রত্যেক বছর জানুয়ারি মাসে মেলা শুরুর আগের দিন থেকে গঙ্গাসাগরে চলে আসতেন তিনি। গঙ্গাসাগর মেলায় আমূল পরিবর্তন ঘটেছে তাঁরই হাত ধরে।
মেলার চারটে দিন সুব্রতবাবু উঠতেন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের আবাসন ঊর্মিমুখরে। সেখানেই সুব্রতবাবুর(Subrata Mukherjee) সঙ্গে দেখা করতে আসতেন গঙ্গাসাগরবাসি থেকে দলের নেতাকর্মীরা। মেলা প্রাঙ্গণে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ের মধ্যে বসেই, সেখানকার বহু মানুষের সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যেত মন্ত্রীকে।
advertisement
advertisement
এমনকি গঙ্গাসাগরের সৌন্দর্যায়ন ও উন্নয়ন নিয়েও এলাকার বিধায়ক বঙ্কিম চন্দ্র হাজরার সঙ্গে বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা করতেন তৃণমূল সরকারের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়(Subrata Mukherjee)। পরে কলকাতায় ফিরে গিয়ে সেই পরিকল্পনার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাতেও ভুলতেন না তিনি। রাজনৈতিক গুরুর চোখ দিয়ে দেখা গঙ্গাসাগরের বিভিন্ন উন্নয়ন ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প ধাপে ধাপে শেষও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রত্যেক বছর আসা যাওয়ার সুবাদে, সুব্রতবাবুও ঠিক যেন গঙ্গাসাগরের ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছিলেন।
advertisement
মেলার কদিন রোজ সন্ধ্যা নাগাদ অন্যান্য মন্ত্রী ও বিধায়কদের নিয়ে সমুদ্রতটে মেলা অফিসে পৌঁছে যেতেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়(Subrata Mukherjee)। মেলা অফিসে বসেই সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কাজটাও করতেন তিনিই। আবাসন থেকে মেলা অফিসে যাবার পথে মেলা প্রাঙ্গণের একটি চায়ের দোকানে বসে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়াটা যেন রেয়াজ করে নিয়েছিলেন এই হেভিওয়েট মন্ত্রী।
advertisement
কপিল মুনির মন্দিরের আশেপাশে ভিড় জমানো সাধুসন্তদের আখড়াই প্রত্যেক বছর নিয়ম করে যেতেন তিনি। সকলের সুবিধা অসুবিধার কথা শুনে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতেন আধিকারিকদের।
গঙ্গাসাগরের ঘরের ছেলে হয়ে ওঠা সুব্রতবাবু মকর সংক্রান্তির পূন্য লগ্নে পুণ্যার্থীদের ভিড়ের মধ্যেই সমুদ্রে নেমে পুণ্য স্নান করতেন, প্রত্যেক বছর। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ঊর্মিমুখর আবাসনের পাশে একটি অস্থায়ী চায়ের দোকান বিজুরাম দাসের। গঙ্গাসাগর মেলায় থাকার কদিন রোজ প্রাতঃভ্রমণ সেরে বিজুরামের দোকানেই চা খেতে আসতেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
advertisement
এদিন বিজুরাম জানান, 'চা খাওয়ানোর পর টাকা নিতে না চাইলে, মিষ্টি হেসে রোজই সুব্রতবাবু (Subrata Mukherjee)ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলতেন, আরে বোকা চা বিক্রি করার জন্যই তো দোকান খুলেছো। টাকা না নিলে লাভ হবে কি করে! তাঁর মিষ্টি হাসিটা যেন চোখের সামনে ভাসছে। আর কথাগুলো কানের মধ্যে বাজছে। এবছর তিনি আসবেন না মেলায়, সেটা বিশ্বাসই হচ্ছে না।'
advertisement
সুব্রত মুখোপাধ্যায়(Subrata Mukherjee) কে ছাড়াই এবছর গঙ্গাসাগর মেলার পরিকল্পনা সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হলে, সাগরের বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা ভারাক্রান্ত মনে জানান,'১৯৭২ সালে সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর হাত ধরে কলেজ রাজনীতিতে যোগ দিই। দীর্ঘদিন ওনার সঙ্গে একান্তে কাটিয়েছি।
সাগরদ্বীপের উন্নয়ন ও গঙ্গাসাগরের সৌন্দর্যায়নের অগ্রগতি নিয়ে সুব্রত বাবুর সঙ্গে প্রচুর স্মৃতিবিজড়িত ঘটনা সাক্ষী আমি। রাতের অন্ধকারে ঘুরে দেখতাম পুণ্যার্থীদের জন্য তৈরী সেড গুলি। কপিলমুনির মন্দিরের পাশে সাধুসন্তদের জন্য আজ যে কংক্রিটের সেড তৈরি করা হয়েছে, তার সবটাই সুব্রত বাবুর জন্য। সুব্রত(Subrata Mukherjee) বাবুই হাতে ধরে গঙ্গাসাগর মেলার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। সুব্রতবাবুর অনুপস্থিতে গঙ্গাসাগর মেলা পরিচালনা হবে, এটা আমি ভাবতেই পারছি না।'
advertisement
গঙ্গাসাগরের স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বরা জানান, এবছর গঙ্গাসাগর মেলায় সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর স্মৃতিতে কোন বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া যায় কিনা সে বিষয়েও ভাবনা চিন্তা চলছে।
রুদ্র নারায়ন রায়
view commentsLocation :
First Published :
November 10, 2021 2:34 PM IST