তমলুক: সংসার চলছে রূপনারায়ন নদের জলে গলদা চিংড়ির মিন ধরে। করোনা ভাইরাসের অতিমারী বহু মানুষকে কর্মহীন করে দিয়েছে। কাজ হারিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষজন। অনেকেই বিকল্প পেশার খোঁজ করেছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রূপনারায়ন তীরবর্তী এলাকার মানুষজন এই করোনা অতিমারীর কালে রোজগারের পন্থা খুঁজে নিয়েছে নদীর জলেই। নদীতে ভাটার সময় গলদা চিংড়ির মীন ধরে সংসার চালাচ্ছে মানুষজন।
রূপনারায়ণ নদের তীরবর্তী তমলুকের বাসিন্দা রাজু বাণিজ্য নগরী মুম্বইয়ে ফুলের কাজ করত। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কাজ হারিয়ে বাড়িতে। দুই ছেলেমেয়ে স্ত্রীও বিধবা মাকে নিয়ে সংসার বছর তিরিশের রাজুর। করোনা ভাইরাস আসার আগে সবকিছু ঠিক ছিল। মুম্বইয়ে ফুলের কাজ থেকে ভালো টাকা আয় হতো। কিন্তু করোনার জন্য সব বন্ধ। বাধ্য হয়েই সংসার চালাতে নদীতে নেমেছে গলদা চিংড়ির মীন ধরতে রাজুর মতো অনেকেই।
বাংলা নদীমাতৃক। প্রবল বর্ষায় নদী বাঁধ ভেঙে গিয়ে বন্যা ডেকে আনে। কিন্তু নদী সব সময় সর্বগ্রাসী নয়। নদী তীরবর্তী অঞ্চলে মানুষজনকে সন্তানের মত লালন পালন করে। তাই প্রাচীনকাল থেকেই মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছে নদীকেন্দ্রিক। এই করোনা অতিমারি এসে পূর্ব মেদিনীপুরের রূপনারায়ণ তীরবর্তী মানুষের কাছে সংসার চালাতে নদী প্রধান আশ্রয় হয়ে উঠেছে। গলদা চিংড়ির মীন ধরে সংসার চালাচ্ছে কোলাঘাট তমলুক ও মহিষাদল ব্লকের নদী তীরবর্তী বসবাসকারী অনেক মানুষ।
বছরের শেষের দিক চৈত্র মাস থেকে বছরের শুরুর দিক আষাঢ় মাস পর্যন্ত গলদা চিংড়ির মীন ধরা হয়। নদীতে ভাটার সময় একটি বিশেষ প্রকার জাল নিয়ে চিংড়ির মীন ধরা হয়। ভাটার সময় তিন থেকে চার ঘণ্টা জাল ঠেলে ঠেলে মাছ ধরে রাজুর মত আরো অনেকেই। গলদা চিংড়ির মীন নদীর ধারেই পাইকারি ৫০ পয়সা থেকে এক টাকা পিস দরে বিক্রি হয়। এক একজনের গলদা চিংড়ির মীন ধরে গড়ে তিনশো থেকে চারশো টাকা আয় হয়। তাই বছরের এই সময়টা বাড়ির পুরুষ থেকে মেয়ে মানুষ সবাই গলদা চিংড়ির মীন ধরার কাজ করে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Rupnarayan river