শীতকালে কি আপনি একটু বেশি ঘুমাচ্ছেন? কেন তা জেনে নিন...
- Published by:Brototi Nandy
Last Updated:
শীতের ঋতু এলেই আমাদের কেমন ঘুম ঘুম পায় এবং আলস্য অনুভব হয়। কারণ শীতকাল আমাদের ঘুমকে প্রভাবিত করে। effects of winter on our sleeping habits
#নয়াদিল্লি: গ্রীষ্মকালে গরমের গলদঘর্ম অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে শীতের অপেক্ষায় থাকে। এই শীতঋতু আমাদের গরমের আদ্রতা থেকে অবকাশ দিলেও আমাদের শরীরে ঘুমের প্রবণতা অনেক বাড়িয়ে দেয়। তাপমাত্রা অত্যন্ত কমে যাওয়ার জন্য বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে হয় না এবং স্বাভাবিকের চেয়ে ঘুম অনেক বেশি হয়। বিশেষজ্ঞের মতে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে আমাদের ঘুমের অভ্যেসরও পরিবর্তন হয়।
হায়দ্রাবাদের যশোদা হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডঃ বিশ্বেশ্বরন বালাসুব্রমানিয়ান, ইন্টারভেনশনাল পালমোনোলজি অ্যান্ড স্লিপ মেডিসিন, বলেছেন “মানুষের ঘুমের আচরণ আমাদের ইন্টারনাল টাইমকিপিং সেল সার্কাডিয়ান প্রক্রিয়া দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই 'ক্লক সেলগুলি 'জিটজেবারস' বা 'টাইম ক্লুস' অর্থাৎ আলো এবং পরিবেষ্টিত তাপমাত্রার মাধ্যমে পরিবেশের সঙ্গে সিঙ্ক্রোনাইজ করে এবং পরিবেশে অপ্টিমাইজ করার জন্য অন্যান্য সার্কাডিয়ান প্রতিক্রিয়াগুলির সঙ্গে সমন্বয় স্থাপন করে। "
advertisement
আমরা দেখে থাকি ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রার পরিবর্তন হয়ে থাকে। একইভাবে ঘুমের ধরণ এবং সময়কেও প্রভাবিত করে।
advertisement
ফরিদাবাদে অমৃতা হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের প্রধান,ডক্টর বিকাশ গৌর এই ব্যাপারে একই মতবাদ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে ঋতু অনুসারে মানুষের ঘুমের অভ্যাস পরিবর্তিত হয় কারণ আলো এবং অন্ধকার মানুষের ঘুমের সাইকেলকে নিয়ন্ত্রণ করা ক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।
advertisement
তিনি আরও বলেন "আলোর এক্সপোজার মস্তিষ্কের মূল অংশগুলিকে উদ্দীপিত করে যা মেলাটোনিন হরমোন এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী। আমাদের শরীর স্বাভাবিকভাবেই ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন তৈরি করে। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটির মাত্রা বৃদ্ধি পায় যা আমাদের শরীরে এটি ঘুমানোর সময় এই সংকেত দেয়। সকালে, মেলাটোনিনের মাত্রা কমে গেলে তা জেগে ওঠার সংকেত দেয়। "
advertisement
গ্রীষ্মকালে যেমন দিনের সময় দীর্ঘ হয় , শীতকাল এর ঠিক বিপরীত , রাতের সময় লম্বা হয়। “ফলস্বরূপ, সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময়ের পরিবর্তন হলে তা শরীরে মেলাটোনিনের মাত্রাকে প্রভাবিত করে এবং সঙ্গে সময়কেও যখন রাতে আমাদের ঘুমের অনুভূতি জাগে। ,” ডাঃ গৌর বলেছিলেন।
তবে এটা ভাবা ঠিক না যে শুধুমাত্র আলো এবং অন্ধকারই শীতের সময় আপনার বেশি ঘুমাবার কারণ। “শীতের সময় তাপমাত্রা কমে গেলে তা আপনাকে বেশি ঘুমাতে উৎসাহিত করে ,কিন্তু গ্রীষ্মকালে তার ঠিক উল্টো , গ্রীষ্মের প্রখর তাপমাত্রা আপনার ঘুমকে দুরূহ করে তোলে। এছাড়াও গবেষণায় জানা গেছে আমাদের মস্তিষ্ক গ্রীষ্মে বেশি এবং শীতকালে কম সক্রিয় হয় যা ঘুমকেও প্রভাবিত করে। "
advertisement
মনস্থলির সিনিয়র সাইকিয়াট্রিস্ট এবং প্রতিষ্ঠাতা, ডাঃ জ্যোতি কাপুর বলেছেন "ঘুমের নর্মাল রেঞ্জ প্রতি রাতে অন্ততপক্ষে ১.৭৫ থেকে ২.৫ ঘন্টা অবধি বাড়তে পারে ।"
ডাঃ গৌরের মতে প্রকৃত ঘুমের সময় কমে না বা বাড়ে না কিন্তু শীতের মাসগুলিতে দিনগুলি ছোট হয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের আরও ঘুমের প্রয়োজন অনুভব হয় । "শীতকালে সারাদিন বিছানায় থাকলে তা আমাদের শরীরের সার্কাডিয়ান রিদিম এবং মেলাটোনিন সেক্রিশনকে প্রভাবিত করতে পারে ।"
advertisement
বিশেষজ্ঞরা বলছেন শীতের মরসুমে ঠিকমতো ঘুম না হলে তা আপনার সুস্থতাকে প্রভাবিত করতে পারে। বালাসুব্রমানিয়ান জানিয়েছেন ঘুমের সময়ের তারতম্য আমাদের কর্মক্ষেত্রে কার্যকলাপের উপর সামান্য প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে স্কুলের শিশুদের মধ্যে এর বেশি প্রভাব দেখা যায় কারণ সকাল উঠে স্কুল যাওয়ার সময় তারা অলস বোধ করতে পারে।
এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক আমাদের এইক্ষেত্রে কি করা উচিত -
advertisement
এই মরসুমে আপনার ঘুমের সাইকেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে, এই টিপসগুলি অনুসরণ করুন:
দিনের বেলা রোদের হালকা এক্সপোজার পেতে চেষ্টা করুন।
রাতের শোওয়ার আগে অন্তত ১০ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম আপনাকে ভাল ঘুম পেতে সাহায্য করতে পারে।
দিনের বেলা না ঘুমানোরই চেষ্টা করুন।
শোবার ঘরের তাপমাত্রা যেন স্বাভাবিক হয় , না খুব গরম বা না খুব ঠান্ডা ।
শীতের ঠান্ডা প্রকোপ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
শীতকালে অতিরিক্ত খাওয়াদাওয়া এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে রাতের দিকে।
প্রয়োজন হলে অবশ্যই প্রফেশনালের সাহায্য নিন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
Location :
First Published :
December 29, 2022 11:43 PM IST