Fathers day 2020| এ এক অন্য বাবার গল্প ! কান্না মোছাবার শক্ত দু'টি হাত !

Last Updated:

সব জেনেও এই বাচ্চাটিকেই বুকে টেনে নিয়েছিলেন সেদিনের সন্তানহীন এক বাবা।

#কলকাতা: মেয়েটার তখন বছর পাঁচেক বয়স! হঠাৎ করেই তাঁর বাস্তব জীবনটা অন্ধকার হতে শুরু করে। জন্ম দেওয়া বাবা-মা কালের নিয়মে হারিয়ে যায়। মেয়েটির জায়গা হওয়ার কথা ছিল অনাথ আশ্রম। সারা শরীরে তখন অনেক ক্ষত। যা তাঁকে এই ছোট্ট বয়সেই উপহার দিয়েছিল সমাজ। এমন ঘটনা আমাদের দেশে নতুন নয়। চাইল্ড অ্যাবিউস বা ধর্ষণ তো প্রায়ই ঘটে থাকে। তার কটা ঘটনাই বা আমরা জানতে পারি ! যেকটা ঘটনা সামনে আসে, তাঁর বেশির ভাগটাই চাপা পড়ে যায়। অনেক বাবা মা ভয় পায় বাচ্চার ভবিষ্যৎ নিয়ে। তারা নিজেরাই সব রকম তদন্ত থেকে পিছিয়ে আসেন। অনেকে দেশ ছাড়েন। কেউ ভেবে দেখেন না ওই বাচ্চাটির মানসিক অবস্থার কথা। ভাবলেও কিছু করার থাকে না অনেকক্ষেত্রেই। তবে এই মেয়েটির ক্ষেত্রে, বাবা মাও হারিয়ে গিয়েছিলেন। হয়তো মারা গিয়েছিলেন। ছোট মেয়েটি জানতো না কিছুই। শুধু বুঝতো তার শরীরে বেশ কিছু ক্ষত। অচেনা যন্ত্রণা। আর মন জুড়ে অন্ধকার। খুব চাইতো, একবার তার বাবা বা মা এসে তাকে জড়িয়ে ধরুক। না তেমনটা হয়নি। তার জায়গা হয়েছিল অনাথ আশ্রম।
এরপরের ভবিষ্যৎ তার জানা ছিল না। বাবা তার জীবনে আসবে কিনা সে জানতো না। অনাথ আশ্রম থেকে প্রায় দিনই বাচ্চা দত্তক নিতে আসতেন দম্পতিরা। তবে তাঁকে কেউ নিতে চাইতো না। কারণ, তার অতীত। কেউ ভাবতে চাইতো না, ওই ছোট্ট বয়সে তার শরীর যে ছিঁড়ে খেয়েছে, সে আসলে নরখাদক। বাচ্চাটি যে নির্দোষ। না, এ বিচার তখন কেউ করেনি। দত্তক নিতে আসা দম্পতিরাও মিষ্টি বাচ্চাটিকে পছন্দ করেনি। অনেক বাচ্চাকে দেখতো সে বাবার কোলে ছুটে যাচ্ছে। তার স্মৃতিতেও নিজের বাবার মুখটা ফিরে ফিরে আসতো। কান্না পেত। তখনই একদিন মিরাকেল হয়। ফ্রক পরা, গায়ে ধুলো মাখা বাচ্চাটার নরম হাতে এসে ছোঁয়া লাগে এক বাবার হাত। মুখের দিকে না তাকিয়েই হাতটাকে জাপটে ধরে বাচ্চাটা। তারপর পা দু'টো জড়িয়ে ধরে। এক ঝটকায় বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিয়ে আদরে ভরিয়ে দেন দত্তক নিতে আসা এক অচেনা বাবা। মাথায় সোনার কাঠি ছুঁয়ে বলেন, 'দেখ পৃথিবী তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।" সব জেনেও এই বাচ্চাটিকেই বুকে টেনে নিয়েছিলেন সেদিনের সন্তানহীন এক বাবা।
advertisement
তারপর কি বাবাকে কোনও যুদ্ধ করতে হয়নি ? হয়েছে ! পরিবারের লোক বলেছে, "এ সন্তান ফিরিয়ে দিয়ে আসতে।" মা কাছে টেনে নিতে গিয়েও নিতে পারেননি। বুকে আগলে রেখেছিলেন সেদিনের সেই অচেনা বাবা। মেয়ের জন্য একাই লড়ে নিয়েছিলেন গোটা পৃথিবীর সঙ্গে। বাচ্চাটিকে তখন থেকেই লড়াই শব্দটার সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন। সততা চিনিয়েছিলেন। বুঝিয়েছিলেন, শরীর নশ্বর। তা দিয়ে মানুষের বিচার হয় না। ভুলে যেতে শিখিয়েছিলেন জীবনের তুচ্ছ কষ্ট। ধীরে ধীরে বাচ্চাটির মানসিক ভিত শক্ত করেছিলেন, একা হাতে সেই বাবা।
advertisement
advertisement
ভাবছেন, এ ঘটনা নেহাতই আজগুবি ! না, আজগুবি নয় ! আশেপাশে একটু চোখ ঘোরালেই এমন ঘটনা হামেশাই দেখতে পাবেন। আমরা দেখতে চাই না, সে কথা আলাদা। কেউ ঝুঁকি নিতে চাই না। পৃথিবীতে সব বাবারাই চান নিজের সন্তান হোক। কিন্তু সবার ভাগ্য তেমন হয় না। আর সেই জন্যই দত্তক নেওয়া বাবারা অন্য বাবাদের থেকে একটু বেশিই শক্তিমান। তাঁদের মনের জোর আর পাঁচটা সাধারণ বাবার থেকে অনেকটাই বেশি। নিজের ঔরসজাত সন্তান না হওয়া সত্ত্বেও, এই বাবারা পারেন সবটা উজার করে দিতে। যে ছেলেটা, বা মেয়েটা দত্তক সন্তান হয়, তারা না বুঝেই এই বাবাদের চোখের মণি হয়। তবে বাবা তো বাবাই হন। সে দত্তক হোক বা নিজের। সন্তান যে আজও তার বাবা ছাড়া কাউকে হিরো ভাবতে পারে না। বাবা আছে মানেই মাথার ওপর ছাদ আছে। কান্না মোছাবার শক্ত দুটো হাত আছে।
advertisement
Fathers day-তে এই বাবাদের ভুললে চলবে না। সব টুকু ভালবাসা তাঁদেরকে দিতে হবে। আজ ওই ছোট্ট মেয়েটা বা তার মতো হাজার একটা সন্তান বড় হয়েছে। যারা বাবা বলতে শুধু তাকেই বোঝে। বোঝে না দত্তক শব্দের মানে ! শুধু জানে সেদিন এই বাবা হাতটা না ধরলে, সে হয়তো হারিয়ে যেত কালের নিয়মে। অন্ধকার কখনও তার পিছু ছাড়তো না। তাই বাবা মানেই একটা অন্য পৃথিবী। বাবা মানেই এক সমুদ্র ভালবাসা।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
Fathers day 2020| এ এক অন্য বাবার গল্প ! কান্না মোছাবার শক্ত দু'টি হাত !
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement