বার বার কানে বাজছে একই সুর, রহস্যময় এই অনুভূতির পিছনে কি আদৌ কোনও বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে?
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
Science Behind Repeating Same Song: সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত আমাদের জীবনের প্রতিটি পদে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে থাকে গান এবং সুর ৷
#কলকাতা: আনন্দ থেকে দুঃখ- জীবনের সব ক্ষেত্রেই সঙ্গ দেয় গান। এমনকী, একাকীত্ব কাটাতেও সঙ্গী হয় সেই গানই। আসলে সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত আমাদের জীবনের প্রতিটি পদে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে থাকে গান এবং সুর (Science Behind Repeating Same Song)!
অনেক সময় আবার দেখা যায়, সকালে ঘুম থেকে উঠে কোনও গান শুনলে সেই গানের কলিই দিনভর মাথায়-মনে ঘুরে বেড়াতে থাকে। এটা আমরা সকলেই লক্ষ্য করে থাকি। কিন্তু বিশেষ পাত্তা দিই না। কখনও কি মনে প্রশ্ন জাগে, এর পিছনে কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও থাকতে পারে?
এর জবাবে বলা যায় যে, এর পিছনে অবশ্যই বৈজ্ঞানিক কারণ তো রয়েছেই। আসলে এই বিষয়টা নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে গিয়েছেন বিজ্ঞানী ও গবেষকরা। তাঁদের দাবি, এর পিছনে কান বা শ্রবণেন্দ্রিয়ের কোনও ভূমিকা নেই। এর জন্য দায়ী আমাদের মস্তিষ্কই। আর সেটাই হল কানের কীট বা ইয়ারওয়ার্মস (Earworms)। নাম শুনে মনে হতে পারে, এটা কোনও পোকা বা পতঙ্গ অথবা ভাইরাস। কিন্তু ব্যাপারটা আদতে তা নয়! এটা আসলে এক ধরনের অনুভূতি বা সেন্স (Sense)! একে আবার সাধারণ ভাষায় মস্তিষ্কের চুলকানিও বলা হয়ে থাকে। এই বিষয়টা ঠিক কীরকম? সেটাই বিশদে আলোচনা করে নেওয়া যাক।
advertisement
advertisement
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র অনুযায়ী, কোনও আলাদা ধরনের গানের সুর অথবা গানের কলি মনে রাখাটা সবথেকে সহজ। ডার্টমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই বিষয়ের উপর গবেষণা চালিয়েছেন। আর এই পরীক্ষা চালাতে গিয়ে তাঁরা একটিই গান বেশ কিছু মানুষকে শুনিয়েছেন। এমন একটি গান বাছা হয়েছিল, যা মানুষ আগেও শুনেছে। এর পর এই পরীক্ষা চলাকালীন আচমকাই গান বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর দেখা যায়, এতে শ্রোতাদের অডিটরি কর্টেক্সের অংশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। আর এই কারণেই মানুষের মাথায় ওই গানের কলি ঘুরতে থাকে এবং তারা ওই গান সারা দিন ধরে গুনগুন করে গাইতে থাকে। আর সেই গান যদি সুরেলা হয়, তাহলে তো কথাই নেই! ওই সুর যেন মস্তিষ্ককে অধিকার করে নেয় বা মনে গেঁথে যায়! আর এই অনুভূতিটাকে মস্তিষ্কের চুলকানির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কারণ একই সুর বারবার করে গাওয়া হলে তা আরও বাড়তে থাকে।
advertisement
কিন্তু এই অনুভূতি থেকে নিস্তার পাওয়ার উপায় কী? সহজ ভাবে সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে, অডিটরি কর্টেক্স আমাদের মস্তিষ্কেরই একটা অংশ। আর এটি এমন একটা অংশ, যা এক ভাবে শুনলেও পুরোপুরি আলাদা উপায়ে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে! ইউনিভার্সিটি অফ সিনসিনাটি কলেজ অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মার্কেটিংয়ের অধ্যাপক জেমস কেলারিসের দাবি, প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষ কোনও না-কোনও সময়ে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন। আর গবেষকদের মতে, এই অনুভূতি থেকে নিস্তার পাওয়ার কোনও উপায়ই নেই। আসলে কিছু কিছু গান রয়েছে, যা শোনার পর সেই সুর মন থেকে মুছে ফেলা যায় না। বরং সেটা মনে গেঁথে যায়। তবে সেই সুর বা গান মন থেকে মুছতে হলে অন্য সুর অথবা গানে মনোনিবেশ করতে হবে। তাতে অবশ্য আগের সুর বা গানের কলি মন থেকে মুছে যাবে। কিন্তু নতুন শোনা গানের কলি বা সুর আবার মনকে অধিকার করে মস্তিষ্কে জাঁকিয়ে বসবে!
Location :
First Published :
April 18, 2022 1:09 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
বার বার কানে বাজছে একই সুর, রহস্যময় এই অনুভূতির পিছনে কি আদৌ কোনও বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে?