#NetraSuraksha: আপনার কি ডায়াবেটিস আছে ? তাহলে চোখের এই সমস্যাগুলি সম্পর্কে জানুন

Last Updated:

যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে চোখের এই সমস্যাগুলি সম্পর্কে আপনার জেনে রাখা দরকার।

NetraSuraksha সেল্ফ চেক করিয়ে নিন এখানে
যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে নিঃসন্দেহে আপনার বেশ বড় একটি মেন্টাল চেকলিস্ট রয়েছে: নির্দিষ্ট সময়ে ব্লাড সুগার লেভেল চেক করতে হবে, প্রত্যেক বার খাবার খাওয়ার সময়ে কার্বের হিসেব রাখতে হবে, সময়মতো ওষুধ খেতে হবে, গ্লুকোজ মনিটেরের স্ট্রিপ ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই এনে রাখতে হবে, ব্লাড প্রেশার মাপতে হবে... ইত্যাদি ইত্যাদি। এত কিছু মাথায় রাখতে গেলে বেশ কিছু জিনিসের কথা আর মনে থাকে না, বিশেষ করে যে জিনিসগুলি নিয়মিত চেক করার দরকার হয় না, যেমন- ডায়াবেটিস সংক্রান্ত নানা জটিলতা। অথচএগুলির জেরে চোখের সমস্যা এবং দৃষ্টিশক্তি হারানোর মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। অথবা, ডায়াবেটিস সম্পর্কিত অন্যান্য জটিলতা যা প্রাকৃতিক নিয়মে অনিবার্য। এই ধরনের লক্ষণগুলি যখন শরীরে অল্প অল্প প্রকাশ পায়তখন অধিকাংশ মানুষই প্রথমে সেগুলি অবহেলা করেন, তারপরে যখন ভীষণ অসুবিধা হতে শুরু করে, তখন তাঁরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন... কিন্তু তত ক্ষণে অনেকটাই ক্ষতি হয়ে যায়!
advertisement
আমরা আপনার মানসিক বোঝা বাড়াতে চাই না। কিন্তু আপনাকে কিছু জিনিস জানাতে চাই। তাই চিন্তা করবেন না। এই প্রতিবেদনটি পড়ার পরে আপনাকে শুধুমাত্র একটাই কাজ করতে হবে- প্রতি বছর একবার করে চোখের পরীক্ষা করানোর জন্য আপনার ফোনের ক্যালেন্ডারে একটি দিন ধার্য করতে হবে (পরীক্ষাটি করাতে চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে, চশমার দোকানে গেলে হবে না!) এবং সেটি মেনে চলতে হবে। এর জন্য আপনাকে কোনও জটিল নির্দেশ মেনে চলতে হবে না, নিজে ডাক্তারি করারও দরকার নেই এবং উপসর্গ নিয়ে বেশি চিন্তাকরারও প্রয়োজন নেই।
advertisement
advertisement
নীচের তালিকা দেখে ভয় লাগতেই পারে, কিন্তু ভীত হওয়ার প্রয়োজন নেই। ডায়াবেটিসের কারণে চোখে নানা রকম জটিলতা হতে পারে, কিন্তু সেগুলি সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে তাদের চিকিৎসাও করা যায়। এই রোগগুলির মধ্যে অধিকাংশই প্রতিরোধযোগ্য কিন্তু অধিকাংশ ডায়াবেটিক রোগীই বিষয়গুলি জানেন না। সঠিক তথ্য জানানোর মাধ্যমেআমরা এই সমস্যারসমাধান করতে চাই।
advertisement
Novartis –এর সাথে হাত মিলিয়ে Network18 চালু করেছে 'Netra Suraksha' - India Against Diabetes initiative নামের একটি উদ্যোগ, যার উদ্দেশ্য হল চিকিৎসা জগৎ, নীতি নির্ধারক এবং বিদ্বজ্জনদের মধ্যে থেকে কয়েক জন প্রতিনিধি বেছে নিয়ে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির মতো সমস্যার মোকাবিলা করা। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হল ডায়াবেটিস রোগের কারণে হওয়া চোখের এক প্রকার জটিলতা, সারা বিশ্বে কর্মক্ষম জনসংখ্যার মধ্যে অন্ধত্বের সমস্যার অন্যতম কারণ হল এই রোগ। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হল একাধিক গোলটেবিল বৈঠকের সম্প্রচার, ব্যাখ্যামূলক ভিডিও এবং তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতাবৃদ্ধি করা, যাতে সকলে নিজেদের এবং পরিবারের সকলের স্বাস্থ্য ও দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কে আরও বেশি যত্নশীল হতে পারেন।
advertisement
এই বিষয়টি বোঝার আগে জেনে নিন, চোখ কীভাবে দেখার কাজ করে থাকে।
চোখের বাইরের অংশ একটি কঠিন বহিঃপর্দা দ্বারা আবৃত। সামনের দিকে থাকা যে পরিষ্কার, বাঁকানো মতো অংশ-কে আমরা চোখ বলে থাকি, তার নাম হল কর্নিয়া। এর কাজ হল আলোর দিকে ফোকাস করা, তার পাশাপাশি চোখকে রক্ষা করা1।
আলো কর্নিয়ার মধ্যে প্রবেশ করার পরে, অ্যান্টেরিয়ার চেম্বার নামক একটি স্থানে পৌঁছায় (এই জায়গাটি অ্যাকুয়াস হিউমার নামক এক প্রকার সুরক্ষামূলক তরল পদার্থে পূর্ণ থাকে), তারপরে প্রবেশ করে পিউপিল-এ (এটি হল চোখের আইরিশ অংশে অবস্থিত সূক্ষ্ম ছিদ্র, চোখের বাইরে দৃশ্যমান রঙিন অংশ), এবং তারপরে একটি লেন্সের মধ্যে প্রবেশ করে। এই অংশটি প্রধানত ফোকাস করার কাজে সাহায্য করে। এরপরে, আলো পৌঁছে যায় চোখের একদম মধ্যভাগে অবস্থিত আরও একটি তরল-পূর্ণ অংশে (এটি হল ভিট্রিয়াস) এবং সেখান থেকে পৌঁছায় চোখের পিছনের অংশে, যার নাম হল রেটিনা1।
advertisement
চোখ যে জিনিসের উপরে ফোকাস করে রয়েছে রেটিনা তা রেকর্ড করে এবং সেই ছবিগুলিকে ইলেকট্রিকাল সিগন্যালে রূপান্তরিত করে। আমাদের মস্তিষ্ক এই সিগন্যাল গ্রহণ করে এবং সেটি ডিকোড করে। রেটিনার একাংশ সমস্ত সূক্ষ্ম বিবরণ দেখার জন্য বিশেষ ভাবে কর্মক্ষম। ম্যাকুলা নামের অতি ক্ষুদ্র অংশ এই অতি-নিখুঁত দৃষ্টি তৈরি করে। রেটিনার মধ্যে এবং পিছনের অংশে থাকা রক্তজালিকাগুলি ম্যাকুলা-কে সুস্থ রাখে1।
advertisement
এবার দেখে নেওয়া যাক, ডায়াবেটিস কী কী উপায়ে চোখের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
গ্লুকোমা
গ্লুকোমা হল চোখের একগুচ্ছ রোগের সমষ্টি, যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অপ্টিক নার্ভ – এই নার্ভ বা স্নায়ুগুলি চোখকে মস্তিষ্কের সাথে সংযুক্ত করে। ডায়াবেটিসের কারণে গ্লুকোমার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়ে যায়, দ্রুত চিকিৎসা শুরু না হলে এই রোগের কারণে দৃষ্টিশক্তি হারানো এবং অন্ধত্বের মতো সমস্যা হতে পারে2।
চোখের উপরে প্রেশার বেড়ে যাওয়ার কারণে গ্লুকোমা হয়। প্রেশার বেড়ে গেলে রেটিনা এবং অপ্টিক নার্ভে রক্ত সরবরাহকারী রক্তজালিকাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রেটিনা এবং নার্ভের ক্ষতি হওয়ার ফলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণহতে শুরু করে।
ছানি
আমাদের চোখের মধ্যে থাকা লেন্সগুলি অত্যন্ত স্বচ্ছ, যা আমাদের বিভিন্ন সূক্ষ্ম জিনিস দেখতে সাহায্য করে- কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই অংশটি ক্রমশ অস্বচ্ছ হতে থাকে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে যাওয়ার এই সমস্যা- যাকে ছানি পড়া বলা হয়, এতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা 2- 5 গুণ বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস না থাকলে যে বয়সে চোখে ছানি পড়ার সমস্যা হয়, ডায়াবেটিস থাকলে তার চেয়ে অনেক কম বয়সে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে – এমনকী, ডায়াবেটিস না থাকা ব্যক্তিদের তুলনায় ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি 15-25 বেড়ে যায়4। গবেষকরা মনে করেন, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি থাকার কারণে লেন্সের স্বচ্ছ অংশে কিছু অধঃক্ষেপ জমা হতে থাকে। কম বয়সী ডায়াবেটিস রোগীদের চোখেও ছানি পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং তা দ্রুত গুরুতর রূপ নিতে পারে5।
রেটিনোপ্যাথি
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হল ডায়াবেটিসের কারণে রেটিনায় যত ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, সেগুলি নির্দেশকারী একটি সাধারণ নাম। প্রধানত দুই প্রকার রেটিনোপ্যাথি হতে পারে: নন-প্রলিফারেটিভ এবং প্রলিফারেটিভ। নন-প্রলিফারেটিভ রেটিনোপ্যাথি হল সবচেয়ে পরিচিত রেটিনোপ্যাথি, এই ক্ষেত্রে আই বেলুনের পিছনের অংশে থাকা ক্যাপিলিয়ারিগুলি পাউচের মতো অংশ তৈরিকরে। কতগুলি রক্তজালিকা ব্লক হয়ে গিয়েছে, তার উপরে নির্ভর করে নন-প্রলিফারেটিভ রেটিনোপ্যাথির তিনটি স্টেজ হতে পারে (মাইল্ড, মডারেট এবং সিভিয়ার)। প্রলিফারেটিভ রেটিনোপ্যাথির ক্ষেত্রে রক্তজালিকা এতটাই বেশি পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে ব্লক হয়ে যায়। ফলস্বরূপ, রেটিনা অংশে নতুন রক্তজালিকা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এই নতুন রক্তজালিকাগুলি অত্যন্ত দুর্বল হয় এবং এর মধ্যে থেকে রক্ত বেরোতে পারে, যা দৃষ্টিশক্তি ব্যাহত করে। নতুন রক্তজালিকাগুলির কারণে স্কার টিস্যু বৃদ্ধি পেতে পারে। এই স্কার টিস্যুগুলি সংকুচিত হওয়ার পরে, রেটিনা বিকৃত হয়ে যেতে পারে বা স্থানচ্যুত হতে পারে, এই অবস্থাকে বলা হয় রেটিনা ডিটাচমেন্ট6।
ম্যাকুলার এডিমা হল আর এক ধরনের রোগ যাকে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি নামক রোগসমষ্টির অন্যতম বলেই মনে করা হয়। আমরা জানি যে, প্রতিদিনের নিয়মিত কিছু কাজ যেমন কোনও কিছু পড়া, গাড়ি চালানো এবং কাউকে দেখতে পাওয়া ইত্যাদি কাজ করে থাকে রেটিনার মধ্যে থাকা ম্যাকুলা নামক অংশটি। ডায়াবেটিসের ফলে এই ম্যাকুলা ফুলে যেতে পারে, এই রোগকে বলা হয় ডায়াবেটিক ম্যাকুলার এডিমা। সময়ের সাথে সাথে, এই রোগের ফলে চোখের এই অংশের সূক্ষ্ম বস্তু দেখার ক্ষমতা চলে যেতে পারে, যার ফলে রোগী দৃষ্টিশক্তি হারাতে বা অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। ম্যাকুলার এডিমা সাধারণত সেই সমস্ত রোগীদের মধ্যে দেখা যায় যাঁরা ইতিমধ্যে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির অন্যান্য উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছেন2।
রেটিনোপ্যাথির মতো সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার এবং এই রোগের জটিল আকার ধারণ করার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়, যদি6:
● আপনি দীর্ঘ সময় ধরে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
● আপনি রক্তের সুগার (গ্লুকোজ) –এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন।
● আপনার ধূমপান করার অভ্যাস থাকে বা হাই ব্লাড প্রেশার বা হাই কোলেস্টেরলের মতো সমস্যা থাকে।
কিন্তু আবারও মনে করিয়ে দিই, এগুলি এড়ানোর জন্য আপনাকে শুধুমা্র বছরে একবার চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে চোখের পরীক্ষা করাতে হবে- এটি একটি রুটিন এবং সম্পূর্ণ যন্ত্রণাবিহীন পরীক্ষা। এই একটি মাত্র পদক্ষেপ আপনাকে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির হাত থেকে রক্ষা করতে এবং আপনার দৃষ্টিশক্তি বাঁচাতে পারে। এইশুভকাজ শুরু করার একটি দারুণ উপায় হল – অনলাইনে আমাদের Diabetic Retinopathy Self Check Up এর সুবিধা গ্রহণ করুন এবং আপনার কোনও রকম ঝুঁকি আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখুন। তারপরে, News18.com-এ গিয়ে Netra Suraksha initiative পেজটি পড়ে নিন, এখানে আপনি সব কিছু (গোলটেবিল বৈঠক, ব্যাখ্যামূলক ভিডিও এবং প্রতিবেদন) পেয়ে যাবেন। আপনার স্বাস্থ্যের বিষয়ে তৎপর হয়ে উঠুন। ডায়াবেটিসের চিকিৎসার পাশাপাশি এই ছোটখাট বিষয়গুলির দিকেও নজর দিন। আর দেরী করবেন না। আজই ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি প্রতিরোধ করার এবং দৃষ্টিশক্তি বাঁচানোর জন্য প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
References:
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
#NetraSuraksha: আপনার কি ডায়াবেটিস আছে ? তাহলে চোখের এই সমস্যাগুলি সম্পর্কে জানুন
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
  • ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে !

  • দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে

  • কলকাতা-সহ বাকি অংশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে রবিবার পর্যন্ত

VIEW MORE
advertisement
advertisement