মোদির ‘৪০ জন বিধায়ক’ নিয়ে দাবি, পাল্টা কমিশনে নালিশ তৃণমূলের- আসল সত্যিটা কী?

Last Updated:
#কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ পর্যায় শেষ ৷ এর মাঝেই তৃণমূল নেত্রীর ডেরায় দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদির হুঙ্কার, ভাঙতে চলেছে তৃণমূল ৷ শাসকদলের ভাঙনের বার্তা দিয়ে মোদির দাবি, দিদির দলের ৪০ জন বিধায়ক অচিরেই যোগ দিতে চলেছে পদ্মশিবিরে ৷ লোকসভা ভোটের মাঝে স্বয়ং মোদির এমন দাবিতে বৈশাখের তাপমাত্রাকেও হার মানাতে চলেছে রাজনীতির পারদ ৷ বিজেপির স্থানীয় নেতাদের মুখে এতদিন যেসব দাবি শোনা যেত তাতে এখন প্রধানমন্ত্রীর শিলমোহর ৷
তৃণমূলের গড়ে এসে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘দিদি, আপনার পায়ের তলার জমি সরে গেছে। ২৩ তারিখ যখন চারিদিকে কমল ফুটবে তখন দিদি আপনার বিধায়করাও আপনাকে ছেড়ে চলে যাবেন। এখনই আপনার চল্লিশ জন বিধায়ক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন’৷ খোদ মোদির বক্তব্যে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে জোড়াফুলের অন্দরে ৷ দলীয় নেতৃত্বের দাবি, ভোটের মরসুমে দলের ঐক্য ভাঙতেই এমন জল্পনা ছড়াচ্ছেন মোদি ৷ অন্যদিকে, এমন বক্তব্যের বিরোধীতা করতে পাল্টা ‘সাংসদ কেনা-বেচার’ অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷
advertisement
তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইটে লিখেছেন,‘আপনার শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ নিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছি।’ তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এখানে প্রচারে এসেছেন না ঘোড়া কেনাবেচা করতে এসেছেন? একজন প্রধানমন্ত্রীর মুখে এধরনের কথা মানায় না। মোদী নিজের দল কর্মী না পেয়ে এখন অন্য দল থেকে কর্মীদের ভাঙানোর ধান্দায় রয়েছেন। তৃণমূলের কোনও বিধায়ক ওই দলে যাবেন না। উনি সত্যিই এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী।’ মোদির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জনসভা থেকে স্বয়ং তৃণমূলনেত্রীর কটাক্ষ, ‘একজন প্রধানমন্ত্রী সাংসদ কেনাবেচায় নেমেছে ৷ পারলে একটা নিয়ে দেখাও ৷ এই হর্স ট্রেডিং-এর জন্য ওনার ভোটে লড়ার অধিকার বাতিল করা উচিত ৷ গুরুত্বপূর্ণ আইন ভেঙেছেন উনি ৷ আগে ওনার কেটলি ছিল এখন জেটলি আছে ৷’
advertisement
advertisement
নির্বাচনে হারার পর দলে দলে তৃণমূল সাংসদরা যোগ দেবেন বিজেপিতে ৷ এমন দাবি এই প্রথম নয়, মোদির আগেও শোনা গিয়েছে মুকুল রায়ের মুখে ৷ সেবার তিনি বলেছিলেন, ‘তৃণমূলের তাবড় তাবড় নেতারা আমাদের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ৷ ফল বেরলেই দল পাল্টাবেন ১১০ থেকে ১২০ জন বিধায়ক ৷ ২৩ মে পর যে যে বিধানসভা লিড পাবে বিধায়ক রা ইস্তফা দিয়ে দেবেন, নভেম্বরেই রাজ্যে বিজেপি সরকার ৷’ মোদির মুখে শোনা গেল একই কথা ৷ তবে সংখ্যা কমে মোটে ৪০ ৷ রাজ্য বিজেপির নেতার বদলে খোদ পদ্মশিবিরের পোস্টার বয়ের মুখে এমন দাবি, হতবাক গোটা রাজনৈতিক মহল ৷ সবারই প্রশ্ন তাহলে সত্যিটা কি? সত্যিই কি রাজ্যে হতে চলেছে এত বড় রঙ বদল ৷
advertisement
মোদির দাবির পিছনে কতটা সত্যি রয়েছে, তা নিয়ে এখনও সন্দেহের অবকাশ থাকলেও এ দাবি যে জোড়াফুল শিবিরে কিঞ্চিৎ হলেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তাতে সন্দেহ নেই ৷ যদিও একের পর এক প্রথম সারির তৃণমূল নেতারা মোদির এই দাবিকে ভ্রান্ত বলেছেন ৷ ডেরেক ও’ব্রায়েনের প্রতিক্রিয়া, ‘মোদি মিথ্যেবাদী’ ৷ শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি মোদির দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘উনি বরাবরই সব বিষয়ে গল্প ফাঁদেন ৷ এবার দলবদল নিয়েও গল্প ফাঁদছেন ৷ মিথ্যে স্বপ্ন দেখছেন ৷’
advertisement
এতেই শেষ হচ্ছে না তর্ক ৷ প্রধানমন্ত্রীর এমন দাবি শুধু রাজ্য রাজনীতিতেই নয় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জাতীয় স্তরেও ৷ মোদির এমন উক্তির পর কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও ট্যুইটে তৃণমূলকে সমর্থন করে লেখেন ‘মোদীজির দাবি তৃণমূলের ৪০ জন বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। এটা কি ঘোড়া কেনাবেচা নয়? প্রকাশ্যে সাংসদ কেনাবেচার কথা বলে বিজেপি কি নিজের রাজনৈতিক আদর্শের অবক্ষয় করছে না?’
advertisement
তবে রাজ্যের বিরোধীদের গলায় অন্য সুর ৷ ২৩ মে-এর পর মোদির দাবি খানিক সত্যি হলেও হতে পারে বলে মনে করছেন বিরোধী নেতারা ৷ লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার জোড়াফুলের অবস্থান সম্পর্কে বলতে গিয়ে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক ও পলিটব্যুরোর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্য, ‘লোকসভায় বামেরা একটি বা দুটি আসন কম জিতলে বা নাও জিতলে চিরকাল বামফ্রন্টই থাকবেন ৷ লোকসভা ভোটের ফলাফল বামপন্থীদের বাম রাজনীতির আদর্শে কোনও প্রভাব পড়বে না ৷ কিন্তু ২৩ মে ফলাফল প্রকাশের পর যদি তৃণমূল পাঁচটা আসন কম জেতে, তাহলে পুরো দলের অর্ধেক বিজেপি হয়ে যাবে ৷’
advertisement
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক মহলের অন্দরে কান পাতলে তৃণমূলের ৪০ জন সাংসদের গোপনে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার দাবির কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যাচ্ছে না ৷ প্রসঙ্গত ভোটের আগে বহু হেভিওয়েটকে দল ভাঙিয়ে বিজেপিতে আনার হুঙ্কার বাস্তবে পূরণ হয়নি ৷ তবে ২৩ মে-এর পর দলীয় পালাবদলের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না ৷
এই নির্বাচনে বিজেপির ভোট শেয়ার আগের থেকে অনেকটাই বাড়বে বলে মত বিশেষজ্ঞদের ৷ বাড়তে পারে আগের থেকে বিজেপির আসনও ৷ কংগ্রেস ও সিপিএমের ভোটের অনেকটাই এবার নোটা ও বিজেপির ভোটের শেয়ার বাড়াবে বলে অভিমত অনেকেরই ৷ তবে দলবদলের সাম্প্রতিক ট্রেন্ড বলছে , লোকসভা ভোটে আসন কমলে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের একটি অংশ ২৩ মে লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর জোড়াফুল ছেড়ে পদ্মশিবিরে যোগ দিতেই পারেন ৷
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷  News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে  ক্লিক করুন এখানে ৷ 
view comments
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
মোদির ‘৪০ জন বিধায়ক’ নিয়ে দাবি, পাল্টা কমিশনে নালিশ তৃণমূলের- আসল সত্যিটা কী?
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement