#কলকাতা: বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি আজ একজন বিজেপি কর্মী। কিন্তু দিল্লিগামী বিমানে ওঠার আগে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আরও একবার বলে গেলেন, তাঁর মন জুড়ে আজও মমতাই। রাজীবের স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, আজ তিনি রাজনীতিতে যত বড়ই ব্যক্তিত্ব হোন না কেন, তাঁর পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান অনস্বীকার্য। স্বাভাবিক ভাবেই রাজীবের উবাচ, আজও তাঁকেই প্রণাম করছি।
শুক্রবার বিধানসভা ছেড়েছিলেন চোখের জলে। হাতে ধরা ছিল মমতার ছবি। রাজীবের সেই অভিব্যক্তি ভালোভাবে নেয়নি তৃণমূল। কেউ বলেছেন, নাটক করছেন, কেউ বলেছেন ফেরার পথ তৈরি রাখছেন। রাজীব কিন্তু এর প্রত্যুত্তরে গেলেন না। বললেন, "ফিরব কী ফিরব না পরের কথা। কিন্তু যতদিন ছিলাম তৃণমূলটা মন দিয়ে করেছি।"
স্বাভাবিক ভাবেই পাল্টা প্রশ্ন থাকল দল ছাড়ার কারণটা আসলে কী, দলনেত্রীর প্রতি এই অনুগত্য যদি থাকে, তবে কারা তাঁর প্রতিপক্ষ? রাজীব বলছিলেন, "ওঁরা আমাকে শ্মশানে সৎকার করে ছেড়ে দিল। দল ছাড়াটা আমার বাঁচার লড়াই।"
দীর্ঘদিন তৃণমূলের অন্দরে থেকে কাজ করেছেন। আজ নতুন পথের পথিক তিনি। এই গতায়ত বাংলার রাজনীতিতে স্বাভাবিক নয়। রাজীব কি অস্বস্তিতেই বারবার কাঁদছেন? প্রাক্তন বনমন্ত্রী কিছুই লুকোলেন না। বললেন, "হ্যাঁ অস্বস্তি হচ্ছে, এতবছর একটা দল করতাম, সেখান থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া প্রাথমিক ভাবে অস্বস্তিরই।"
পাশাপাশি রাজীব এটাও জানেন, আর কিছু করার নেই তাঁর। নির্দল থাকা যাবে না। তবে যাওযার আগে তাঁর একমাত্র পিছুটান। পাশাপাশি দায়বদ্ধতা আর পেশাদারিত্বের জায়গাটা মাথায় রেখেই রাজীব বলছিলেন, "অমিত শাহ আমাকে বিশেষ ভেবেছেন, এতে আমি সম্মানিত। আমি একা নই. যোগদানমেলায় বাড়তি চমকও থাকছে।" সূত্রের খবর যোগদানমেলায় জেপি নাড্ডা আসছেন। রাজীবই নিউজ১৮ বাংলাকে জানালেন, অমিত শাহও ভার্চুয়ালি থাকতে পারেন।"
কিন্তু নতুন পথে যাচ্ছেন, মুখে সেই খুশির রেশ নেই কেন! সদালাপী,শান্ত , সংবেদনশীল রাজীব মনে করিয়ে দিলেন, "খারাপ লাগা অনেক রয়েছে। বহু লোক অন্যায় কাজ করেছেন দিনের পর দিন কিন্তু আমি খারাপ হয়ে গেলাম।" বাংলা রাজনীতিতে খেউর সংস্কৃতি থেকে অবশ্য শত যোজন দূরেই থাকলেন রাজীব। আজও একটিও কুকথা বললেন না। বরং ম্লান হেসে বলে গেলেন, "দেখি না অন্যরকম কিছু করতে পারি কিনা।"