#কলকাতা:সি এ বি নিয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান সাংসদ এর, দু-ধরনের ব্যাখাতে বিভ্রান্তি মতুয়ারা। বিল পাশে বর্তমান সাংসদ এর জয় দেখছেন মতুয়ারা। এদেশে আসার পর থেকেই মতুয়াদের নাগরিকত্বের আন্দোলন এর শুরু।প্রমথ রঞ্জন ঠাকুর-বনগাঁর ঠাকুর নগরে এস্টেট তৈরী করে মতুয়া মতালম্বীদের গড় তৈরী করেন। লাখ লাখ উদ্বাস্তু দের মতই তারাও দেশের ও রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন।এদেশের নাগরিকত্ব আইনের গেরোতে সমস্যা পড়েন তারা। রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে প্রমথ রঞ্জন ঠাকুর বরাবর সেই লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যান। তার মৃত্যুর পর, তার স্ত্রী বীনাপানি ঠাকুর সেই নাগরিকত্বের লড়াইয়ে জারি রাখেন। মতুয়াদের বড়মা বীনাপানি ঠাকুর ২০১০ সালে কলকাতার মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায়ও বসেছিলেন মতুয়াদের সহজ ও নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এই লড়াইয়ে বরাবর সমর্থন জানিয়ে এসেছে।বহু মতুয়াদের কাছে মমতা ব্যানার্জীর দল কাছের দল হয়ে ওঠে।তারপরের টা ইতিহাস।বড়মার দুই ছেলে একজন মন্ত্রী অন্যজন সাংসদ হন।কিন্তু সাংসদ কপিল কৃষ্ণ ঠাকুরের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছা নিয়ে বিরোধ শুরু হয় ঠাকুরবাড়িতে। বড়মা কপিল কৃষ্ণ ঠকুরের স্ত্রী মমতা ঠাকুরের নাম সুপারিশ করেন তৃণমুল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জীর কাছে। জিতে যান তিনি। বিরোধ বাড়ে ঠাকুর বাড়িতে। একদিকে কপিল কৃষ্ণ ঠাকুরের পরিবার তো অন্যদিকে মঞ্জুল কৃষ্ণ ঠাকুরের পরিবার। মঞ্জুল রাজ্য মন্ত্রী সভা থেকে পদত্যাগ করেন। ছোট ছেলে শান্তনু ঠাকুর গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ এর পদ ছাড়েন। একপ্রকার শাসকদের প্রতি বিদ্রোহ করে মঞ্জল ঠাকুর বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুরকে জ্যাঠিমা মমতার বিরুদ্ধে দাঁড় করান।হেরে যায় সুব্রত। জয়ী হয় তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুর। লাগাতার তিনি ও বড়মার দেখানো পথে নাগরিকত্ব নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান।২০১৯ এর লোকসভায় বিজেপির টিকিটে লড়াইয়ে নামেন শান্তনু ঠাকুর। তার ভোটে দাঁড়ানোর আগে ঠাকুর নগরে মতুয়া সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সভায় তিনি মতুয়াদের নাগরিকত্ব এর সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এর পরেই শান্তনু ঠাকুর বিজেপির প্রার্থী হয়ে হারিয়ে দেন জ্যাঠিমা মমতা ঠাকুরকে।সোমবার রাতে নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন বিল পাশ হতে উচ্ছ্বাস শুরু হয় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। তবে মতুয়া মহা সংঘের সংঘাধিপতি মমতা ঠাকুর এদিন জানান পাশ হওয়া নতুন এই নাগরিকত্ব বিলকে পুরোপুরি সমর্থন করছেন না। তার অভিযোগ বড়মার আন্দোলন ছিল, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব পাওয়ার। আর এই বিলে আবেদন থেকে ৫ বছর এদেশে থাকার প্রমাণ চাওয়া হচ্ছে মতুয়াদের কাছ থেকে। তাতে কখনই বড়মার স্বপ্নপূরণ হচ্ছে না বলে মত মমতা ঠাকুরের। অন্য দিকে শান্তনু ঠাকুরের অনুগামীরা এই বিল কেন্দ্রকে দিয়ে পাশ করানোয় তাদের ঠাকুরের বড় জয় দেখছেন। আর তার জন্য শান্তনু ঠাকুর এলাকায় আশার আগেই শুরু হয়েছে বিল পাশ হওয়ার উৎসব। এই দিন ঠাকুরবাড়ি থেকে ডঙ্কা কাঁসি নিয়ে বিলের সমর্থনে মিছিল করে শান্তনু অনুগামীরা। তবে বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদের এই বিল নিয়ে ভিন্ন মতকে ততটা আমল না দিলেও মতুয়াদের একাংশ সংশয়ে রয়েছেন। মতুয়া ঝন্টু কীর্তনিয়া এদিন বলেন বিল যেটা পাশ হওয়ার তা হয়ে গেছে।তাই ঠাকুর বাড়ি দরকার এক হয়ে মতুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর।আবার গুরু দাস নামের আর এক মতয়ার দাবী, এদেশে আসার পর থেকেই তারা অবহেলিত ছিলেন।নতুন বিলে তাদের সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি হবে।এইদিন মিছিলটি সারা ঠাকুর নগর এলাকায় ঘোরে। আর ডঙ্কা কাঁসি, মতুয়া নিশানে মানুষের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মত।
Published by:Elina Datta
First published:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।