#কলকাতা: দল থেকে সাসপেন্ড হয়েই কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন দুই বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার (Jayprakash Mazumder) ও রীতেশ তিওয়ারি (Ritesh Tiwari)৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিওনেল মেসির সঙ্গে তুলনা টেনে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Mazumder) ও অমিতাভ চক্রবর্তীর (Amitava Chakraborty) রাজনৈতিক যোগ্যতা নিয়ে "কাটা ঘায়ে নূনের ছিঁটে" দিলেন জয়প্রকাশ।
গতকালই জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্ত করেছিল রাজ্য বিজেপি। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কার্যত 'জেহাদ' ঘোষণা করে পাল্টা আক্রমণে গেলেনম সদ্য সাসপেন্ড হওয়া দুই নেতা।
আরও পড়ুন: পদ্মভূষণ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করছেন, বিবৃতি দিয়ে জানালেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে, বিক্ষুব্ধদের মূল নিশানায় থাকা রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক সংগঠন অমিতাভ চক্রবর্তী ও রাজ্যের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যকে কাঠগড়ায় তুললেন তাঁরা৷ দুই বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতার সাফ কথা, একুশের বিধানসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক কৌশলের নামে তৃণমূল থেকে নেতা এনে তাঁদের টিকিট দিয়ে রাজ্য বিজেপি-কে হেয় করার পিছনে আসলে তৃণমূলকেই সুবিধা করে দিয়েছিলেন কৈলাশ, শিবপ্রকাশ, মেননের মতো কেন্দ্রীয় নেতারা।
ভোট বিপর্যয়ের পরেও অমিত মালব্য ও অমিতাভর মতো নেতারা সেই পথ থেকে সরেননি বলে অভিযোগ করেছেন জয়প্রকাশ ও রীতেশ। তাঁদের মতে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সাফল্য আসার পরেই তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে চক্রান্ত শুরু হয়েছিল। এখানেই থেমে না থেকে জয়প্রকাশ বলেছেন, ১৯ -এর লোকসভা ভোটে ১৮টি আসনে জেতার পর দলের সর্বভারতীয় সংগঠন সম্পাদক বৈঠকে সাফ বলেছিলেন, দিলীপ ঘোষ, সুব্রত চট্টোপাধ্যায়দের বাদ দিয়েই আমরা রাজ্যে ক্ষমতায় আসব। অথচ, দল ভোটে বিপর্যয়ের পর, আচমকাই দলের সবচেয়ে পরীক্ষিত, অভিজ্ঞ নেতা দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে, রাজনৈতিক ভাবে একজন অনভিজ্ঞকে আনা হল।
রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে ভাল ছেলে বলে চক্রান্তের বাইরে রাখলেও, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার নিরিখে সুকান্ত ও অমিতাভকে নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করে জয়প্রকাশ বলেন, 'দলের অভিজ্ঞ নেতাদের সুযোগ না দিয়ে তৎকাল তৃণমূলের নেতাদের জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সংগঠন যারা লড়াই করবেন মমতার বিরুদ্ধে, রাজনীতিতে তাঁদের অভিজ্ঞতা সাকুল্যে ৫ বছর।
আরও পড়ুন: পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যান করলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, ফিরল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতি
রাজ্য বিজেপি-র সাংগঠনিক রদবদল প্রসঙ্গে জয়প্রকাশ বলছেন, দলে নিজেদের চেয়ার সুরক্ষিত রাখতে কাজের লোকের চেয়ে কাছের লোককেই গুরুত্ব দিয়েছেন মালব্য ও অমিতাভরা। নতুন দায়িত্ব পাওয়া জেলার অধিকাংশ নেতাকে তাদের এলাকার বিজেপি কর্মীরাই চেনেন না বলেও দাবি করেছেন দুই নেতা।
রাজ্য নেতৃত্ব শো কজ সাসপেন্ড করে যেমন বিক্ষুব্ধ শিবিরকে কাৎ করতে চাইলে বিক্ষুব্ধরা পাল্টা সুর চড়িয়ে নিজেদের আসল বিজেপি বলে দাবি করে চ্যালেঞ্জ ছুড়়ছেন রাজ্যের বর্তমান ক্ষমতাসীন নেতৃত্বকে। ফলে, ওয়াকিবহল মহলের মতে, শীর্ষ নেতৃত্ব এখনই লাগাম না টানলে ভবিষ্যতে রাজ্য বিজেপি-তে আড়াআড়ি বিভাজনের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷
বিক্ষুব্ধদের পাশে দাঁড়িয়ে, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় বলেছেন, "তিরিশ বছরের বেশি সময় ধরে এই দলটা করছি। বিক্ষুব্ধদের সব অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়৷ রাজ্য বিজেপি-তে যে পচন ধরেছে সেটা পরীক্ষিত সত্য৷ সেই রোগকে নিরাময়ের জন্য প্রকৃত ওষুধ দিতে হবে। তা না করে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখলে প্রলয় থেমে থাকবে না। "
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।