#কলকাতা: নতুন বছরের শুরুতে হাইকোর্টের রায়ে বেশ খানিকটা স্বস্তিতে সিভিক পুলিশ ৷ চাকরির মেয়াদ আরও একমাস বাড়িয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ ১৫ জানুয়ারিতে শেষ হচ্ছে না সিভিক পুলিশের চাকরির মেয়াদ ৷ এর আগের শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ৩১ ডিসেম্বর নয়, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চাকরি করতে পারেন সিভিক ভলান্টিয়াররা ৷
আপাতত চাকরি যাচ্ছে না রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়ারদের। সিভিক পুলিশ নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি মামলায় কোনও সিদ্ধান্তে না পৌঁছনো অবধি সিভিক ভলান্টিয়ারদের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ৷ সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ মামলায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের চাকরির মেয়াদ আরও এক মাস বাড়িয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি করার নির্দেশ দিলেন অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ ৷ মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ ফেব্রুয়ারি ৷
আশা-আশঙ্কার দোলাচলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভাগ্য ৷ এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়াদের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে নতুন কমিটি গঠন, নিয়োগ পদ্ধতির নতুন গাইডলাইন ও তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেয় সিঙ্গলবেঞ্চ। সিঙ্গলবেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে স্থগিতাদেশ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চের কাছে আবেদন করে রাজ্য। এরপরই ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সিভিক ভলান্টিয়াদের চাকরি যাচ্ছে না।
মামলার এদিনের শুনানিতে ১৫ জানুয়ারি থেকে মেয়াদ আরও বাড়িয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি করা হল ৷ এই মামলার রায়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রায় তিনশোরও বেশি সিভিক পুলিশের ভবিষ্যৎ ৷ তাই তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সব দিক খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে চায় আদালত ৷ এদিনের রায়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেল রাজ্যের এক লাখ কুড়ি হাজার সিভিক ভলান্টিয়ার।
বাঁকুড়ার দুই থানায় সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ার নিয়োগের নথি দেখে শুনানিতেই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৩র ১২ এপ্রিল নেওয়া ইন্টারভিউয়ে অনিয়মের কথা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে কার্যত স্বীকার করে নিয়েছিলেন সরকারি আইনজীবীও।
সারেঙ্গা থানায় ১ দিনে ১৩৫১ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া হয় ৷ এর মধ্যে নিয়োগ ১২০ জনকে নিয়োগ করা হয় ৷ আর বাড়িকুল থানা ১ দিনে ৮৭৫ জনের ইন্টারভিউয়ের পর ২০০ জনকে নিয়োগ করা হয় ৷ ২০ মে হাইকোর্টের এই রায়ের পর বাতিল হয়ে যায় এই ৩২০ জন সিভিক পুলিশের নিয়োগপত্র ৷ রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ার ফোর্স নিয়োগে ধোঁকাবাজি ৷ নিয়োগে কোনও স্বচ্ছতা নেই ৷ বাঁকুড়ার ঘটনা হিমশৈলের চূড়ামাত্র ৷’
আগামী দিনে সিভিক পুলিশ নিয়োগে দুর্নীতি রুখতেও তৎপর হাইকোর্ট। ভবিষ্যতে বাঁকুড়ার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে রক্ষাকবচও স্থির করে দেবে রাজ্যের গঠিত কমিটি। সিভিক পুলিশ মামলার রায় দিতে গিয়ে নিয়োগের মানদন্ড স্থির করে দেয় হাইকোর্ট।