মা হওয়ার 'অপরাধে' কলেজ থেকে বহিষ্কার অধ্যাপিকা!

Last Updated:

শম্পা দত্ত, ২০১১ সাল থেকে বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজে অতিথি অধ্যাপনার কাজ করতেন। এডুকেশন বিষয় পড়াতেন। কলেজের প্রতিটি ছাত্র ছাত্রীর খুব কাছের ছিলেন।

মা হওয়ার খবরে আনন্দে মন ভরে উঠলো পরিবারের। সন্তানসম্ভবা শিক্ষিকা অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। কলেজকে জানালেন তাঁর শারীরিক অবস্থা। ছুটি নিলেন প্রসবকালীন। সন্তান প্রসবের পর যখন কলেজে ফিরলেন তখন আর তার চাকরি নেই। তারপর বহু চেষ্টা করেও চাকরিতে ফিরতে পারলেন না তিনি।
শম্পা দত্ত, ২০১১ সাল থেকে বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজে অতিথি অধ্যাপনার কাজ করতেন। এডুকেশন বিষয় পড়াতেন। কলেজের প্রতিটি ছাত্র ছাত্রীর খুব কাছের ছিলেন। স্নাতক স্তরের পরীক্ষার খাতা কাটা প্রশ্নপত্র তৈরি করা সবই করতেন। পারিশ্রমিক হিসেবে পেতেন একটি পিরিওড প্রতি ১০০ টাকা হিসাবে।  ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে শম্পা রক্তে হিমোগ্লোবিনের সমস্যার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই অবস্থাতেই অধ্যাপনা চালিয়ে যান। ওই বছরই অধ্যাপিকা অন্তঃসত্ত্বা হন। শরীর যখন আর টানছে না, তখন কলেজ কে জানিয়ে মাতৃত্বকালীন ছুটি নেন।
advertisement
২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।  তারপর শম্পা কলেজের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুনরায় অধ্যাপনা কাজে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। বিভাগীয় প্রধান অমলেন্দু মজুমদার তাঁকে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে বলেন। বেশ কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পর যখন শম্পা বোধ করলেন যে, তাঁর সঙ্গে আর কলেজ কোনও ভাবেই চুক্তি করতে চাইছে না।   অমলেন্দুবাবুর কাছে জানতে চান। তখন অমলেন্দুবাবু পরিষ্কার জানিয়ে দেন, অতিথিদের মাতৃত্বকালীন ছুটির কোনও ব্যবস্থা নেই কলেজে। যে কারণে তাঁকে আর অতিথি অধ্যাপক কিংবা কলেজে পড়ানোর কাজে নেওয়া যাবে না।
advertisement
advertisement
শম্পা দাবি করেন, ' বাড়ির পরিচারিকা কিংবা দৈনিক মজুরি মহিলাদেরও মাতৃত্বকালীন ছুটি থাকে। সেটি সম্পূর্ণ মানবিক কারণে। আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে মা হলাম বলেই আমার চাকরি চলে গেল!'  এই বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন শম্পা। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত কোনও দিক থেকে কোনও ভাবে সদর্থক কিছু পাননি। শম্পার কথায়, এই রকম ভাবে প্রচুর অতিথি শিক্ষকদের কলেজ বিভিন্নভাবে রাজনৈতিক শিকার বানায়। তিনি এটি শেষ দেখে ছাড়বেন।  এই বিষয় নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ রাজশ্রী নিয়োগী ও বিভাগীয় প্রধান অমলেন্দু মজুমদারের সঙ্গে দেখা করলে, তারা কোনো ভাবে কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি। ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজের পার্শ্বশিক্ষক ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের এক ছাতার তলায় এনে স্বীকৃতি দেন। তাদের সবাইকে এস এ সি টি এর অধীনে আনেন।
advertisement
এতে উল্লেখ করে দেন, যাঁরা কলেজে পড়ানোর কাজে যুক্ত আছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত চুক্তিভিত্তিক ভাবে পড়াতে পারবেন এবং তাদের প্রত্যেককে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনা হয়। প্রতিবছর ৩ শতাংশ হারে প্রত্যেকের বেতন বৃদ্ধি হবে। ২০১১ সাল থেকে এই কলেজে চুক্তিভিত্তিক অধ্যাপনা করেও কোন জায়গা পেলেন না শম্পা।  তার অপরাধ, সে মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিল। তার অপরাধ মা' হওয়া। এই বলতে বলতে চোখে জল নেমে আসে তার।
advertisement
SHANKU SANTRA
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
মা হওয়ার 'অপরাধে' কলেজ থেকে বহিষ্কার অধ্যাপিকা!
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement