#কলকাতা: ৬ দফায় চিঠি চালাচালির পর, অবশেষে শনিবার সকালে এল একটি ই-মেল। আর তাতেই জট কাটল মাঝেরহাট সেতুর। প্রায় ৩ মাস পরে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির ছাড়পত্র মিলল মাঝেরহাটের নতুন সেতু নিয়ে।
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট সেতু। সেই সময়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই সেতু পুরোপুরি ভেঙে নতুন সেতু তৈরি হবে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কেবল ব্রিজ তৈরি করা হবে। দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতুর ধাঁচে প্রায় ৮০০ মিটার লম্বা সেতু বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সেতু তৈরি করতে প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচ হবে। সেই কাজ শুরুও হয়ে যায়। তবে কাজের গতি প্রথম থেকেই ধীর। ইতিমধ্যেই সেতু চালু হওয়ার তিন তিনটি ডেটলাইন মিস হয়। কথা ছিল চলতি বছরের জুলাই মাসে সেতু চালু হয়ে যাবে। মাঝেরহাটে রেললাইনের উপরে সেতুর প্রায় ১০০ মিটার অংশ থাকবে। ওই নির্মাণের জন্য কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির ছাড়পত্র প্রয়োজন। আর তা পেতেই প্রায় গড়িয়ে গেল তিন মাস।
সম্প্রতি ওই নির্মাণের বিষয়ে রেল এবং পূর্ত দফতরের কাছে কয়েক দফা প্রশ্ন পাঠিয়েছিল বিমান মন্ত্রকের অধীনস্থ কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির দফতর। তাতে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, কেন ‘কেব্ল ব্রিজ’ তৈরি করা হচ্ছে ? কেন রেলের উপরের অংশ রেলকে তৈরি করতে না-দিয়ে পূর্ত দফতর তা নিজের হাতে রেখেছে ? এই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর, ফের বেশ কয়েক দফা প্রশ্ন তোলা হয়। সেখানে বলা হয়, কেবল ব্রিজ করতে গেলে তার আগে উইন্ড টেস্ট করাতে হবে। সেই টেস্ট কেন করা হয়নি ?
কি এই উইন্ড টেস্ট? এই পরীক্ষায় দেখা হয়, ভীষণ জোরে যদি হাওয়া বইতে শুরু করে, সেই হাওয়ার গতিবেগে সেতুর কোনও ক্ষতি হবে না তো? অঙ্ক কষে সেই রিপোর্ট করা হয়। অনেক সময় মডেল টেস্টও করা হয়। যদিও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, অ্যারোডায়নমিক্স টেস্ট করা হয়েছে। এই টেস্টের ফলে, সেতুর কেবলের অবস্থা, ভার নেওয়া অবস্থায় কি অবস্থান থাকবে, সেতুর যাবতীয় রিপোর্ট রয়েছে। শেষ পর্যন্ত এই সব রিপোর্ট দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি মহম্মদ লতিফ খান। তারপরই শনিবার সকালে ই-মেল মারফত পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে এত দেরি করে অনুমতি দেওয়ার কারণ কি? প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, এটা কোনও জটিলতা নয়। নিয়মমাফিক কারণ দর্শাতে বলা হয়। কারণ, ওই অংশের নির্মাণ নিয়ে রেল ও পূর্ত দফতর আগেই সহমত হয়েছে। কিন্ত টেকনিক্যাল রিপোর্ট যথাযথ না হলে বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়, তাই নানা সময় নানা প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি সমস্ত জবাব পাঠিয়ে দেওয়ার পরেই মিলল এই ছাড়পত্র।প্রথম থেকেই এই সেতু তৈরি নিয়ে রেল ও রাজ্যের মধ্যে একটা সংঘাত তৈরি হয়। রাজ্যের অভিযোগ ছিল রেল অনুমতি দিতে দেরি করেছে। যথাযথ ভাবে সাহায্য করছে না। রেলের পাল্টা অভিযোগ ছিল, জেনারেল ড্রয়িং দেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি করেছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই সেতু নিয়ে চিঠিও লিখেছেন রেলমন্ত্রীকে। অবশেষে নানা জটিলতা কাটিয়ে সেই কাজ শুরু হতে চলেছে। তবে এখনও মেট্রোরেলের পিলার তৈরি ঘিরে একটা সমস্যা থেকে গিয়েছে। তবে রাজ্য আশাবাদী পুজোর আগে চালু হবে নয়া মাঝেরহাট সেতু।
ABIR GHOSHAL
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Majerhat Bridge