স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী বিধানসভা কর্মী, জোকায় বাড়ির বেডরুমে ঝুলছিল ৩ সদস্যের দেহ  

Last Updated:

ঠাকুরপুকুরে জোকার পাত্রপাড়ায় একই বাড়িতে তিন সদ্যসের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। ছেলে, বাবা ও মায়ের ঝুলন্ত দেহ একই ঘর থেকে উদ্ধার করে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ।

#কলকাতা: ঠাকুরপুকুরে জোকার পাত্রপাড়ায় একই বাড়িতে তিন সদ্যসের  ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। ছেলে, বাবা ও মায়ের ঝুলন্ত  দেহ একই ঘর থেকে উদ্ধার করে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম চন্দ্রব্রত মণ্ডল  (৫০), মায়ারানি মণ্ডল (৪৫ ), সুপ্রিয় মণ্ডল (২৮)। বুধবার সকাল পৌনে আট'টা  নাগাদ  প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানান গোটা বিষয়টি। এরপর পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এ দিন সকালে মণ্ডল পরিবারের আত্মীয়রা অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে ছাদের দরজা ভেঙে ঘরে ভিতরে ঢোকেন। তখনই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত  হয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশকে খবর দেন। থানার আধিকারিকরা এসে ঘর থেকে তিনজনের  ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। দেহ ময়না তদন্তে পাঠান হয়েছে। পুলিশ  সূত্রে খবর, বেড রুমে  মধ্যে দুটি ফ্যান। বেড রুমে দরজা খুলেই প্রথম ফ্যানে গৃহকর্তা  চন্দ্রব্রত  মন্ডলের ঝুলন্ত  দেহ দেখতে পান। অন্য ফ্যানটিতে ঝুলছিলেন গৃহকর্তী মায়ারানি এবং দুই ফ্যানের মাঝের বিমে থাকা আংটা থেকে ছেলে ঝুলছিল সুপ্রিয়।
advertisement
পুলিশ সূত্রে খবর, চন্দ্রব্রত বিধানসভার গ্রুপ ডি কর্মী। এছাড়াও শাড়ি-কাপড়ের ব্যবসা করতেন স্বামী -স্ত্রী মিলে। ছেলে সুপ্রিয় পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু এক বছর আগে পুনে থেকে চাকরি ছেড়ে চলে আসেন। তারপর থেকে কলকাতায় মা-বাবার সঙ্গে থাকছিলেন। পুলিশের দাবি, কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। তবে পরিবার সদস্যদের সঙ্গে পুলিশ কথা বলে জানতে পেরেছে, চন্দ্রব্রত মণ্ডল দেনায় ডুবে ছিলেন। বেশ কিছু জায়গা যেমন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, স্বর্ণ ঋণ প্রদানকারী সংস্থা  থেকে লোন নিয়েছিলেন। যেগুলো শোধ করতে পারছিলেন না।
advertisement
advertisement
পুলিশ সূত্রে খবর, আর্থিক  অনটন এতটাই মারাত্মক হয়ে পড়েছিল যে ইলেকট্রিক বিল মেটাতে পারছিলেন না। ছেলে এক বছর আগে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে এসে পাখির ব্যবসা শুরু করেন | কিন্তু আশ্চর্য বিষয় দিন পাঁচেক  আগে সমস্ত  পাখি বিক্রি করে দেন সুপ্রিয়। তার থেকে পুলিশের অনুমান, পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক তাঁরা  আত্মঘাতী  হয়েছেন। ধার দেনাতে জর্জরিত হয়েই এই ঘটনা বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। পুলিশের আঁক আধিকারিক জানিয়েছেন, এ দিন চন্দ্রব্রত মণ্ডলের পায়ের নিচ থেকে একটি প্লাস্টিকের টুল, সুপ্রিয়র পায়ের নিচ থেকে কাঠের  চেয়ার পাওয়া গিয়েছে। মায়ারানি বিছানার ঠিক উপরের সিলিং  ফ্যান থেকে ঝুলছিলেন।
advertisement
পরিবারের অন্যান্য সদ্যসরা  জানিয়েছেন, "তাঁরা ভাবতেই পারেননি এ রকম  ঘটনা ঘটবে।" চন্দ্রব্রতরা দুই ভাই এবং চার বোন।  দুই ভাইয়ের মধ্যে চন্দ্রব্রত ছোট। বাড়ির পাশেই বড়ো দাদা দীপক মণ্ডলের বাড়ি। সমস্ত বিপদ-আপদে পাশে থাকার সাহস জুগিয়ে নিজে গোটা পরিবারকে নিয়ে আত্মহত্যা করলেন কী করে তা বুঝতেই পারছেন না।" এ দিন দেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান ডেপুটি  কমিশনার  (সাউথ ওয়েস্ট ডিভিশন )   সৈয়দ ওয়াকার রেজা।  ডিসি  (সাউথ  ওয়েস্ট) জানান, "একই ঘর থেকে তিন সদস্য ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে।  সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। কী কারণে এই  ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।" প্রশ্ন উঠছে, মর্মান্তিক মৃত্যু কি নিছকই আত্মহত্যা নাকি অন্য রহস্য রয়েছে? বাজারে কেন এতো ধার-দেনা করতে হয়েছিল পরিবারের সদস্যদের? কেন ছেলে চাকরি ছেড়ে দিলেন এত পড়াশুনা করে? আর্থিক  অনটনের আসল কারণ কী? আত্মহত্যা  পিছনে কোন রহস্য লুকিয়ে? তদন্তে করছে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ।
advertisement
ARPITA  HAZRA
view comments
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী বিধানসভা কর্মী, জোকায় বাড়ির বেডরুমে ঝুলছিল ৩ সদস্যের দেহ  
Next Article
advertisement
SSKM-এ নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ! গ্রেফতার এনআরএসের অস্থায়ী কর্মী
SSKM-এ নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ! গ্রেফতার এনআরএসের অস্থায়ী কর্মী
  • এসএসকেএমে ‘যৌন হেনস্থা’র অভিযোগ নাবালিকাকে

  • ডাক্তার পরিচয় দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন শৌচাগারে!

  • অভিযুক্ত গ্রেফতার

VIEW MORE
advertisement
advertisement