#শাপাদা দো আরাইপি: নৃতত্ত্ববিদরা বলছেন যে এই নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের (Dinosaur) জীবাশ্ম (Fossil) থেকেই কী ভাবে এই সময়ের পাখিদের আবির্ভাব হল, সেই সূত্রটি খুঁজে বের করা সম্ভব হবে!
সহজ ভাবে বলতে গেলে ব্যাপারটা নিছকই বিবর্তনবাদ! অনেক যুগ ধরে সময় আর প্রকৃতির দাবির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে বর্তমান সময়ের শারীরিক বৈশিষ্ট্যে উপনীত হয়েছে প্রাণীকুল। তাই নৃতত্ত্ববিদদের বক্তব্য, মুরগির মতো উচ্চতাসম্পন্ন এই যে ডাইনোসরের জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া গিয়েছে ব্রাজিলের (Brazil) শাপাদা দো আরাইপি থেকে, তা পক্ষীকুলের বিবর্তনবাদে আলোকপাত করবে।
খবর বলছে যে এই বিরল প্রজাতির ডাইনোসরটির জীবাশ্ম সম্প্রতি আবিষ্কার করেছেন জার্মানির (Germany) কার্সরুহর মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্টরির নৃতত্ত্ববিদ এবারহার্ড ফ্রে। তার পর এই জীবাশ্মটিকে পরীক্ষা করে যে সব সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তিনি এবং তাঁর সহকারী দল, সেই গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ক্রেটাসিয়াস রিসার্চে।
নৃতত্ত্ববিদরা এই নতুন আবিষ্কৃত ডাইনোসরটির নাম রেখেছেন উবিরাজারা জুবাটাস (Ubirajara Jubatus)। যার অর্থ হল বল্লম শ্রেণীর কেশরখচিত প্রভু। ডাইনোসরটির বিস্ময়কর শারীরিক বৈশিষ্ট্যের জন্যই এ হেন নাম রাখা হয়েছে। খবর বলছে যে মুরগির মতো উচ্চতাসম্পন্ন এই ডাইনোসরের ঘাড়ের নিচের দিকে বল্লমের মতো অনেকগুলো সূচ উঁচু হয়ে আছে। তার ঘাড়ে আছে ঝাঁকড়া কেশরও।
জানা গিয়েছে যে কেরাটিনের (Keratin) উপস্থিতি, যার ফলে আমাদের নখ এবং চুল বৃদ্ধি পায়, তার প্রভাবেই উবিরাজারা জুবাটাসের ঘাড়ের কাছে এই বল্লমের মতো অনেকগুলো সূচের উৎপত্তি। যা তাদের বড় প্রাণীর আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষায় সাহায্য করত। একই সঙ্গে এই কেশর আর সূচের সৌন্দর্যে তারা মোহিত করত যৌনসঙ্গীদের। নৃতত্ত্ববিদরা বলছেন যে উবিরাজারা জুবাটাসের এই সঙ্গীকে (Mates) মোহিত করার পদ্ধতি বর্তমান সময়ে ময়ূরদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়।
গবেষণাপত্রটির সহলেখক ডক্টর রবার্ট স্মিথ জানিয়েছেন যে বিবর্তনবাদের মূল সূত্র নির্ভর করে আত্মরক্ষা এবং প্রজননের উপরে। এই দুই দিক থেকেই উবিরাজা জুবাটাস গোত্রের ডাইনোসরদের সহায়তা করত ঘাড়ের কাছে উঁচু হয়ে থাকা সূচ এবং কেশর।
পাশাপাশি, ইউনিভার্সিটি অফ পোর্টসমাউথের আরেক নৃতত্ত্ববিদ ডেভিড মার্টিল জানিয়েছেন যে দেহগত বৈশিষ্ট্যের নিরিখে আবিষ্কৃত জীবাশ্মটি পুরুষশ্রেণীর বলেই মনে হচ্ছে তাঁর!