#নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে চিনা পণ্য বয়কটের আওয়াজ উঠেছে৷ কিন্তু বাস্তবে তা কতখানি সম্ভব, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ কারণ দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই চিন থেকে আমদামি করতে হয়৷
এই পরিস্থিতিতে চিন নির্ভরতা কমাতে তৎপর হল কেন্দ্রীয় সরকারও৷ চিন থেকে যে যে পণ্য আমদানি করা হয় তার তালিকা তো চাওয়া হয়েছেই, তার সঙ্গে সেগুলি ভারতে উৎপাদিত হলে দাম কত দাঁড়ায় ৷ উৎপাদনের ক্ষেত্রে কর সংক্রান্ত কী কী অসুবিধা রয়েছে, তাও শিল্পমহলের কাছে জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ সরকার মনে করছে, এর ফলে যেমন চিন থেকে নিম্নমানের বহু পণ্যের আমদানি কমানো যাবে, তেমনই দেশে উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণও বাড়বে, যা দেশের অর্থনীতিকেই আরও চাঙ্গা করবে৷
সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে হওয়া আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্প নিয়ে একটি বৈঠকে চিনের উপরে নির্ভরতা কীভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়৷ লাদাখ সীমান্তে চিনের সঙ্গে সংঘাত বৃদ্ধির পরেই দেশে চিনা পণ্য বয়কটের দাবি উঠেছে৷ সেই পরিপ্রেক্ষিতেই চিন নির্ভরতা কমাতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র৷
ভারতের মোট আমদানির প্রায় ১৪ শতাংশ এখন চিনের দখলে রয়েছে ৷ তার মধ্যে মোবাইল ফোন, টেলিকম, শক্তি ক্ষেত্র, প্লাস্টিকের খেলনা এবং ওষুধের কাঁচামালের জন্যই চিনের উপরে বেশি নির্ভরশীল ভারত৷
চিন থেকে যে পণ্য এবং কাঁচামাল বা সরঞ্জাম আমদানি করতে হয়, সেগুলি নিয়ে শিল্প মহলের মতামত এবং পরামর্শ চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ সেই তালিকায় রয়েছে হাত এবং দেওয়াল ঘড়ি, ইঞ্জেকশনের অ্যাম্পুল, কাচের রড এবং টিউব, হেয়ার ক্রিম, শ্যাম্পু, ফেস পাউডার, চোখ এবং ঠোঁটের মেক আপের জিনিস, প্রিন্টিং কালি, রং, তামাকজাত পণ্যের মতো জিনিসের তালিকা রয়েছে৷
এর পাশাপাশি ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষের থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের মধ্যে কীভাবে আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, চিন থেকে আমদানি করা পণ্যগুলির দেশে উৎপাদিত হলে তার দাম কত দাঁড়ায়, দেশে উৎপাদন ক্ষমতা, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অধীনে কী কী পণ্য আমদানি হয় এমন বেশ কিছু তথ্যও শিল্প মহলের কাছে চেয়েছে সরকার৷
শিল্প মহলের এক সূত্র জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তাঁরা এই সমস্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন এবং খুব শিগগিরই তা কেন্দ্রীয় শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেবেন৷
ইতিমধ্যেই টায়ারের আমদানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র৷ পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে স্থল সীমান্ত রয়েছে, এমন দেশগুলি থেকে ভারতীয় সংস্থাগুলির অধিগ্রহণের চেষ্টা হলে তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ যার ফলে চিনা সংস্থাগুলির পক্ষে আর্থিক মন্দার সুযোগ নিয়ে ভারতীয় সংস্থাগুলির দখল নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷
২০১৯-এর এপ্রিল মাস থেকে ২০২০-এর ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চিন থেকে ৬২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে ভারত৷ ওই একই সময়কালে ভারত থেকে চিনে রফতানির পরিমাণ ছিল ১৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ চিনের সঙ্গে বাড়তে থাকা বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ নিয়ে বার বারই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত৷ ২০১৯-এর এপ্রিল থেকে ২০২০-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যে ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ বিলিয়ন ডলার৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Boycott China, India-China Tension