Women's Day 2024: ছোট্ট ঘর থেকে বড় স্বপ্ন দেখার নজির! গ্রামের মেয়ে এখন রেল চালক, বাধা পেরিয়ে স্বপ্নপূরণ
- Published by:Sanchari Kar
- hyperlocal
- Reported by:RAHI HALDAR
Last Updated:
Women's Day 2024: বর্তমানে ২৬ বছর বয়সে রেলের খড়গপুর ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকোপাইলট আসমতারা। মেয়ের এই সাফল্যে গর্বিত তাঁর গ্রাম হুগলির দাদপুর।
হুগলি: ছোট ঘর থেকে বড় স্বপ্ন দেখার নজির হুগলির রসূলপুরের আসমাতারা খাতুন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি নিযুক্ত হয়েছেন জনগণের কাজে। অভাবের সংসারে বাঁধা পেরিয়ে আসমাতারা এখন একজন স্বাবলম্বী নারী। তিনি ভারতীয় রেলের লোকো পাইলট। এই বয়সেই তিনি ভারতীয় রেলের চালক।
ছোট বয়স থেকেই পরিবারে আর্থিক প্রতিকূলতা। সেই প্রতিকূলতা থেকেই লক্ষ্য স্থির নিজেকে স্বনির্ভর করে তোলার। সরকারি স্কুল থেকে পড়াশোনা করে ইঞ্জিয়ারিং শেষ করেন। বর্তমানে ২৬ বছর বয়সে রেলের খড়গপুর ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকোপাইলট। মেয়ের এই সাফল্যে গর্বিত তাঁর গ্রাম হুগলির দাদপুর।
মেয়েকে প্রতিষ্ঠিত করাই লক্ষ্য ছিল বাবা-মায়ের। কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরোনো অভাবের সংসারে মেয়েকে সেই অভাব বুঝতে দেননি। ছোট থেকেই মেধাবী পড়ুয়া ছিলেন আসমাতারা। রসুলপুর গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের পড়াশোনা করে মহেশ্বরপুর হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে ধনিয়াখালি মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে দুর্গাপুরে বেঙ্গল কলেজে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে বি টেক পাশ করেন। তার পর থেকে শুরু সরকারী পরীক্ষার প্রস্তুতি। সেই লক্ষ্যে অবিচল থেকে এখন তিনি একজন রেলচালক। আসমাতারা জানান, লক্ষ্য ছিল সরকারি চাকরি করার। সেই মতো পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় চাকরির আবেদন করেও চাকরি পাননি। আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। তবুও ভেঙে পড়েননি। ফের প্রস্তুতি শুরু করেন। এরপর কলকাতায় চলে আসেন তিনি।
advertisement
advertisement
সেখানে গিয়ে ব্যাঙ্কিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিন। পরে রেলে চাকরির জন্য যোগাযোগ করেন। বর্তমানে রেলওয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকোপাইলট-এর কাজ করছি। মধ্যবিত্ত পরিবারে থেকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও অনেক কটাক্ষও শুনতে হয়েছিল। আসমাতারা বলেন, “তবুও নিজের লক্ষ্যে স্থির ছিলাম। আমার সাফল্যের পিছনে আমার মায়ের অবদান অনেক। ক্লাস নাইন পর্যন্ত মায়ের কাছেই পড়াশোনা শিখেছি। নারী দিবসের সকল মেয়েদের আমার একটাই বার্তা, কে কী বলছে, সে দিকে কর্ণপাত না করে নিজের লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে । তবেই সে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারবে।”
advertisement
মেয়ের সাফল্যে কিছুটা অশ্রু ভেজা চোখে মা বলেন, “মেয়েকে প্রতিষ্ঠিত করতে অনেক লড়াই করতে হয়েছে। সামান্য দুই বিঘা জমি ছিল তা থেকে কী ভাবে মেয়ের পড়াশোনা চালাব, কী ভাবে সংসার চালাব সেটাই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। বিয়ের সময় বাবার দেওয়া জিনিস বন্ধক রেখে মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়েছি। পরে আর ফিরিয়ে আনতে পারিনি। তবে তাতে আমার কোন দুঃখ নেই। আজ মেয়ে সংসারের হাল ধরেছে। ছোট ছেলে পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে। ছেলে আজ কম্পিউটার সায়েন্সের ইঞ্জিনিয়ার। ছোট মেয়ে বিএসসি নার্সিং করছে। আজ সন্তানদের পরিচয়ে আমার পরিচিত। আমি লোকো পাইলট অ্যাসিস্ট্যান্টের মা। আমাকে আজ সবাই চেনে। মেয়ের সাফল্যে আজ আমিও গর্বিত। আমিও চাই, অল্প বয়সে যেন মেয়েদের বিয়ে না দিয়ে দেয়ে তাদের স্বপ্নকে সার্থক করতে দিতে হবে।”
advertisement
বাবা জাকির হোসেন বলেন, “মেয়েকে মানুষ করতে অনেক ঝড়ঝাপ্টা সহ্য করতে হয়েছে। ছোট থেকে মেয়ে ছিল মেধাবী। প্রতিটা বাবা-মায়ের উদ্দেশ্যেই বলব জীবনে ঝড়ঝাপ্টা আসবে। সেটাকে সহ্য করেই এগিয়ে যেতে হবে মেয়েকে স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে।”
রাহী হালদার
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
March 08, 2024 7:40 PM IST