#কলকাতা: ব্যস্ত সময়ে খরিদ্দারের আচমকা মুখঝামটা খেয়ে থতমত দোকানি ৷ নিউ মার্কেটে শপিং করতে আসা তরুণীর গলার ঝাঁঝ তখনও মেলায়নি, ‘২৫ % ডিসকাউন্ট চলে নাকি আজকের বাজারে? অনলাইনে তো সারা বছরই ৫০ % মেলে ৷ তা হলে চৈত্র সেলের বড় বড় স্টিকার কেন সাঁটিয়ে রেখেছেন দোকানের চারদিকে?’ স্বামী আর পুত্রের জন্য সবে দুটো জামা পছন্দ করেছিলেন গৃহবধূ ৷
হাতিবাগানের একটি রেডিমেড শার্ট-প্যান্টের দোকানের প্রৌঢ় কর্মচারী বড় আহ্লাদিত হয়ে শুধিয়েছিলেন, ‘বৌদি, আর কী দেখাব? শ্বশুর-ভাসুর-ভাই-দেওর-বাবা, সব বয়সের সব রকম আইটেম আছে৷’ নিরুত্তর খরিদ্দার অবশ্য নিছক একটা হাসি হেসেই হাঁটা লাগালেন ক্যাশ কাউন্টারের দিকে৷ চুম্বকে আর কোলাজে এটাই ক্রমশ জমে ওঠা চৈত্র সেলের বাজার ৷ আগামিকালই পয়লা বৈশাখ ৷ আর আজ শেষ রবিবার আর শেষ সুযোগ ৷ অথচ সেই উঠতি জোয়ারের মধ্যেই চোরা ভাটার টান স্পষ্ট ৷ যদিও চৈত্র সেলের প্রতি টান আর আবেগ বাঙালির রক্তে ৷ নতুন বছর শুরু হওয়ার আগে নতুন পোশাক, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র কেনাকাটার জন্য ‘সেল’পাগল বাঙালির উন্মাদনা নাকি অনেকটাই তলানিতে ৷
কিন্তু কলকাতা হোক বা শহরতলি কিংবা জেলা - বাস্তব ছবিটা বলছে, চৈত্র সেল এখন স্রেফ নামেই ৷ ফি বছর বাংলা ক্যালেন্ডারের শেষ মাসে তা আসে এবং চলে যায় ৷ রেওয়াজ আর অভ্যাসের বশে সে বাজারে ভিড়ও জমায় ক্রেতা ৷ কিন্তু না-মেলে সেই সেলে আকর্ষণীয় ছাড়, না-হয় চোখে পড়ার মতো ব্যবসা ৷
ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতা বলছে, বরাবরের চৈত্র সেলের বাজারে এখন জোর থাবা বসিয়েছে অনলাইন বিকিকিনির অভ্যাস ৷ অবশ্য দশক ঘুরতে চলল, বর্ষশেষের এই ছাড়ের বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করেছিল শপিং মলের রমরমায় ৷ কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই লেখচিত্রের ক্রমাগত অধোগতিতে প্রায় নাভিঃশ্বাস ওঠার জোগাড় মাঝারি ও ছোট ব্যবসায়ীদের ৷ তাঁদেরর পর্যবেক্ষণ, আত্মীয়স্বজনের মধ্যে নববর্ষের উপহার দেওয়ার যে রীতি বরাবর ছিল, বিলুপ্তপ্রায় যৌথ সংসারের জেরে তা এখন বারোআনাই ম্রিয়মান ৷ তবুও পয়লা বৈশাখের আগে ‘চৈত্র সেল’চিরন্তন ও অকৃত্রিম ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Chaitra Sale, Poila Boisakh 2019, PoilaBoisakh Features