Testing for COVID-19: কোন কোন টেস্ট দ্বারা করোনা-আক্রান্তের চিকিৎসা চলে, বুঝিয়ে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
- Published by:Ananya Chakraborty
Last Updated:
মারণ ভাইরাস রোগীর শরীরে ঠিক কী কী পরিবর্তন ঘটিয়ে চলেছে এবং তার সঙ্গে যুঝতে হলে কোন চিকিৎসাপদ্ধতি অবলম্বন করে চলতে হবে, জানুন
#নয়াদিল্লি: RTPCR বা অ্যান্টিজেন টেস্ট তো জনৈক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কি না, সেটা পরীক্ষা করার জন্য করানো হয়! রিপোর্ট পজিটিভ এলে কিন্তু এর সূত্র ধরে আরও অনেক মেডিক্যাল টেস্ট চলতে থাকে। মারণ ভাইরাস রোগীর শরীরে ঠিক কী কী পরিবর্তন ঘটিয়ে চলেছে এবং তার সঙ্গে যুঝতে হলে কোন চিকিৎসাপদ্ধতি অবলম্বন করে চলতে হবে, সেটা নির্ণয় করাই এই সব টেস্টের উদ্দেশ্য। এই বিষয়ে এবার বিশদে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিকেত রাই (Niket Rai), MBBS, মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজ (Maulana Azad Medical College) এবং লোকনায়ক হসপিটাল, দিল্লির (Lok Nayak Hospital, Delhi) অ্যাসোসিয়েট।
১. CBC - CBC বা CBP-র পুরো কথাটা হল কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট/পিকচার (Complete Blood Count/Picture)। রক্তের মধ্যে যে সব উপাদানগুলো আছে, যেমন শ্বেত এবং লোহিত রক্তকণিকা, প্লেটলেট, ভাইরাসের সংক্রমণে সেগুলোর সংখ্যাগত এবং আকৃতিগত কী কী পরিবর্তন হচ্ছে, সেটা বুঝতে সাহায্য করে এই টেস্ট।
২. CRP - CRP-র পুরো কথাটা হল সি রিয়্যাকটিভ প্রোটিন (C Reactive Protein)। ভাইরাসের সংক্রমণে লিভারের মধ্যে এই জটিল অবস্থা দেখা দেয় যা ফোলাভাব এবং সংক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মতো ক্রনিক অসুখ থাকলে এটি মৃদু অবস্থায় দেখা দেয়। রিউমাটয়েড এবং ইনফেকশাস আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে এর মাঝারিভাব চোখে পড়ে। তবে ব্যাকটিরিয়া, ভাইরাস বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের ক্ষেত্রে এটি সঙ্কটজনক অবস্থায় পৌঁছে যায়। রোগীর লিভার কী ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা বোঝার জন্য এই টেস্ট করা হয়।
advertisement
advertisement
৩. D Dimer - রক্তনালীর মধ্যে তার স্বাভাবিক অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপের সূত্রে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না। কিন্তু কোনও কারণে রক্তনালীর ভিতরে সমস্যা দেখা দিলে রক্তের অপচয় রোধ করার জন্য তা জমাট বাঁধতে থাকে। পরিণামে এই জমাট বাঁধা রক্তকে ভাঙার জন্য প্রতিক্রিয়াও রক্তনালীর অভ্যন্তরে শুরু হয়ে যায়। এর সূত্র ধরে শরীরে জমাট বাঁধা রক্ত ভাঙার উপাদানগুলো বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ডি ডাইমার (D Dimer) হল এমনই এক উপাদান। এই টেস্টের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হয় যে রক্তে ডি ডাইমারের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে কি না! বৃদ্ধি পেলে রোগীকে রক্ত ঘন রাখার ওষুধ দিতে হয়।
advertisement
৪. LDH - ল্যাকটেট ডিহাইড্রোজেন (Lactate Dehydrogenase) হল এক বিশেষ ধরনের উৎসেচক যা শরীরের সব কোষেই উপস্থিত থাকে। অতিরিক্ত শরীরচর্চা, সংক্রমণের ফলে কোষের কোনও ক্ষতি হলে তখন ব্লাড লেভেল বাড়তে থাকে। তাই এই পরীক্ষায় নানা ধরনের ল্যাকটেট ডিহাইড্রোজেন পরীক্ষা করে বোঝা যায় যে সংশ্লিষ্ট অঙ্গটির কত দূর ক্ষতি হয়েছে, সেই মতো চিকিৎসাপদ্ধতি নির্ণয় করতে সুবিধা হয়।
advertisement
৫. IL6 - শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, যাকে আমরা ইংরেজিতে ইমিউনিটি বলি, তা ইন্টারলিউকিনস-৬ (Interleukins-6) নামে একধরনের পদার্থের ক্ষরণ ঘটিয়ে থাকে। এটি সংক্রমণজনিত ফোলাভাব প্রশমনের উদ্দেশ্যে কাজ করে চলে। অতএব রক্তে এর পরিমাণ ঠিক কতটা, তা এই টেস্ট দ্বারা বোঝা যায়, সেই মতো অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ প্রয়োগের ব্যাপারটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
advertisement
৬. LFT - এই টেস্টের পুরো কথাটা হল লিভার ফাংশন টেস্ট (Liver Function Test)। এই রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় যে লিভার থেকে অ্যালবুমিনের মতো প্রোটিন ক্ষরণ ঠিকঠাক হচ্ছে কি না এবং বিলিরুবিনের মতো রক্তের বর্জ্য পদার্থ ঠিকঠাক ভাবে ভাঙার কাজ চলছে কি না! প্রোটিনের স্বল্প পরিমাণ এবং বিলিরুবিনের বেশি পরিমাণ বুঝিয়ে দেয় যে লিভারের কার্যকারিতা ঠিক নেই। তাই কোনও ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কি না, সেটা বোঝার জন্য করোনা-রোগীর এই রক্তপরীক্ষা করা হয়ে থাকে।
advertisement
৭. RFT - এই টেস্টের পুরো কথাটা হল (Renal Function Test)। কিডনি রক্ত থেকে বর্জ্যপদার্থ বের করে দিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে। কিন্তু হতেই পারে যে সংক্রমণ বা কোনও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই টেস্টের মাধ্যমে কিডনি ঠিকঠাক কাজ রছে কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।
৮. ইউরিন রুটিন মাইক্রোস্কোপি - ইউরিন রুটিন মাইক্রোস্কোপি (Urine Routine Microscopy) বা ইউরিন্যালিসিস হল মাইক্রোস্কোপ দ্বারা আমাদের মূত্রের রঙ এবং ঘনত্ব পরীক্ষা। ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, কিডনির অসুখ এবং ডায়াবেটিস বুঝতে এই টেস্ট করা হয়। এক্ষেত্রে করোনা-রোগীর এমন কোনও জটিলতা দেখা দিয়েছে কি না, তা এই টেস্টের মাধ্যমে নিঃসন্দিগ্ধ করে নেওয়া হয়।
advertisement
৯. ব্লাড সুগার টেস্ট - মূলত ডায়াবেটিস নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার ব্যবহার হয়ে থাকে। একই সঙ্গে করোনা-রোগীর ক্লান্তি, সংক্রমণ এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝার জন্যও এই পরীক্ষাটি করা হয়ে থাকে।
১০. PCT - এই টেস্টের পুরো কথাটা হল প্রো-ক্যালসিটোনিন টেস্ট (Pro-Calcitonin Test)। রোগীর শরীর ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের পরে কী ভাবে সাড়া দিচ্ছে, তা বুঝতে এই পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। সংক্রমণের ৩-৪৬ ঘণ্টা পরে এটি বৃদ্ধি পায়, ১২-২৪ ঘণ্টার মধ্যে সর্বাধিক স্তরে থাকে, আবার সংক্রমণের স্তর পেরিয়ে এলে এর মাত্রা নিমেষে পড়ে যায়! এই পরীক্ষার সাহায্যে তাই কোন রোগীর কী পরিমণে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে, তা খতিয়ে দেখা হয়।
view commentsLocation :
First Published :
June 15, 2021 9:47 PM IST