ইয়াস-এর ধ্বংসলীলা ফিরিয়ে দিল ওড়িশা সুপার সাইক্লোন ১৯৯৯ স্মৃতি! কতখানি ভয়ানক ছিল এই ঝড়?
- Published by:Ananya Chakraborty
Last Updated:
ওড়িশার অবকাঠামোগত এতটাই ক্ষয়ক্ষতি হয় যে একটা গোটা দিন এই রাজ্য পুরো বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়
#ভুবনেশ্বর: ওড়িশা সুপার সাইক্লোন ১৯৯৯! নাম শুনলে যেন এখনও আঁতকে উঠতে হয়। ১৯৯৯ সালে তথা ২২ বছর আগে এই বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন রাতারাতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে গোটা রাজ্যকে। ঘূর্ণিঝড়ের আগাম পূর্বাভাস থাকলেও এই ঝড় যে এত মারাত্মক হবে, দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি উৎকলবাসী। বাকি ঘূর্ণিঝড় থেকে এর প্রভাব ছিল সব চেয়ে বেশি ধ্বাংসাত্মক। দু’দিন ধরে এই সাইক্লোন তার তাণ্ডবলীলা চালায়। এই ঝড়ের ধাক্কায় কার্যত স্তব্ধ হয়ে জনজীবন। তৎকালীন মূল্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ৪৪০ কোটি টাকার সম্পত্তিও।
সরকারি হিসাব অনুসারে, ৩০০ মাইল গতিবেগে ছুটে আসা এই সাইক্লোনের জেরে মৃত্যু হয় ১০ হাজার জন মানুষের। ৩.৫ লক্ষেরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। গৃহহীন হয়ে একপ্রকার রাস্তায় দাঁড়াতে হয় বহু মানুষকে। সেই সঙ্গে পুরোপুরি ভেসে যায় বেশ কয়েকটি গ্রাম। দুই লক্ষেরও বেশি প্রাণী মারা যায় এবং ২৫ লক্ষ মানুষ নির্জনে বিভিন্ন দ্বীপে বন্দি হয়ে পড়ে। এই ঝড়ের জেরে ওড়িশার অবকাঠামোগত এতটাই ক্ষয়ক্ষতি হয় যে একটা গোটা দিন এই রাজ্য পুরো বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
advertisement
এই সাইক্লোন আসার সঙ্গে সঙ্গে আসে আরও এক বিপর্যয়। অত্যধিক বৃষ্টির কারণে বাড়তে থাকে বিভিন্ন সংক্রামক অসুখ। ডায়রিয়া ও কলেরায় আক্রান্ত হয় ঝড়ে বিপর্যস্ত মানুষ। শুধুমাত্র ওড়িশাতেই ২২ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হন ডায়রিয়ায়।
advertisement
ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সতর্কতা দেওয়া হয় এই ঝড় আছড়ে পড়ার কমপক্ষে দুই দিন আগেই। সাধারণ মানুষকে ক্ষতির মুখ থেকে সরিয়ে আনার জন্য বেশ কিছু প্রচেষ্টাও চালানো হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে রাজ্যের সব চেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল, সাইক্লোন থেকে রাজ্যবাসীকে রক্ষার স্বার্থে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণশিবির না থাকা। এই রাজ্যে মাত্র ২১টি আশ্রয়কেন্দ্র ছিল, যার প্রত্যেকটিতে ২,০০০ জন করে লোকের থাকার ব্যবস্থা ছিল।
advertisement
এই সুপার সাইক্লোনের ধ্বংসলীলা থামার পর শুরু হয় আরেক নতুন তাণ্ডব। রাস্তায় রাস্তায় শুরু হয় দাঙ্গা। কারণ দুর্ভিক্ষের জেরে সাধারণ মানুষ আক্ষরিক অর্থেই খাবারের জন্য হাত পেতে লড়াই করে চলে। তবে প্রশাসনের অভাবনীয় কৌশলের দ্বারা বহু মানুষকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।
কার্যত এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় চোখে আঙুল দিয়ে অনেক কিছু বুঝিয়ে দিয়ে যায় ওড়িশাকে। যার ফলস্বরূপ পরবর্তীকালে কালে সাইক্লোন শেল্টার গড়ে তোলার উপরে জোর দেয় ওড়িশা। ২০১৯ সালে যখন ওড়িশার উপর ফের আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী (Cyclone Fani), তখন এই রাজ্যে ত্রাণ শিবিরের সংখ্যা ছিল প্রায় ৯০০টি।
view commentsLocation :
First Published :
May 29, 2021 5:09 PM IST