‘ইচ্ছে করছে একটা চিত্রনাট্য নিয়ে বিধু বিনোদ চোপড়ার কাছে যাই’: প্রদীপ সরকার

Last Updated:

তিনি মনে প্রাণে বাঙালি। হিন্দি ছবি বানান বাঙালি মনন দিয়ে। তাঁর মতে নারী কখনোই দুর্বল নয়। তাঁর ছবির নারী চরিত্ররাও খুব দাপুটে।

#মুম্বই: তিনি মনে প্রাণে বাঙালি। হিন্দি ছবি বানান বাঙালি মনন দিয়ে। তাঁর মতে নারী কখনোই দুর্বল নয়। তাঁর ছবির নারী চরিত্ররাও খুব দাপুটে। প্রদীপ সরকার নিজেকে বাণিজ্যিক, অন্য ধারার পরিচালক, কোনো লেবেলই দিতে চান না। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর ছবি 'অ্যারেঞ্জন্ড ম‍্যারেজ'। জীবন, ছবি, ইন্ডাস্ট্রির সমীকরণ সব কিছু নিয়ে নিউজ 18 বাংলার সঙ্গে আড্ডা দিলেন পরিচালক।
প্রশ্ন- প্রদীপদা সাক্ষাৎকারের শুরুতেই জানতে চাই অঙ্ক আসে?
আরে আপনি কথাটা জানেন তাহলে। গল্পটা খুলে বলি। ছোটবেলায় এক অধ্যাপক জিজ্ঞেস করেছিলেন, 'অঙ্ক আসে?' আমি বললাম না। অঙ্ক কী, কোনো বিষয়ই পড়তে ভাল লাগে না। স্যার বললেন, 'তাহলে অঙ্কন হবে।' তারপর অনেক পথ পেরিয়ে এসেছি। কিছু না হলে যেমন অঙ্কন হবে। তেমনই কিছু হয়নি বলে ছবি বানাতে এসেছি।
advertisement
advertisement
প্রশ্ন- এটা আপনার বিনয়। একটু আপনার শেষ মুক্তি প্রাপ্ত ছবির ব্যাপারে কথা বলি। 'অ্যারেঞ্জন্ড ম্যারেজ'-এ আপনি একজন সমকামী পুরুষের গল্প বললেন, যে আশপাশের চাপে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। এইরকম একটা গল্প বলা খুব জরুরি মনে হলো কেন?
আমি lgbt কমিউনিটির অনেকের সঙ্গে মেলামেশা করেছি। আমি ওঁদের মানসিকতা বুঝি। সমাজের সকলেই জানেন এটা অদ্ভুত কিছু নয়। তবে মানতে অসম্ভব আপত্তি। এই মানুষগুলোকে খুব নিচু চোখে দেখা হয়। না হলে হাসি ঠাট্টা করা হয়। মনে হলো এই গল্পটা বলা দরকার। আমার ছবির পটভূমি উত্তর কলকাতা, ওখানকার মানুষরা এসব মানতেই পারেন না। অথচ ওখানে সমকামীতা নেই, এমন নয়। এই ভাবনা থেকেই ছবিটা করা।
advertisement
প্রশ্ন- আপনার কথার রেশ ধরেই বলবো, ছবিতে সমকামীতা মানে, হয় ওঁদের নিয়ে মজা করা। না হলে খুব ভারী কিছু। হালকা মেজাজের বাণিজ্যিক ছবি খুব কম। আপনি এক মত?
আপনি একেবারেই ঠিক কথা বলছেন। আরে বাবা এটা তো স্বাভাবিক একটা বিষয়। এটা ছবিতেও আলাদা করে রাখা উচিত নয়। আপনি আমার ছবিটা দেখলে বুঝবেন আমার গল্পে সমকামীতা এসেছে। তবে আমি সমকামীতা নিয়ে গল্প বুনিনি। বাচ্চাদের মাথায় ছোট থেকে ঢুকিয়ে দেওয়া এটা পাপ, এই বিষয়টা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
advertisement
প্রশ্ন- একদম উচিত কথা। অন্য একটা জিনিস জানতে চাইবো, একসময় বাঙালি পরিচালকরা দাপিয়ে মুম্বাইয়ে কাজ করেছেন। শক্তি সামন্ত, বাসু চট্টোপাধ্যায়, ঋষিকেশ মুখোপাধ্যায় আরো  অনেকে। মাঝে একটু কম। এখন আবার আপনি, সুজিত সরকার, সুজয় ঘোষ, অনুরাগ বসু সকলে কাজ করছেন। বাঙাকিরা খুব রুচিশীল। সাহিত্য থেকে ছবি বানান, এমনটাই ভাবা হয়। কিন্তু আপনারা তো একেবারে বানিজ্যিক ছবিও বানাতে পারেন, তাই না?
advertisement
বিশ্বাস করুন আমি কখনো নিজের ব্যাপারে এভাবে ভাবিনি। আমি কমার্শিয়াল পরিচালক, না আমি আর্ট ছবি নির্মাতা, এসব মাথায় আসে না। আমি নিজেকে শুধু পরিচালকই ভাবতে পছন্দ করি। আমি গল্প বলি। সেটাই আসল। সাহিত্যের কথা বললেন যখন 'পরিণীতা'-র কথা বলতেই হয়।
প্রশ্ন- আপনার সঙ্গে কথা হবে আর 'পরিণীতা'-র কথা উঠবে না, এটা হতে পারে না। এই ছবি বানানোর কথা কিছু বলুন।
advertisement
'পরিণীতা' এতোটা বাণিজ্যিক ভাবে সফল হবে, তা বানানোর সময় একবারও বুঝিনি। কিন্তু আমি একেবারে শরৎ বাবু যা লিখেছেন, তা টুকে বসিয়ে দিইনি। আমি বিটুইন দ্য লাইন্স পড়েছিলাম। এই যেমন শেষে ওই পাঁচিল ভাঙাটা গল্পে নেই। ওটা আমি রেখেছিলাম। না হলে ফ্রুস্ট্রেশনটা বোঝাবো কী করে। করে তো ফেলেছি। কিন্তু ভয় ছিল মানুষ নেবেন তো। সাহিত্য থেকে বানানো ছবি। ভাবলাম এই বুঝি খুব গালমন্দ খাব। কিন্তু তেমনটা হলো না।
advertisement
প্রশ্ন- এখানে আমি একটা কথা বলবো। ঋতুপর্ণ ঘোষ 'পরিণীতা' দেখে বলেছিলেন, 'দেওয়াল ভেঙেছিস বেশ করেছিস'।
একদম। আপনি আমার ব্যাপারে জানেন। ওইটা শুনে অভয় পেয়েছিলাম। ঋতুদা বলছে মানে রিস্ক নেই। ছবি দেখে ওঁ ফোন করে বলেছিলো, 'শেখরের রাগটা বোঝানোর জন্য ওটা দরকার ছিল। আর পাঁচিল ভাঙাটা প্রতীকী।'
প্রশ্ন- আপনার মনে হয়, এখন অনেক বেশি বাঙালিদের গল্প বলা হয় হিন্দি ছবিতে?
এখন কত বেশি হিন্দি ছবির শ্যুটিং বাংলায় হয় বলুন তো। সেটা 'পরিণীতা'-র পর থেকেই শুরু হয়েছে, বলে আমার মনে হয়। ছবিটায় একটা গ্ল্যামার কোশান্ট ছিল। শহরটাকে খুব সুন্দর দেখানো হয়েছিল। আসলে কী জানেন, কলকাতায় ভিন্ন স্তরের মানুষ দেখানো খুব সহজ। গরিব মানুষও দেখাতে পারি আবার মধ্যবিত্ত ও। বাঙালিদের নিয়ে হিন্দি ছবি হয় বললেন না, আগে বাঙালি মানেই মাছের ঝোল ভাত। এখন বাঙালিদের অনেক গ্ল্যামার বেড়েছে।তাই ছবিতেও অন্য ভাবে আসে।
প্রশ্ন- 'পরিণীতা', 'মর্দানি' থেকে 'এলা' আপনার গল্পের সব নারী চরিত্রই খুব শক্তিশালী। আপনার চোখে নারী কি এমনি?
নারী চিরকালই শক্তিশালী এতে সমস্যা কোথায়? নারীর কথাই সবসময় প্রাধান্য পায়, তা আপনি যতই যাই বলুন। নারী বাড়ি, বাইরের সমস্ত দায়িত্ব নেন। তাঁর ক্ষমতা কম কিসের?
প্রশ্ন- ভারতে পুরুষতন্ত্র সত্যি কি নেই?
আছে, সব জায়গায় এক নয়। মেয়েরা এখন যথেষ্ট বেরিয়ে এসেছেন। তাঁরা রুখে দাঁড়াচ্ছেন। এটা কিন্তু হট করে হচ্ছে না। দেখুন মেয়েরা স্বদেশীও হয়েছেন। আবার দীপিকা, প্রিয়াঙ্কার মতো নিউ আইজ উওম্যানরাও রয়েছেন। পুরুষ দমাতে পারেনি, পারবেও না।
প্রশ্ন- আপনি বিধু বিনোদ চোপড়ার সঙ্গে কাজ করেন না কেন?
করিনি না কেন ঠিক কী করে বলি। ওঁর সঙ্গে রোজই কথা হয়। আমার ভীষণ ইচ্ছে করছে একটা চিত্রনাট্য নিয়ে ওঁর কাছে যাই। ওঁকে শোনাই। কিন্তু যাওয়া উচি কি উচিত নয়, সেটাই ভেবে উঠতে পারছি না। কোথাও একটা ধাক্কা খাচ্ছি। ১০ বছর তো যশ রাজের সঙ্গেও ছিলাম। বেরিয়ে এলাম।
প্রশ্ন- মর্দানি টু' আপনি করলেন না কেন?
সব কেন কী, ভেঙে বলা যায়। ফ্র্যাঞ্চাইজিটা আমি শুরু করেছিলাম। তারপর ক্লিক করল যখন পরেরটা আমাকে দিয়ে বানালো না।
প্রশ্ন- আপনি এত কম ছবি করেন কেন?
(হেসে) টাকা পাই কই ছবি করার জন্য। কেউ যদি থাকতো ১৫ কোটি দিয়ে দিত, মনের আনন্দে ছবি করতাম। এখন তিনটে চিত্রনাট্য তৈরি। করব ঠিকই। সব এত বাণিজ্যিক হয়ে গিয়েছে না, কী বলবো। চিত্রনাট্যে পড়ার আগে অভিনেতারা টাকার কথা জিজ্ঞেস করেন।
প্রশ্ন- বাংলা ছবি বানান না কেন?
আমার তো সব ছবিই বাঙালিদের নিয়েই।  বাংলা ছবিই তো।
প্রশ্ন- বাংলা ভাষায় ছবি করেন না কেন?
এখানে খুব কম বাজেটে ছবি হয়। আগে কখনো এত কম টাকায় ছবি করিনি তো। ভয় হয়, পারবো কিনা ভেবে।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
‘ইচ্ছে করছে একটা চিত্রনাট্য নিয়ে বিধু বিনোদ চোপড়ার কাছে যাই’: প্রদীপ সরকার
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement