#কলকাতা: যদি হঠাৎ আপনার জানা-অল্প জানা ঘটনাগুলো পর্দায় উঠে আসে? যদি হঠাৎ যে খবর শিরোনামে বিদ্ধ হয়ে রোজ আপনার জীবনের অঙ্গ হয়ে ওঠে? কিংবা যদি হঠাৎ সেই ঘটনাই আপনার সঙ্গে কখনও ঘটে যায় বা আপনার প্রিয়জনই সেই ঘটমনার সঙ্গে মিশে যায় ! আপনার মগজে তখন যে চিন্তাভাবনার স্রোত বয়ে যাবে, তার রং-ই হয়তো ‘পিঙ্ক’ ৷
এটা বললে হয়তো একদম ভুল বলা হবে না যে পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর এই ছবি বলিউডের এ যাবৎ সবচেয়ে সাহসী, বলিষ্ঠ সমসাময়িক ছবি ৷ ১৯৯৩ সালে রাজ কুমার সন্তোষীর হাত ধরে মুক্তি পেয়েছিল ‘দামিনি’ ছবিটি ৷ যে ছবি আলোড়ন তুলেছিল গোটা দেশে ৷ তবে সেই সময়টা ছিল অন্যরকম৷ এর পর গোটা দেশ বহুবার ধর্ষণ দেখেছে, গোটা দেশ বহুবার নারীর প্রতি অত্যাচার দেখেছে ৷ গর্জেও উঠেছে ৷ তাই তো নারীর মৃত্যু হয়েছে, জন্মেছে নির্ভয়া ৷ সেই নির্ভয়ার সময়ে দাঁড়িয়ে ‘পিঙ্ক’ জোরে সমাজের গালে থাপ্পর ছাড়া আর কিছু নয় !
তা ‘পিঙ্ক’ ছবির গল্পটা কী? কী-ই বা বলতে চেয়েছে এই ছবি? পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর এই ছবির সবচেয়ে বড় সবল জায়গাই হল, এই ছবি কোনও ধরণের নীতিবাচক কথা বলতে চায়নি ৷ বরং তাস গুলোকে সাজিয়ে রেখে চুপচাপ খেলা দেখিয়ে গিয়েছে ৷
দিল্লিতে চাকরীরত তিনটি মেয়ে ৷ তিনজনেই থাকে একই ফ্ল্যাটে ৷ আর ছবিটা শুরু হয় এই তিনজনের এক ক্রাইসিস থেকেই ৷ তারপর পুরো ছবিটাই কোর্টরুম ড্রামা ৷ কিন্তু ঘটনাবলি বার বার ফিরে আসে ছবির প্রতিটি পর্যায়ে ৷
‘পিঙ্ক’ ছবির আসল শক্তিশালি জায়গাই হল ছবির চিত্রনাট্য ৷ পরিষ্কার গল্প, টানটান উত্তেজনা ৷ আর এর সঙ্গে বাড়তি প্রাপ্তি প্রত্যেকটি অভিনেতা-অভিনেত্রীর পারফেক্ট অভিনয় ৷
‘পিঙ্ক’ ছবি নারীবাদী নয় ৷ বরং ‘পিঙ্ক’ ছবি সচেতন মনকে আরও একটু খোঁচা মারার ছবি ৷ খোলা চোখকে আরও একটু বেশি খোলার ছবি এই ‘পিঙ্ক’৷
তাপসী পান্নু, কীর্তি কুলকার্নি, অ্যান্দ্রিয়া একেবারে পারফেক্ট ৷ তবে ছবির সবচেয়ে শক্তিশালি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন কিন্তু এই ছবিতে একটু দুর্বল উকিল চরিত্রে ৷ অমিতাভের ইমেজের সঙ্গে ছবির ‘বোল্ড’ সংলাপ গুলো কেমন যেন বেমানান ৷ বরং কোর্ট রুমে অমিতাভকে একহাত নিয়েছেন অভিনেতা পীযূষ মিশ্রা !