ডুডল বানিয়ে বাংলার কিংবদন্তি সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানাল গুগল

Last Updated:

প্রথাগত বাংলা সাহিত্যের রূপ-রস-গন্ধ ছিল তাঁর লেখনীতে। ছিল পারিবারিক, সাংসারিক টানাপোড়েন। হৃদয় নিঙড়ানো চাপা অভিমান, প্রেমেরও যোগান ছিল অফুরান।

#কলকাতা: প্রথাগত বাংলা সাহিত্যের রূপ-রস-গন্ধ ছিল তাঁর লেখনীতে। ছিল পারিবারিক, সাংসারিক টানাপোড়েন। হৃদয় নিঙড়ানো চাপা অভিমান, প্রেমেরও যোগান ছিল অফুরান। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়েই তিনি হয়ে উঠতে পেরেছিলেন শবরদের মা, হাজার চুরাশির মা। মেদবিহীন, বাহুল্যবর্জিত কলমের প্রতিটি আঁচড়ে ঝরে পড়েছিল প্রান্তিক মানুষের হাহাকার, অবহেলিত, দুঃস্থ মানুষের কান্না। সেই কিংবদন্তি সাহিত্যিকের জন্মদিনে ডুডল বানিয়ে শ্রদ্ধা জানাল জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন মহাশ্বেতা দেবী ৷ ২০১৬ সালের ২৮ জুলাই তিনি প্রয়াত হন।
বাবা মণীশ ঘটক। কল্লোল যুগের প্রখ্যাত সাহিত্যিক। কাকা চলচ্চিত্র জগতের মাইলস্টোন ঋত্বিক ঘটক। তাই সাহিত্যপ্রেম জিনগত। বিশ্বভারতীতে পড়াশোনার সময় থেকেই লেখালেখির সঙ্গে হাতেখড়ি। তবে সাধারণ মানুষের জন্য ভাবনা শুরু স্বামী বিজন ভট্টাচার্যের সান্নিধ্যে, গণনাট্যের সৌজন্যে। পরবর্তীকালে অধ্যাপনার কাজ শুরুর সঙ্গেই বদলে যায় লেখার ধরন। বিজয়গড় কলেজে পড়ানোর পাশাপাশি পা রাখেন সাংবাদিকতায়। ভাবনা-চিন্তার জগতে প্রবেশ করে দরিদ্র, প্রান্তিক আদিবাসী মানুষ, সমাজ যাঁদের 'অনগ্রসর' তকমা এঁটে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রেখেছে। জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেলেন মহাশ্বেতা। অবহেলিত, শোষিতদের জন্য ভাবনা শুধু লেখনীতেই থমকে থাকেনি, নিজের তাগিদেই ছুটে বেড়িয়েছেন বাংলা-বিহার-ঝড়খণ্ডের জঙ্গলমহলে। ছত্তীসগড়-মধ্যপ্রদেশের অসহায়, ক্ষুধার্ত মানুষগুলোর দাবিদাওয়ায় সোচ্চার হয়েছেন বারবার। তাঁর বলিষ্ঠ চাঁচাছোলা লেখনীতে নিজেদের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে লোধা-শবরেরা।
advertisement
সমাজের তথাকথিত পিছিয়ে পড়া, ফেলে দেওয়া মানুষেরাই একে একে এসে ভিড় করেছেন তাঁর খাতার পাতায়। মহাশ্বেতা জন্ম দিয়েছেন 'হাজার চুরাশির মা', 'অরণ্যের অধিকার', 'অগ্নিগর্ভ','তিতুমীর'-এর। তাঁর নির্মেদ ভাষা নতুন পথ তৈরি করেছে বাংলা সাহিত্যে। সমালোচকরা সেই ভাষাকে কাঠখোট্টা বললেও তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, চিরকালীন সাহিত্যের অলংকার ছাড়াই কীভাবে নির্মম কথার ইট-পাথরে উপন্যাসের অট্টালিকা গড়া যায়।
advertisement
advertisement
'অরণ্যের অধিকার'-এর জন্য ১৯৭৯-তে পান সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার। সম্মানিত হন ‘জ্ঞানপীঠ’, 'পদ্মশ্রী' এবং 'পদ্মবিভূষণ' উপাধিতে। সাহিত্য, সাংবাদিকতা এবং সৃজনশীল কমিউিনিকেশনের জন্য 'রমন ম্যাগসেসে' পুরস্কার আসে তাঁরই ঝুলিতে। একাধিক ভাষায় অনুদিত হয়েছে তাঁর লেখা। তাঁর 'রুদালি', 'হাজার চুরাশির মা' ঝড় তুলেছে সেলুলয়েডেও।
মানুষের স্বার্থে পথে নেমেছেন, সরব হয়েছেন। রাজনীতির আঙিনায়ও ছুঁয়ে গিয়েছেন নিজস্বতা বজায় রেখেই। বাংলার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের অন্যতম কাণ্ডারী। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে শাসক দলের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন মহাশ্বেতা। নিজস্ব সিগন্যাচারেই রেখে গিয়েছেন প্রতিবাদের ছাপ। তাঁর হাত ধরেই পালাবদলের দিন আসে, তাঁর হাত ধরেই শিরোনামে উঠে আসে দীর্ঘদিনের বঞ্চিত বাস্তুতন্ত্র।
advertisement
বিশ্বাস করতেন, সত্যিকারে ইতিহাস তৈরি করতে পারেন সাধারণ মানুষই। প্রায়শই বলতেন শোষিত, নিষ্পেষিত অথচ হার না মানা মানুষেরাই তাঁর ইনস্পিরেশন। তাই হয়তো বয়স বা অসুস্থতা কোনওটাই প্রতিবন্ধক হতে পারেনি তাঁর একরৈখিক পথের। অবলীলায় তৈরি করেছেন সাধারণ যাপনের প্রতিসাহিত্য। মহাশ্বেতাদেবী সচেতনভাবেই কখনও চেষ্টা করেননি সাব-অলটার্নড হওয়ার। চেষ্টা করেননি উত্তর-আধুনিক হয়ে ওঠার। যদিও বাংলা সাহিত্যমহল তাঁকে কখনও মানিকের উত্তরসূরি ভেবেছে, কখনও তারাশঙ্করকে খুঁজে বেড়িয়েছে তাঁর লেখায়। কিন্তু মহাশ্বেতাদেবী তাঁর ব্যতিক্রমী, স্বতন্ত্র পথ ছাড়েননি আমৃত্যু।
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
ডুডল বানিয়ে বাংলার কিংবদন্তি সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানাল গুগল
Next Article
advertisement
Durga Puja Weather Update: নবমীর রাত থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন ! তার আগে সপ্তমী-অষ্টমীতে কী পূর্বাভাস? বৃষ্টি কি বাধ সাধবে ঠাকুর দেখায়
নবমীর রাত থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন ! সপ্তমী-অষ্টমীতে কী পূর্বাভাস? বৃষ্টি কতটা হতে পারে
  • নবমীর রাত থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন !

  • তার আগে সপ্তমী-অষ্টমীতে কী পূর্বাভাস?

  • বৃষ্টি কি বাধ সাধবে ঠাকুর দেখায়

VIEW MORE
advertisement
advertisement