গোপনাঙ্গে যন্ত্র, ইলেকট্রিক শক, অজানা পিল সেবন - নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দিলেন মহিলা

Last Updated:
#ওয়াশিংটন: অকথ্য অত্যাচার ৷ এমন অত্যাচারের কথা শুনলে পাষাণ হৃদয়ও হয়তো ঘাবড়ে যাবে ৷ আর সেই অত্যাচারের বর্ণনা সামনে আসতেই গোটা দুনিয়া জুড়ে ইতিমধ্যেই হইচই পড়ে গিয়েছে ৷ উঠেছে নিন্দার ঝড় ৷
গতকাল সোমবার ওয়াশিংটনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখোমুখি হয়েছিলেন মিহিলগুল তুরসুন নামে বছর ২৯-এক মহিলা ৷ চিনের উইঘুর প্রদেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের উপর চিন সরকারের নারকীয় অত্যাচারের বর্ণনা দিচ্ছিলেন তিনি ৷ তখন তাঁর জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা সাংবাদিকদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন মিহিরগুল ৷ শুধু তাঁর কথা আর হল ভর্তি সাংবাদিকে, চিত্র সাংবাদিকদেরে নিঃশ্বাস ছাড়া আর কোনও শব্দই নেই ৷ মাঝে মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন চিনের উইঘুর প্রদেশে জন্ম নেওয়া ওই মহিলা ৷
advertisement
‘অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছিল। আমি বারবার ওঁদের কাছে আমাকে মেরে ফেলতে অনুরোধ করেছি’, এমনটা বলেই কথা শুরু করেন ৷ কিন্তু কেন ?
advertisement
এ সম্পর্কে জানাতে গিয়ে নিজের সম্পর্ক এবং নিজের সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন ওই মহিলা ৷ উচ্চশিক্ষার জন্য মিশরের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়তে গিয়েছিলেন ৷ আর সেখানে গিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে আলাপ হয় ৷ সেই আলাপ শেষ অবধি পরিণতি পায় ৷ বিয়ে করেন তাঁরা ৷ সেখান থেকে আবার চিনে ফেরার পরই যেন সব কিছু বদলে যায় ৷ পুরোপুরি ঘেঁটে যায় তাঁর জীবনটা ৷ তাঁকে বন্দিশিবিরে নিয়ে যায় চিন সরকার ৷ তিন দফায় আটক করা হয় তাঁকে ৷ আস সেখানেই তাঁর উপর চলে নির্মম অত্যাচার ৷ আর সেই ঘটনার অণুপুঙ্খে বিবরণ দেন তিনি ৷
advertisement
প্রথমবার যখন তাঁকে বন্দি করা হয়, তখন তাঁকে মাস তিনেক আটক করে রাখা হয়েছিল ৷ কোনও কারণ ছাড়াই বন্দি দশায় কাটাতে হয়েছিল ৷ ওই সময়েই মারা যায় তাঁর কনিষ্ঠ সন্তান।
বন্দি থাকাকালীন সেখানে আটক অন্যান্য বন্দিদের মতো তাঁকেও অজানা ওষুধ খাওয়ানো হত ৷ খেতে হত সাদা রংয়ের এক তরল ৷ আর এই সব খাওয়ার পরেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোনও জ্ঞান থাকতো না ৷ জ্ঞান ফেরার পর সারা শরীর অসাড় লাগতো ৷ কী হয়েছে তা বোঝা যেত না এক্কেবারেই ৷ শরীরের বিভিন্ন অংশ দিয়ে রক্ত বের হত ৷ আর এমন অত্যাচারের কারণে তিন মাসের মধ্যে ন’জন মহিলা মারা গিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন মিহিরগুল ৷
advertisement
অত্যাচারের শেষ এখানেই নয় ৷ ক্যামেরার সামনেই সমস্ত মহিলাকে মলমূত্র ত্যাগ করতে হত ৷ যখন মনে হত তখনই চিনের কম্যুনিস্ট পার্টির স্তুতিতে গান করার জন্য জোর জবরদস্তি করা হত ৷ ২০১৭ সালে দ্বিতীয়বার আটকের সময় অত্যাচারের মাত্রা নাকি মাত্রাছাড়া ছিল ৷ ‘‘চারদিন ধরে চলেছি জিজ্ঞাসাবাদ ৷ না একটুও ঘুমোতে দেওয়া হয়নি ৷ এরপর একদিন আমার মাথা মুড়িয়ে একটি চেয়ারের উপর বসিয়ে দেওয়া হল ৷ পরানো হল একটি হেলমেট ৷ ইলেকট্রিকের শকে তখন আমার গোটা শরীর থর থর করে কাঁপছে ৷ আমার ধমনীগুলো যেন ফেঁটে যাবে এমন অবস্থা ৷ আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। শুধু মনে আছে, আমি উইঘুর বলে ওরা আমাকে গালি দিচ্ছিল। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি ৷ গোপনাঙ্গে যন্ত্র ঢুকিয়েও পরীক্ষা করা হল ৷ এত অত্যাচার না করে, আমায় এক্কেবারে মেরে ফেলার জন্য কাকুতি মিনতি করছিলাম ৷’’
advertisement
তৃতীয়বার আটকের পরে তিনি সন্তানেদের নিয়ে মিশরে যাওয়ার অনুমতি পান ৷ আর সেখানে পৌঁছে তৎক্ষণাৎ যোগাযোগ করেন কায়রোর মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে ৷ নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন তিনি ৷ তাঁকে আশ্রয় দেয় আমেরিকা। এই মুহূর্তে তিনি বসবাস করেছেন আমেরিকার ভার্জিনিয়ায়। তাঁর জন্মস্থানের কথা, সমস্ত কালো ঘটনার কথা ভুলে যাওয়ার জোরদার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মিহিরগুল ৷
advertisement
উইঘুর প্রদেশের মুসলিমদের উপর চিন সরকারের অত্যাচারের অভিযোগ যে এই প্রথম উঠল, তা কিন্তু নয় ৷ চিনের বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আনুমানিক ২০ লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের। গতকাল সোমবার আমেরিকার ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে পৃথিবীর ২৬টি দেশের ২৭০ জন গবেষক ও সমাজকর্মী উইঘুরদের ওপর অত্যাচার নিয়ে সারা পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে যৌথ বিবৃতি দেন। সেখানেই বক্তব্য রাখেন মিহিরগুল তুরসুন।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিদেশ/
গোপনাঙ্গে যন্ত্র, ইলেকট্রিক শক, অজানা পিল সেবন - নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দিলেন মহিলা
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement