ধড়ক রিভিউ: করণ জোহরের পাল্লায় পরে গণ্ডগোল পাকালেন জাহ্নবী-ঈশান
Last Updated:
জাত-পাত, বড়লোক-গরীব ৷ আর তার মাঝেই তুফান ওঠা প্রেম ৷ ‘এক দুজে কে লিয়ে’ থেকে ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’, ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ আর গুচ্ছ গুচ্ছ ছবি বলিউডের হাত ধরে দেখা ফেলা শেষ৷
#কলকাতা: জাত-পাত, বড়লোক-গরীব ৷ আর তার মাঝেই তুফান ওঠা প্রেম ৷ ‘এক দুজে কে লিয়ে’ থেকে ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’, ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ আর গুচ্ছ গুচ্ছ ছবি বলিউডের হাত ধরে দেখা ফেলা শেষ৷ ফ্রেশ হিরো-হিরোইন, একটা ফ্রেশ লোকেশন, ক্লাইম্যাক্সে মিল, নয় অমিল ৷ তাও বার বার একইভাবে ধরা দিয়েছে বলিউডের ‘সো-কল্ড’ লাভস্টোরি ৷ তবুও বলিউড কেন বার বার একই গল্পকে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে সিনেমার পর্দায় নিয়ে আসে? ঈশান খট্টর ও জাহ্নবী কাপুরের ‘ধড়ক’ প্রাথমিকভাবে এই একই অঙ্কতে তৈরি করা এক ছবি৷ তবে এক্সট্রা বলতে, বক্স অফিসে ঝড় তোলা মারাঠি ছবি ‘সইরাত’-এর এটা অফিসিয়াল রিমেক ৷ মানে, কপি-পেস্ট ব্যাপারটা একেবারে অনুমতি নিয়েই ৷ তবে প্রেক্ষাপট বদল, গল্পের এদিক-ওদিক বদল ৷ বরং বলা ভালো একেবারে মারাঠি প্যাকেজ থেকে সোজা করণ জোহরের হাতে পরে ‘ধড়ক’ ঝকঝকে বলিউডি ৷ অন্তত, ১৩৭ মিনিট ধরে বসিয়ে রাখা ধড়ক দেখে এটাই মাথায় ভন ভন করবে ৷ আর প্রশ্ন উঠবে, কেন শশাঙ্ক খৈতান এই ছবিটি তৈরি করলেন? আর কেনই বা প্রথম ছবি হিসেবে জাহ্নবী এই ছবিটা বেছে নিলেন? কারণ, এই ছবিতে সুন্দর দেখানো ছাড়া, আর কোনও কিছুই করতে হয়নি জাহ্নবী কে ৷ এব্যাপারে বেশিরভাগ দোষটা অবশ্য চিত্রনাট্যের !
advertisement
না চাইলেও, মাথায় এসেই যাবে মারাঠি ‘সইরাত’ ৷ এতটাই স্ট্রং ছিল নাগরাজ মনজুলের চিত্রনাট্য ৷ এতটাই স্ট্রং ছিল রিঙ্কু রাজগুরু ও আকাশ তোসারের অভিনয় ৷ যা কিনা শেষ অবধি হতবাক করেছিল ৷ কিন্তু ঠিক এর উল্টোটাই করল ‘ধড়ক’ ৷ জাহ্নবী শুধুমাত্র প্রেমের দৃশ্যে, গানের দৃশ্যে ‘হিরোইন’ হয়ে উঠলেন ৷ অন্যান্য দৃশ্যে একেবারেই ফিকে হল জাহ্নবীর অভিব্যক্তি ! জাহ্নবীর সঙ্গে রিঙ্কুর তুলনা আসলেও, শ্রীদেবীর সঙ্গে জাহ্নবীর তুলনা অনর্থক ৷ অন্যদিকে, ঈশান চেষ্টা করেছেন ৷ বলা ভালো, গোটা ছবি জুড়ে ঈশানই চেষ্টা করে গিয়েছেন, ‘ধড়ক’-কে ‘সইরাত’ করে তুলতে ৷ বাদ বাকিটা করণ জোহরের ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ ৷
advertisement
‘সইরাত’-এর গ্রামের গল্পকে পরিচালক শশাঙ্ক খৈতান ‘ধড়ক’-এ নিয়ে এসে ফেললেন উদয়পুরের রাজমহলে৷ বড় বড় রাজপ্রাসাদ ৷ উদয়পুরের স্থাপত্য ঢাকা দিয়ে ফেলল, ‘নিরীহ’ প্রেমকে ৷ যা কিনা এই ছবির সবচেয়ে শক্তপোক্ত জায়গা হয়ে উঠতে পারত ৷ অন্তত, ‘সইরাত’-এর ক্ষেত্রে যেটা হয়ে উঠেছিল ৷ কিন্তু ‘ধড়ক’ যেন হয়ে উঠল উদয়পুরের ট্র্যাভেল-ট্যুরিজমের বিজ্ঞাপন ৷
advertisement
করণ জোহরের ছবি করার দৃষ্টিভঙ্গিই হয়তো কাল হল ‘ধড়ক’-এর ক্ষেত্রে ৷ আর যা থেকে কিছুতেই বের হতে পারলেন না শশাঙ্ক ৷ বের হতে পারলেন না জাহ্নবী ও ঈশানও ৷ এমনকী, বহুদিন পর অভিনয়ে ফিরে এসে আশুতোষ রানাও পর্যন্ত হার মারলেন করণ জোহরের মেকিংয়ের কাছে ৷
advertisement
‘সইরাত’ ছবিতে প্রথমে একটা মিষ্টি প্রেমের জন্ম ৷ তারপর ভালোবাসার জন্য সব ছেড়ে দেওয়া ৷ এবং দ্বিতীয় পর্বে সম্পর্কে হঠাৎ জটিলতা রীতিমতো দর্শকের মগজে হাতুড়ি মারে ৷ বিশেষ করে ছবির একেবারে শেষ পর্যায় ৷ কিন্তু ধড়ক ছবিতে প্রেমটা থাকলেও, অন্যান্যগুলো মিসিং ৷ আর এই ‘অন্যান্য’ গুলোই অন্য সব লাভস্টোরি থেকে আলাদা করেছিল সইরাতকে ৷ সেটা পারল না শশাঙ্কের ধড়ক !
advertisement
অভিনয়ের দিক থেকে ঈশান নিজের একশো শতাংশ দিয়েছেন ৷ জাহ্নবী চেষ্টা করেছেন ৷ তবে জাহ্নবীর একটা সুন্দর স্ক্রিন প্রেজেন্স রয়েছে, তা ধড়ক-এ স্পষ্ট ৷ হয়তো পরের ছবিতে চাইলে তাকও লাগাতে পারেন তিনি ৷
‘ধড়ক’ এমন একটা ছবি, যা কিনা দেখতে সুন্দর লাগলেও, গভীর ছাপ ফেলে না ৷ ‘ধড়ক’ এমন একটা ছবি যা নতুন কিছু দিতে পারে না দর্শককে ৷ ১৩৭ মিনিট ধরে শুধুই একটা সুন্দর কাঠামো সামনে ধরে রাখে ধড়ক ৷ যা এক সময় বিরক্তি ছাড়া আর কিছুই দেয় না !
advertisement
Location :
First Published :
July 20, 2018 10:29 AM IST