'আলো না জ্বললে সব অন্ধকার হয়ে যায়', ওদের গান বন্ধ, তাই রোজগারও বন্ধ!‌ পানশালার গায়িকারা এখন খুঁজছেন বাঁচার রাস্তা

Last Updated:

গোটা সংসার নিয়ে খুব সংকটে পড়েছে।শুধু অপেক্ষা,কবে এই পরিস্থিতি কাটবে!

#কলকাতা:  রাত্রি তখন দুটো ঝলমলে পোষাক পরা, গাড়ির পেছনের গেট খুলে প্রথমে পা দুটো নামালেন।তারপর ক্লান্তি ভরা শরীর নিয়ে ডান হাত দিয়ে কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে ,ডানহাত দিয়ে গাড়িতে বসা লোকটিকে টাটা জানিয়ে সোজা লিফ্টের দিকে চলে গেল। এটা প্রতিদিনের নিয়ম। দারোয়ান তাড়াহুড়ো করে এসে লিফটের গেটটা খুলে দিল। ম্যাডাম উপরে চলে গেলেন।
মহুয়া (পরিবর্তিত নাম) ৩০ এর মধ্যে বয়স।চেহারায় যে কোনো বয়সের পুরুষের মন গলিয়ে দেয় ।সিকিউরিটি থেকে পাড়ার দোকান সবাই ওকে ম্যাডাম বলেই ডাকে। ম্যাডামের মানিব্যাগে সব সময় পাঁচশো এবং দু হাজার টাকার নোট ভর্তি থাকে।রিকশাওয়ালাকে ভাড়ার থেকে কিছুটা অতিরিক্ত প্রতিদিনই দেয়। তাই যেকোনো রিক্সাওয়ালা ওকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এগিয়ে আসে।
advertisement
মহুয়া কলকাতার একটি বিখ্যাত বারে গান করে। শুধুই মহুয়া নয় মহুয়ার মত বহু মেয়ে বারের ওপর নির্ভর করেই জীবন কাটায়। লকডাউন ঘোষণার আগে থেকেই বার গুলো সব বন্ধ হয়ে গেছে। এক মাসের কাছাকাছি কোন রোজগার নেই। প্রতিদিনই ব্যয় সংকোচন করতে করতে একেবারে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে ওদের।
advertisement
মহুয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মাসে পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার টাকা ওর রোজগার। তাহলে এই এক মাসের মধ্যেই এতটা খারাপ অবস্থা কেন হবে? প্রশ্নের পরিষ্কার উত্তর সংসারে ছয়জনকে টানতে হয়। যে ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে তার মাসিক ভাড়া  আঠেরো হাজার টাকা। সবকিছু নিয়ে বাইশ হাজার টাকা লাগে। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা অসুস্থ মা পঙ্গু ভাই ও এক ছেলে এক মেয়ে। তারা দুজনেই ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে পড়ে।  'আমার যতটুকু রোজগার তার কাছাকাছি খরচা।' সংসারে রোজগেরে এই একজন।
advertisement
পড়াশোনা বলতে উচ্চমাধ্যমিক পাশ। উচ্চমাধ্যমিকে পড়াকালীন একটি ছেলেকে ভালবেসে বিয়ে করে।তারপর দুটি সন্তান হয় ।স্বামী বিদেশ যাওয়ার নাম করে সেই যে বেরিয়েছে, আর ফেরেনি বিদেশ থেকে।অল্প টাকার ভাড়ার-ঘর নিতে পারে। কিন্তু সেখানে থাকলে মাঝে মাঝে গান অনুশীলন, অতিথি আপ্যায়ন কিংবা রাতবিরেতে ফেরা ওটা আর হবেনা। যার জন্য এত টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া।  শুধু এই মহুয়া নয়, ঊর্মিলা,পায়েলরা একই পদ্ধতিতে রয়েছে।নিজেরা এমন ভাবে জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়েছে,যার কারণে ত্রাণ নেওয়ার মত মানসিকতা আর নেই ওদের।
advertisement
মহুয়ার বাবা একজন রিক্সাওয়ালা ছিল। মেয়ের রোজগারে এখন বাবু।  গোটা সংসার নিয়ে খুব সংকটে পড়েছে।শুধু অপেক্ষা,কবে এই পরিস্থিতি কাটবে!এখন আর বাইরে বেরোনো নেই।রাতে বাড়ি ফেরা নেই।কেউ এখন আর খোঁজ নেয় না।সন্ধ্যার পর যারা মদের নেশায় পাগল হত, নোট ছুঁড়ে দিত,তারা আর নেই।সবাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে।  ১লা বৈশাখে নতুন জামা,সারাদিন প্রচুর বন্ধুর শুভ কামনা,নতুন স্বপ্ন আজ আর নেই।শুধু যেন ৭ বছর আগের পরিণতি আবার হাত ছানি দিয়ে ডাকছে।তবুও ওদের একটাই প্রতিজ্ঞা।জিততে হবে।
advertisement
Shanku Santra
view comments
বাংলা খবর/ খবর/করোনা ভাইরাস/
'আলো না জ্বললে সব অন্ধকার হয়ে যায়', ওদের গান বন্ধ, তাই রোজগারও বন্ধ!‌ পানশালার গায়িকারা এখন খুঁজছেন বাঁচার রাস্তা
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement