অর্থনৈতিক সংকট এবং মন্দা থেকে বাঁচাতে পারে ব্যাঙ্ক! পরামর্শেই এল নোবেল!

Last Updated:

Nobel in economy: গবেষণার মুল বিষয় ছিল, ছোট আমানতকারীও ব্যাঙ্কের ভরাডুবি থেকে বাঁচাতে ভরপুর যোগদান দেয়।

অর্থনীতিতে ২০২২-এর নোবেল পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করল রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস। এবার নোবেল পাচ্ছেন বেন এস বার্নানকে, ডগলাস ডব্লিউ ডায়মন্ড এবং ফিলিপ এইচ ডিবভিগ। ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংকটের ওপরে গবেষণার জন্য এবারের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে এই তিনজনকে।
এই ত্রয়ী বিশ্বকে ব্যাংক এবং আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে সম্পর্ক বোঝাতে সহায়তা করেছেন। তাঁদের গবেষণার মুল বিষয় ছিল যে, ব্যাঙ্কের ছোট আমানতকারিও ব্যাঙ্কের ভরাডুবি থেকে বাঁচাতে ভরপুর যোগদান দেয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডগলাস ডব্লিউ ডায়মন্ড এবং সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিপ এইচ ডিবভিগ- দু'জন অর্থনীতিবিদ একটি মডেল তৈরি করেছিলেন যা ব্যাঙ্ক এবং অর্থনৈতিক সংকটের গতিবিধি ব্যাখ্যা করেছিল।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন- ঘরে বসেই খুলে নেওয়া যাবে এনপিএস অ্যাকাউন্ট! রইল তার সহজ উপায়!
মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রাক্তন প্রধান বার্নানকে এখন ওয়াশিংটনের দ্য ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের অনুসন্ধানগুলি বারবার বাস্তবের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক প্রমাণিত হয়েছে, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কর্তারা ২০০৮ সালে আর্থিক মন্দার সময় এবং ২০২০ সালে মহামারী শুরুর সময় বাজারের অবস্থা থেকে শিক্ষা নিয়েছেন।
advertisement
এই নীতিনির্ধারকদের মধ্যে বার্নানকে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যিনি ২০০০ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তা ছিলেন। তাঁদের গবেষণাটি এখন ভীষণ প্রাসঙ্গিক। বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি মুদ্রাস্ফীতি রোধের জন্য যে ভাবে দ্রুত গতিতে সুদের হার বাড়িয়ে তুলছে, যা বাজারকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
ছোট আমানতকারিও প্রভাবশালী
বার্নানকে ১৯৩০ সালের আর্থিক মন্দার কথা তুলে ধরে নিজের গবেষণায় লিখেছেন যে, অর্থনীতিকে বাঁচাতে যেমন ব্যাঙ্কের ভূমিকা প্রবল, তেমনই ব্যাঙ্কে বাঁচাতে আমানতকারিদের ভুলে গেলে চলবে না।
advertisement
ছোট আমানতকারিরাও খুব বড় ভূমিকা পালন করে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, সে সময় সব আমানতকারি যদি ব্যাঙ্ক থেকে নিজেদের আমানত তুলে নিতে চাইত তবে অর্থনীতির আর ঘুরে দাঁড়ান সম্ভব হত না। কারণ ব্যাঙ্ক তখনই মজবুত হবে যখন তার কাছে অর্থের জোগান থাকবে। বার্নানকে মনে করেন যে কোন অর্থনৈতিক সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ছোট আমানতকারিদের ভূমিকা অবহেলা করা যাবে না।
advertisement
২০০৮ সালের সঙ্কটে ব্যাঙ্কের ভূমিকা
বার্নানকে ২০০৮ সালে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তা ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে বের করে আনতে তার ভূমিকা ছিল বেশ। সে সময় তিনি ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার শূন্য করে দিয়েছিলেন।
এই পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের চিন্তা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিল। আর লোকজনও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে থেকে ঋণ নিতে কার্পণ্য করেনি। বলা যায় বার্নানকে ঋণ বিলি করে অর্থনীতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন।
advertisement
মার্কিন ফেড রিজর্ভের বর্তমান প্রধান জেম পভেল ২০২০ সালের করোনা মহামারীর সময় ঋণের উপর সুদের হার শূন‍্যের কাছাকাছি করেছিলেন। ফলে অর্থনীতিতে অর্থের কম হয় না। কোন মতে বেঁচে যায় অর্থনীতি।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুজোর পরেই সোনার দামে বিশাল ধস! ২২ ও ২৪ ক্যারাটে ১৭ হাজার সস্তা
মনে রাখতে হবে যে, কোম্পানিগুলির বিষয়ে ব্যাঙ্কগুলির বিশেষ অন্তর্দৃষ্টি রয়েছে এবং যখন একটি ব্যাঙ্ক ব্যর্থ হয়, তখন এই সমস্ত তথ্য হারিয়ে যায়। একটি ব্যর্থ ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা মেরামত করতে অনেক বছর সময় নেয় এবং এই সময়ের মধ্যে অর্থনীতি খুব খারাপ হয়ে পড়ে। বার্নানকের ব্যাখ্যা বোঝা যায় কেন অর্থনৈতিক মহামন্দা এত দীর্ঘায়িত সংকটে পরিণত হয়েছিল।
advertisement
জমা অর্থে কতটা জরুরি সরকারি গ্যারান্টি
একই গবেষণায় জড়িত অন্য দুই অর্থনীতিবিদ, ডায়মন্ড এবং ডিবভিগ, অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময়ে ব্যাঙ্কগুলির বিভিন্ন ভূমিকা নিয়েও গবেষণা করেছেন। তাঁরা তাঁদের গবেষণা পত্রে লিখেছেন যে যদি স্বল্পমেয়াদী ঋণ দীর্ঘমেয়াদী ঋণে রূপান্তরিত হয়, তাহলে এর রূপান্তরের সঙ্গে সম্পর্কিত ঝুঁকিগুলি কী কী।
তাঁরা আরও বলেন, ব্যাঙ্কের আমানতের ওপর সরকারি গ্যারান্টি আর্থিক সংকটকে অনেকাংশে বাড়তে দেয় না। কারণ সরকারি গ্যারান্টি আমানতকারীদের মধ্যে একটা আস্থা তৈরি করে। তার ফলে আমানতকারিরা নিজেদের অর্থ ব্যাঙ্কে রাখতে ভরসা পায়। আর এই বাড়তি পাওয়া অর্থ ব্যাঙ্ক আরও ঋণ বিতরণে ব্যাবহার করতে পারে।
ভারতীয় ব্যাঙ্ক কী শিখবে
ভারত সেই ২০১৩ সাল থেকে বিক্ষিপ্তভাবে ব্যাঙ্কিং সঙ্কটের মুখোমুখি হচ্ছে যেখানে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক ব্যর্থ হয়েছে। বার্নানকের গবেষণা দেখায় যে কী ভাবে একবার সংকট শুরু হলে, তা শুধু ব্যাঙ্কিং সমস্যাকেই দীর্ঘায়িত করতে পারে না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও কমিয়ে দিতে পারে। ডায়মন্ড-ডিবভিগ-এর গবেষণা দেখায় যে কী ভাবে কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক দুর্বল কর্মক্ষমতা তাদের পতনের দিকে পরিচালিত করে।
উল্লেখনীয় যে, অন্য পাঁচটি নোবেল পুরস্কার যেখানে ১৯০১ সাল থেকেই দেওয়া হচ্ছে, অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় ১৯৬৯ সালে । সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইডিশ উদ্ভাবক, রসায়নবিদ এবং প্রকৌশলী আলফ্রেড নোবেলের সম্মানে অর্থনীতি পুরস্কারটি প্রতিষ্ঠিত করেছিল।
বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
অর্থনৈতিক সংকট এবং মন্দা থেকে বাঁচাতে পারে ব্যাঙ্ক! পরামর্শেই এল নোবেল!
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement