পেটে খিদে, বুকে আগুন! জেদ ধরলে বাঙালি বিশ্বজয় করে, প্রমাণ করলেন ভারোত্তোলক অচিন্ত্য
- Published by:Suman Majumder
- news18 bangla
Last Updated:
২০১৯ সালে Reliance Foundation Youth Sports-এর সঙ্গে যুক্ত হন অচিন্ত্য। তার পর থেকেই স্বপ্নের উড়ান।
advertisement
1/5

প্রথম চেষ্টায় ১৪১ কেজি। এর পর ক্লিন অ্য়ান্ড জার্ক-এ ১৭২ কেজি। এমন ওজন ট্রেনিংয়ের সময় হামেশাই তোলেন অচিন্ত্য শিউলি। কিন্তু বড় মঞ্চে ছোট্ট একটা টেকনিক্যাল এরর করে ফেলেছিলেন। কোচিং স্টাফরা ভেবেছিলেন, অচিন্ত্য হয়তো আর পারবেন না। কিন্তু বাঙালি জেদ ধরলে বিশ্বজয় করে। অচিন্ত্যও শেষ পর্যন্ত ৩১৩ কেজি ওজন তুলে জুনিয়র ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে রূপো জিতলেন হাওড়ার দেউলপুরের ছেলে।
advertisement
2/5
১৯ বছরের অচিন্ত্যকে এই বয়সে কত প্রতিবন্ধকতা যে কাঁধে নিয়ে ছুটতে হচ্ছে! বাবা কখও রিক্সা চালাতেন। কখনও দিন-মজুরি করতেন। সংসার চলছিল কোনওরকমে। ২০১৩ সালে হঠাত্ করেই অচিন্ত্যর বাবা মারা গেলেন। বাড়ির বড় ছেলে অলোক তখন ভারোত্তোলক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু সংসারের ঘানিতে মুখ থুবড়ে পড়লেন অলোক হঠাত্ করেই। কোনওরকমে দমকলে অস্থায়ী কাজ জুটল। বাবার পর তাঁর কাঁধেই সংসারের সব দায়িত্ব। আর অচিন্ত্য তখন সবে ওজন তুলতে শুরু করেছে। তাও পাড়ারই একটি ছোট্ট ক্লাবে।
advertisement
3/5
ভারোত্তোলন তো আর চাট্টিখানি কথা নয়। সঠিক পদ্ধতিতে অনুশীলন, বিজ্ঞানসম্মত ডায়েট, চোটমুক্ত থাকা- এই তিনটি ভারোত্তোলনের প্রধান শর্ত। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। সেখানে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ খাবার পাওয়াটাই অচিন্ত্যর কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তবে দাদা অলোক যতটা সম্ভব টাকা বাঁচিয়ে ভাইয়ের জন্য পুষ্টিকর খাবার জোগাড়ের চেষ্টা করেছে। ভাই অচিন্ত্য দাদার জীবন সংগ্রামের দামও দিয়েছে।
advertisement
4/5
কমনওয়েলথ গেমসের দুই বিভাগে সোনা, যুব এশিয়ান চ্যাম্পিনশিপে রুপো ছাড়াও বাংলার হয়ে একাধিক পদক জিতেছেন অচিন্ত্য। অভাবের সঙ্গেই লড়তে হয়েছে সব থেকে বেশি। দেউলপুরের টিনের চালের বাড়ির ভাঙা পাঁচিল থেকে ঝুলন্ত পদকগুলো তবুও অচিন্ত্যকে স্বপ্ন দেখিয়েছে। সেই স্বপ্নই সফল হল এতদিনে। একদিনের জন্যও লক্ষ্য থেকে সরেননি অচিন্ত্য। এক মিনিটের জন্যও তাঁর মনে হয়নি, এই লড়াই জেতা যাবে না।
advertisement
5/5
২০১৯ সালে Reliance Foundation Youth Sports-এর সঙ্গে যুক্ত হন অচিন্ত্য। তার পর থেকেই স্বপ্নের উড়ান। জাতীয় কোচ বিজয় শর্মা বলছিলেন, অচিন্ত্যর খেলার প্রতি আনুগত্য দেখার মতো। পরিশ্রম করতে পারে প্রচুর। দেশের জন্য বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখে। আর তার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে। বাংলার ছেলে। বাঙালির গর্ব। এমন কত প্রতিভা দারিদ্রের অন্ধকারে হারিয়ে যায়। তবে অন্ধকার ফুঁড়ে অচিন্ত্যর মতো নক্ষত্রদেরও দেখা মেলে। বাংলার ঘরে ঘরে এমন অচিন্ত্যরাই তো আশার আলো।