Kushinagar News: ডিভোর্সের পর প্রাক্তন স্ত্রীর ফোন, প্রেমঘন স্বরে বললেন, 'রাতে তুমি একবার...' খুশি মনে এলেন স্বামী, তার পর?

এক সময় যে স্বামীর সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন, সেই স্বামীকেই ডিভোর্স। তার পর একদিন রাতে ফের ফোন পেলেন স্বামী। প্রেমঘন স্বর স্ত্রীর। বললেন, "রাতে একবার আসবে?" এলেন স্বামী। খুশি চলকে পড়ছিল তাঁর। কিন্তু, তার পর যা হল, ভাবতেও পারছেন না।

যুবকের নাম শিবম প্রতাপ সিংহ। ২০১৯ সালে সীমা সিংহের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। কিন্তু ২০২২ সালে সীমা স্বামীর বিরুদ্ধে পণ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন এবং সংসার ছেড়ে পদরৌনা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। এর মধ্যেই সীমার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে নূর আলম নামে এক যুবকের।

স্বামীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে সীমা ও তার প্রেমিক নূর আলম। একদিকে শিবমের সম্পত্তির লোভ, অন্যদিকে প্রেমিকের প্রতি আসক্তি—এই দুই কারণে সে চরম সিদ্ধান্ত নেয়। গত ৩ জুন রাতে শিবমকে ফোন করে দেখা করতে ডাকে সীমা।

ঘটনাটি কুশিনগরের কুবেরস্থান থানার অন্তর্গত সাখনিয়া গ্রামের। বরগাঁও এলাকার বেলভানিয়া খালের কাছে আসতে বলে সে। গভীর রাতে শিবম সেখানে পৌঁছাতেই ওত পেতে থাকা নূর আলম, তার বন্ধু নাসিম এবং অন্যান্য সহযোগীরা তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করে।

শুধু খুন করাই নয়, হত্যার প্রমাণ লোপাটের জন্য এমন ছক কষেছিল, যাতে খুনিরা চিহ্নিত না হয়। তবে শেষরক্ষা হল না। পাঁচ মাসের তদন্তের পর স্বামী হত্যার অভিযোগে স্ত্রী ও তার প্রেমিক-সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও এখনও মৃতদেহের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

খুনের পর মৃতদেহ ও শিবমের বাইক একটি বোলেরো গাড়িতে তুলে নেয় খুনিরা। তারপর নূর আলমের ভাই শাহ আলমের সাহায্যে দেহটি জঙ্গলে সিসওয়া রেগুলেটরের কাছে ফেলে দেওয়া হয়।

সন্দেহের তির প্রথম থেকেই সীমার দিকে থাকলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ কোনও তথ্য হাতে পায়নি। অবশেষে তদন্তের পরিধি বাড়াতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। জানা যায়, সীমা নিজেই স্বামী হত্যার ছক কষেছিল এবং তার প্রেমিক নূর আলম, নাসিম ও শাহ আলম এই খুনের ঘটনায় জড়িত। পুলিশ ইতিমধ্যেই খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র ও শিবমের বাইক উদ্ধার করেছে, তবে এখনও দেহের খোঁজ মেলেনি।

কোতয়ালি সদর সার্কেলের CO অভিষেক প্রতাপ অঞ্জয় জানিয়েছেন, "এই অন্ধ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত নিহতের স্ত্রী ও তার প্রেমিক। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে সাহায্য করা আরও দু’জনকেও গ্রেফতার করে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।"