Tropical Rainforest General Knowledge: বিশ্বের উষ্ণায়নে মানুষ বিলুপ্ত হবে পৃথিবী থেকে, তবে কি শেষ হয়ে যাবে পৃথিবীও সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

: দিনের পর দিন বাড়ছে তাপমাত্রা। বিভিন্ন পেট্রোলিয়াম, খনিজ দাহ্য পদার্থ পোড়ানোর ফলে পরিবেশে বাড়ছে ক্ষতিকর পদার্থের পরিমাণ। ধীরে ধীরে কমছে কয়লা সহ একাধিক খনিজ উপাদান। স্বাভাবিকভাবে বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, আগামীতে ধ্বংসের মুখে পড়তে পারে পৃথিবী। কার্যত সেই ভাবনা নস্যাৎ করেছে আইআইটি খড়্গপুরের গবেষকরা। কয়েক বছরের গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আগামীতে পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলেও কিংবা গ্রিন হাউসের মতঘটনা ঘটলেও পৃথিবীর উদ্ভিদকুলের ধ্বংস বা ক্ষতি হবে না।

প্রসঙ্গত, আমাজন বা পশ্চিম ঘাটের মত ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট বা রেইনফরেস্ট পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে বিবচিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ইন্টার গভর্মেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ এর ২০২৩ এআর-৬ রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন ও উষ্ণায়ন অবিরাম চলতে থাকে তাহলে শতাব্দীর শেষ এর আগে ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে যা আনুমানিক ৮০০ কোটি মানুষকে বিপদে ফেলবে।তবে এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা দ্বিধাবিভক্ত।

খড়গপুর আইআইটি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিকদের একটি দল ৫৬ কোটি বছর আগে গুজরাতের বস্তান কয়লা খনির তলদেশের ট্রপিক্যাল রেন ফরেস্ট নিয়ে গবেষণা করেছেন। গবেষণায় জানা গিয়েছে, গুজরাতের বস্তানের কয়লা খনির স্তর আসলে ট্রপিক্যাল রেন ফরেস্টের জীবাশ্মের আস্তরণ মাত্র। এই কয়লার মধ্যে প্রচুর মাত্রায় গাছপালা ও বনে বসবাসকারী স্তন্যপায়ী প্রাণী, কীটপতঙ্গের অবশেষ পাওয়া গেছে। গবেষকদের বক্তব্য, বহু প্রাচীন কালে পৃথিবী ভয়াবহ জলবায়ু পরিবর্তনের সম্মুখীন হলেও উদ্ভিদকূল তার নিজেদের পরিবর্তন ঘটিয়েছে।

খড়গপুর আইআইটির গবেষক অনিন্দ্য সরকার বলেন, কয়েক বছর ধরে এলাকার গবেষণা করে জানা গেছে তাহলে অত্যাধিক উষ্ণায়নের মধ্য দিয়ে বর্ষাবনগুলো এমন আবহাওয়ার মধ্যে কীভাবে বেড়ে উঠেছিল? আগামীতে অত্যধিক কার্বন-ডাই- অক্সাইডের বৃদ্ধি এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর ফলেও পৃথিবীতে থাকা উদ্ভিদকূল নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হবে। শুধু তাই নয় আবহাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে।

সেক্ষেত্রে আগামীতে পরিবেশ ধ্বংস হওয়ার ভয় বা আতঙ্ক কাটতে পারে।এই গবেষণায় সম্প্রতি বিখ্যাত এল সোভিয়ার জার্নাল গ্লোবাল এন্ড প্ল্যানেটারি চেঞ্জে-র অনলাইন অডিশনে প্রকাশ পেয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুবীর কে বেরা বলেন, শাল, মেহগনি, পাম ও ম্যানগ্রোভের মত গাছেদের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে বস্তান কয়লা খনি তলদেশ। এতে কোনওরকম সন্দেহ নেই যে ট্রপিক্যাল রেন ফরেস্ট প্রিহিস্টরিক হর্স, সাপ ও কীটপতঙ্গরাও ছিল৷

খড়গপুর আইআইটির প্রাক্তন ছাত্র তথা আশুতোষ কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর অর্পিতা সামন্ত বলেন, প্রবল বিশ্ব উষ্ণায়নের সময় ট্রপিক্যাল রেন ফরেস্ট নিজেদের অস্তিত্ব শুধু বাঁচিয়ে রাখেনি। পরে তাদের প্রচুর বৈচিত্র এসেছিল। গবেষণায় স্পষ্ট হয়েছে যে, ট্রপিক্যাল রেন ফরেস্টগুলি গরমের তীব্রতা অনায়াসে সহ্য করতে পারে, আর জীবিতও থাকতে পারে।

স্বাভাবিকভাবে আগামীতে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীর ক্ষতি সেভাবে হবে না। আইআইটি খড়্গপুরের এই যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে আগামীতে এইরকম পরিবর্তনে সাধারণ মানুষ কিংবা প্রাণীকুলের ক্ষতি হলেও পৃথিবীর ভারসাম্য হারানোর সম্ভাবনা কম। Input- Ranjan Chanda