Success Story: লোন না নিয়ে গ্রামেই তৈরি করেছিলেন অফিস, আজ সেই সংস্থারই মূল্য ৩৯,০০০ কোটি টাকা; অথচ সাধারণ জীবনযাপনেই অভ্যস্ত শ্রীধর ভেম্বু

প্রত্যেক আইটি ইঞ্জিনিয়ারই মার্কিন মুলুকে নামীদামি সংস্থায় চাকরি করে প্রচুর আয় করার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু কিছু আইটি প্রফেশনাল নিজেদের বেতন এবং সামাজিক অবস্থান নিয়ে একেবারেই সন্তুষ্ট নন। তাঁরা জীবনটাকে অন্য রকম ভাবে গড়তে চান। ব্যতিক্রমের এই তালিকায় রয়েছেন জোহোর প্রতিষ্ঠাতা শ্রীধর ভেম্বু। যিনি আমেরিকায় মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে দেশে নিজের গ্রামে ফিরে কোনও রকম ফান্ডিং ছাড়াই কোটি কোটি টাকা মূল্যের একটি সংস্থা গড়ে তুলেছেন। আজ শ্রীধর ভেম্বুর সাফল্যের গল্পই শুনে নেওয়া যাক।

আদতে তামিলনাড়ুর বাসিন্দা শ্রীধর ভেম্বু। বেড়ে উঠেছেন মধ্যবিত্ত পরিবারে। আর সবথেকে মজার বিষয় হল, শ্রীধর ভেম্বু তাঁর প্রাথমিক পড়াশোনা করেছেন তামিল ভাষাতেই। ১৯৮৯ সালে আইআইটি মাদ্রাজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি অর্জন করার পরে পিএইচডি করার জন্য আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন। আমেরিকায় পিএইচডি পাঠ শেষ করে চাকরিতেও যোগ দিয়েছিলেন। তবে সব ছেড়েছুড়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন ভেম্বু। তবে তাঁর এই পদক্ষেপে যারপরনাই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন আত্মীয়-পরিজন।

আসলে শ্রীধর ভেম্বু বরাবরই নিজের ব্যবসা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতেন। তাই মানুষের কথায় কান না দিয়ে নিজের মনের কথা শুনেছিলেন তিনি। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। ১৯৯৬ সালে নিজের ভাইয়ের সঙ্গে মিলে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ফার্ম ‘অ্যাডভেন্টনেট’ গড়ে তোলেন শ্রীধর ভেম্বু। ২০০৯ সালে তাঁর সংস্থার নাম পরিবর্তন করেন। নাম রাখেন ‘জোহো কর্পোরেশন’।

সফটওয়্যার সলিউশন সার্ভিস নিয়ে কাজ করে তাঁর সংস্থা। আর সবথেকে বড় কথা হল, ব্যবসা শুরু করার জন্য কিন্তু শ্রীধর ভেম্বু কোনও মেট্রোপলিটন শহরকে বেছে নেননি, বরং তামিলনাড়ুর তেনকাসি জেলায় নিজের সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর পিছনে অবশ্য তাঁর একটা লক্ষ্য ছিল। আর সেটা হল, দেশের গ্রামীণ এলাকায় সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটানো। শ্রীধর ভেম্বুর ইচ্ছা, গ্রামাঞ্চলের প্রতিভার অধিকারী ছেলে-মেয়েরা যেন ভারতের মূল এক্সপোর্ট আইটি পরিষেবায় কাজ করেন।

বর্তমানে জোহো কর্পোরেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও হলেন শ্রীধর ভেম্বু। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর সংস্থার রাজস্ব ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৯০০০ কোটি টাকা। এহেন দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করার পরেও নিজের শিকড়কে ভোলেননি ভেম্বু। এমনকী কোটিপতি ব্যবসায়ী হওয়া সত্ত্বেও হামেশাই বাইসাইকেলে চেপে ঘুরতে দেখা যায় তাঁকে।