মানুষের চেয়ে সাপ এগিয়ে এই এক গুণে! বিষ নয়, আর কোন ক্ষমতায় সাপের কাছে হেরে যাবেন আপনি?

সাপ — নামটা শুনলেই গায়ে কাঁটা দেয় অনেকের। কিন্তু ভয় বা ঘৃণার বাইরে গিয়েও যদি একটুখানি খেয়াল করি, দেখব এরা প্রকৃতির অবিশ্বাস্য সব রহস্য বয়ে নিয়ে চলে। বিষাক্ত দাঁতের চেয়েও এদের এক ক্ষমতা আরও বেশি চমকপ্রদ! মানুষকে বলে বলে টেক্কা দিতে পারে সাপ, এই এক জায়গায়! জানেন কী সেই ক্ষমতা সাপের?

বর্ষায় সাপের উপদ্রব বাড়ছে! গ্রামেগঞ্জে কিলবিল করছে বিষধর সাপ। সাপের ছোবলে নিরীহ মানুষের মৃত্যুর হার বাড়ছে। তাই বিশেষ করে সতর্ক থাকার পরামর্শ গ্রামবাসীদের।

শহরাঞ্চলেও সাপের উপদ্রব কম নয়! ঘরে ঢুকে পড়ছে সাপ। বর্ষায় খাবারের খোঁজে লোকালয়ে সাপ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সাপের সম্পর্কে বিশদে জানলে সতর্কতা অবলম্বনে সুবিধা হবে আপনারই।

বিশ্বের প্রায় সব সাপই মাংসাশী। তাদের খাদ্য তালিকায় থাকে ব্যাঙ, ইঁদুর, টিকটিকি, ছোট পাখি, এমনকি ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীও। তবে এখানেই শেষ নয়। বহু সাপ আবার অন্য সাপকেও খেয়ে ফেলে।

বিশাল আকারের কিছু সাপ যেমন পাইথন ও অ্যানাকোন্ডা — তারা খরগোশ, শিয়াল, হরিণ, নীলগাই, এমনকি ছাগল পর্যন্ত শিকার করে খেতে পারে। অর্থাৎ, সাপের খাদ্যাভ্যাস নির্ভর করে তার প্রজাতি ও আকারের উপর।

সাপ নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। বিষ, হিংস্রতা, নিঃশব্দ গতি — সব কিছু মিলিয়ে সাপ যেন ভয় এবং রহস্যের এক নাম। তবে জানেন কি, খাবার বা জল না খেয়েও সাপ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে? এই দিক দিয়ে তারা মানুষের থেকেও অনেক এগিয়ে।

গড়পড়তা হিসেবে অধিকাংশ সাপ ১০ থেকে ১২ দিন পর্যন্ত না খেয়ে বাঁচতে পারে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, কিছু বিশেষ প্রজাতির সাপ দীর্ঘ সময় না খেয়ে ও না জল খেয়ে বেঁচে থাকার ক্ষমতা রাখে। কিছু ক্ষেত্রে এই সময়সীমা দু’বছর পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে।

সাধারণভাবে আমরা জানি, খাবার ছাড়া মানুষ কয়েকদিনের বেশি বাঁচতে পারে না। কিন্তু সাপের ক্ষেত্রে বিষয়টা একেবারেই আলাদা। বিজ্ঞান বলছে, না খেয়ে বা না জল খেয়ে টানা এক সপ্তাহ নয়, এক মাস নয় — কেউ কেউ একেবারে দু'বছর পর্যন্তও বেঁচে থাকতে পারে!

সাপের বিপাকক্রিয়া বা metabolism অত্যন্ত ধীর। খাবার না পেলেও তারা দেহের মধ্যে জমে থাকা শক্তিকে ধীরে ধীরে ব্যবহার করে। এ কারণে তাদের তেমন ক্যালোরির প্রয়োজন হয় না।

তাছাড়া, না খেয়েও সাপের দৈর্ঘ্য বাড়ে। যদিও ওজন বৃদ্ধি হয় না, কিন্তু তারা ধীরে ধীরে শরীরের গঠন পরিবর্তন করে নিতে সক্ষম হয়। কঠিন পরিবেশে টিকে থাকার জন্য এই অভিযোজন ক্ষমতা সাপের জীবনে এক বড় সম্পদ।

যেখানে মানুষ না খেয়ে কদিনের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়ে, সেখানে সাপ কয়েক সপ্তাহ থেকে শুরু করে কয়েক মাস এমনকি দু’বছর পর্যন্ত না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে। এই তথ্য শুধু বিস্ময়করই নয়, প্রমাণ করে প্রকৃতির বিচিত্র জগতে প্রতিটি প্রাণীর আলাদা করে বেঁচে থাকার এক অসাধারণ কৌশল আছে।

সাপ হয়তো ভয়ঙ্কর, কিন্তু তাদের ধৈর্য, অভিযোজন এবং সহনশীলতা মানুষকেও বিস্মিত করে দেয়। তাই বলা যায়, সাপ কেবল বিষধর নয় — প্রকৃতির সবচেয়ে সহনশীল বেঁচে থাকা যোদ্ধাদের অন্যতম।