ঘুমের মধ্যে বীভৎস কামড়! ধড়ফড় করে উঠে আলো জ্বালাতেই ঢুকে গেল প্যান্টের মধ্যে! এটা কী?

রাত গভীর। ঘরের মধ্যে শুয়ে রয়েছেন এক যুবক। হঠাৎ ঘুম ভাঙল ডান হাতে যন্ত্রণা অনুভব করে। চোখ খুলে দেখলেন—একটি সাপ কামড়ে দিয়েছে তাঁকে, আর তার পর সেই সাপটি ঢুকে পড়েছে প্যান্টের পকেটে!

দৃশ্যটা যেন সিনেমার মতো, কিন্তু ঘটনা বাস্তব—স্থান নদিয়ার শান্তিপুর হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হেমায়েতপুর। আক্রান্ত যুবক রাহুল মির্জা স্থানীয় বাসিন্দা।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাতের দিকে তিনি ঘরের ভেতরে খাটে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আচমকা তীব্র ব্যথায় জেগে ওঠেন।

আলো জ্বালিয়ে দেখেন তাঁর ডান হাতে কামড় বসিয়েছে একটি সাপ। তার পর সেই সাপটি ঢুকে পড়ে তাঁর প্যান্টের পকেটের ভিতর। আতঙ্কে চিত্কার না করে বরং সাহস দেখান রাহুল।

পকেট থেকে সাপটিকে টেনে বার করেন এবং নিজেই মেরে সেটিকে একটি কাচের কৌটোয় ভরে ফেলেন।

এর পর আর দেরি না করে, সাপসহ ছুটে যান শান্তিপুর মহকুমা হাসপাতালে। চিকিৎসকরা পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে স্থানান্তরিত করেন কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। শুরু হয় অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা।

চিকিৎসকদের মতে, রাহুল যথাসময়ে হাসপাতালে পৌঁছনোর কারণে বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। সাপটি বিষধর ছিল কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আপাতত রাহুলের অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। অনেকেই বলছেন, হেমায়েতপুর ও আশপাশের গ্রামে মাঝেমধ্যেই সাপ দেখা যায়, তবে এমন ঘটনা—যেখানে সাপ পকেটে ঢুকে পড়ে—এই প্রথম।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এলাকায় সাপ নিধনে কোনও সরকারি উদ্যোগ নেই, এবং সচেতনতাও তেমন গড়ে ওঠেনি। তাঁরা প্রশাসনের কাছে বেশি নজরদারি ও সচেতনতামূলক প্রচারের দাবি তুলেছেন।

এদিকে রাহুলের সাহসিকতায় মুগ্ধ অনেকেই। ভয় না পেয়ে যে ধরণের মনের জোর তিনি দেখিয়েছেন, তা প্রশংসনীয় বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।

সাপের কামড়ে যেখানে অনেকেই হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, সেখানে পকেট থেকে সাপ বার করে নিজেই হাসপাতালে যাওয়া—রাহুল যেন হয়ে উঠলেন বাস্তবের ‘স্নেক হান্টার’।  Report: রঞ্জিত সরকার, নদিয়া।